স্টাফ রিপোর্টার:
দেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময় রোববার (১২ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৪টা পর্যন্ত।
মনোনয়নপত্র যাচাই হবে ১৩ ফেব্রুয়ারি, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ১৪ ফেব্রুয়ারি। আগামী ১৯ ফেব্রুয়ারি ভোটের দিন রেখে গত ২৫ জানুয়ারি এ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল।
রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের দিন দুপুর ২টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে জাতীয় সংসদ ভবনে। ভোটার খোদ সংসদ সদস্যরা। এই নির্বাচনের ‘নির্বাচনী কর্তা’ হিসেবে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল দায়িত্ব পালন করবেন।
রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের দ্বিতীয় মেয়াদ পূর্ণ হচ্ছে আগামী ২৪ এপ্রিল। পরপর দুই মেয়াদে রাষ্ট্রপতি হয়েছেন তিনি। দেশের সংবিধান অনুযায়ী, তার আর রাষ্ট্রপতি হওয়ার সুযোগ নেই। এ কারণে নতুন কাউকে দেখা যাবে তার জায়গায়।
সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা অনুযায়ী, বর্তমান রাষ্ট্রপতির মেয়াদ শেষ হওয়ার আগের ৯০ থেকে ৬০ দিনের মধ্যে নতুন রাষ্ট্রপতি নির্বাচন শেষ করতে হবে। সে হিসেবে, নির্বাচন কমিশন তফসিলও ঘোষণা করেছে।
নিয়ম অনুযায়ী, ৩৫ বছরের বেশি বয়সী এবং সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার যোগ্যতাসম্পন্ন যে কেউ রাষ্ট্রপতি পদে প্রার্থী হতে পারবেন। রাষ্ট্রপতি পদে রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে মনোনয়ন দেওয়া হয় এবং সংসদ সদস্যদের ভোটে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন। তবে লাগবে একজন সংসদ সদস্যের প্রস্তাব এবং অপর একজন সংসদ সদস্যের সমর্থন। সংবিধানের ৪৮(১) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের একজন রাষ্ট্রপতি থাকিবেন, যিনি আইন অনুযায়ী সংসদ-সদস্য কর্তৃক নির্বাচিত হইবেন।
আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারক পর্যায়ের নেতারা জানিয়েছেন, পরবর্তী রাষ্ট্রপতি কে হবেন, সে ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি যাকে যোগ্য মনে করবেন, তিনিই হবেন পরবর্তী রাষ্ট্রপতি। তবে আগামী দিনের রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে যে কোনো সংকট সৃষ্টি হলে সাহসিকতা, দক্ষতা ও বিশ্বস্ততার সঙ্গে যিনি সংকট উত্তরণে সঠিক অবস্থান নিতে পারবেন, এমন একজনকেই রাষ্ট্রপতি করা হবে বলে আওয়ামী লীগ নেতারা মনে করছেন।
বর্তমান সংসদে সংখ্যা গরিষ্ঠ দল হচ্ছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। এজন্য এই দল থেকে যে প্রার্থীকে সমর্থন দেওয়া হবে, তিনিই নির্বাচিত হবেন বলে ধরে নেওয়া যায়। ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থী ছাড়া অন্য কোনো প্রার্থী না থাকলে রোববারই জানা যাবে কে হচ্ছেন দেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি। তবে আইনি বাধ্যবাধকতা অনুসারে একক প্রার্থী থাকলে এবং তিনি প্রার্থিতা প্রত্যাহার না করলে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের সময় শেষে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ঘোষিত হবেন।
উল্লেখ্য, বর্তমান রাষ্ট্রপতি মো আবদুল হামিদ ২০১৩ সালের ১৪ মার্চ থেকে ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেন। ওই বছর ২০ মার্চ রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান মৃত্যুবরণ করলে তিনি সেদিন থেকে অস্থায়ী রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তীতে ২২ এপ্রিল তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন এবং ২৪ এপ্রিল বাংলাদেশের ২০তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন। এরপর ২০১৮ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি ধারাবাহিকভাবে দ্বিতীয় মেয়াদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন মো. আবদুল হামিদ। একই বছর ২৪ এপ্রিল ২১তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন। সংবিধান অনুযায়ী, দুই মেয়াদে রাষ্ট্রপতি পদে অধিষ্ঠিত হওয়ায় তিনি আর এই পদে প্রার্থী হতে পারবেন না।
সিএনএস ডটকম//এসএল//