মোহাম্মদ ইউনুছ অভি,টেকনাফ
সাগর ও নাফ নদের মাঝে পাহাড় ঘেরা উপজেলা টেকনাফ। এই সীমান্ত উপজেলার পাহাড়ের বাঁকে-বাঁকে এখন বড় আতঙ্কের নাম অপহরণ ও মুক্তিপণ। এমন আতঙ্কে টেকনাফের লাখো মানুষের জীবন হুমকিতে। এমনকি অপহরণের পর খোঁজ না পাওয়ার মানুষের লাশ মিলছে পাহাড়ে। দিন দিন এ ধরনের ঘটনা বেড়ে চললেও নেই প্রতিকার। কারা এসব করছে, কেন করছে- প্রশ্নের জবাব মিলছে না কারও কাছে, সুরাহাও হচ্ছে না। গত চার দিনে এক স্কুলছাত্রসহ আট জন অপহরণের খবর এসেছে পুলিশের কাছে। এর মধ্য চারটি ঘটনা রহস্যজনক বলে দাবি পুলিশের।
তবে অপহরণ বেড়ে যাওয়ার কারণ হিসেবে মানবাধিকারকর্মীরা বলছেন, রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকা টেকনাফে বেশ আগে পাহাড়ি সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে যেসব অপহরণ ও মুক্তিপণ বাণিজ্যে জড়িয়ে পড়ার অভিযোগ উঠেছিল, সেগুলো গুরুত্বের সঙ্গে না নেওয়ায় এখন ধারাবাহিকভাবে ঘটছে এসব ঘটনা।
একের পর এক অপহরণের ঘটনায় উদ্বিগ্ন উল্লেখ করে কক্সবাজার সিভিল সোসাইটির সভাপতি আবু মোর্শেদ চৌধুরী বলেন, ‘বিশেষ করে অপহরণ ও মুক্তিপণের আদায়ের ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় স্থানীয়দের জীবনযাত্রা ও নিরাপত্তা হুমকিতে পড়েছে। ফলে অনেকে ছেলেমেয়েদের স্কুল-কলেজে পাঠানো নিরাপদ মনে করছেন না। এ ধরনের ঘটনা বন্ধ করতে দ্রুত স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সঙ্গে নিয়ে একটি কর্মপরিকল্পনা ঠিক করতে হবে। অন্যথায় অপহরণ ও মুক্তিপণ বাণিজ্য আরও বাড়তে পারে।’
এদিকে, অপহরণ ও মুক্তিপণের ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় আতঙ্কে দিন কাটছে স্থানীয় বাসিন্দা ও রোহিঙ্গাদের। অপহরণের পর অনেকে মুক্তিপণ দিয়ে ফিরলেও আবারও একই ঘটনার শিকার হওয়ার আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটছে।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বলছে, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সম্প্রতি অপরাধ বেড়েছে। চলতি বছরের এপ্রিল পর্যন্ত চার মাসে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে হত্যা ও সংঘাতের ঘটনায় ২৪১টি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে ৩১টি হত্যা, ১২টি হত্যাচেষ্টা, ২৪টি অস্ত্র, ৯টি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ও ১৩৭টি মাদক মামলা। এ ছাড়া মানবপাচারসহ আরও কয়েকটি অপরাধের ঘটনায় মামলা হয়েছে।
//এস//