নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
গাইবান্ধার সাদুল্যাপুর উপজেলার গোবিন্দপুর এলাকার খাইরুল ইসলামের ছেলে আব্দুর রাজ্জাক। দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মেজর পরিচয় দিতেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন পেশার নারীদের টার্গেট করতেন। এরপর তাদের সঙ্গে পরিচয় গড়ে তুলে সেনাবাহিনীর মেডিকেলের নার্সসহ বিভিন্ন বেসামরিক পদে চাকরির প্রস্তাব দিতেন। তার প্রস্তাবে রাজি হয়ে ফাঁদে পা দিলে কৌশলে বিপুল পরিমাণ টাকা হাতিয়ে নিয়ে যোগাযোগ বন্ধ করে দিতেন। এভাবে শতশত নারীদের সঙ্গে প্রতারণার প্রমাণ পেয়েছে র্যাব।
শনিবার (১৩ মে) টাঙ্গাইলের কালিহাতি উপজেলার বেতডোবা এলাকায় অভিযান চালিয়ে আব্দুর রাজ্জাক ওরফে মেজর সাগর চৌধুরী (৩১)কে গ্রেফতার করে র্যাব-১০।
এ সময় তার কাছ থেকে এক সেট করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কম্ব্যট ইউনিফর্ম, কাধব্যাগ, নেমপ্লেট, ফেস মাস্ক, ফিল্ড ক্যাপ,মিলযুক্ত মানিব্যাগ, লাইসেন্স এবং পাঁচটি ভূয়া নিয়োগপত্র, মেডিকেল সনদপত্র, পাঁচটি ভুয়া এনআইডি কার্ড, চারটি মোবাইল ফোন ও ১১টি সিমকার্ড উদ্ধার করা হয়।
শনিবার ( ১৩ মে বিকেলে রাজধানীর কাওরান বাজার র্যাব মিডিয়া সেন্টার এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান র্যাব-১০ এর অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন।
ফরিদ উদ্দিন জানান, রাজধানীর কামরাঙ্গীচর থানায় একটি অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্ত শুরু করে র্যাব-১০। এরপর গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে প্রতারক আব্দুর রাজ্জাককে গ্রেফতার করা হয়।
যেভাবে প্রতারণা শুরু। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজেকে সেনাবাহিনীর মেজর পরিচয় দিয়ে জানায় সে বগুড়ার মাঝিরা সেনানিবাসে কর্মরত। ভুক্তভোগীদের সঙ্গে কথা বলার সময়ে বিশ্বাস অর্জনের জন্য পোশাক পরিহিত অবস্থায় কথা বলত। আলাপের এক পর্যায়ে বগুড়া সিএমএইচে এ নার্স এর চাকরি দেওয়ার বিষয়ে প্রলোভন দেখায়। এরপর কৌশলে ৪ থেকে ৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়। এভাবে কামরাঙ্গীচরের পাঁচ ভুক্তভোগীর কাছ থেকে ১৭ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। পরবর্তীতে সকলেই অনেক চেষ্টা করেও সাগরের আর কোন তথ্য সংগ্রহ করতে না পেরে কামরাঙ্গীরচর থানায় একটি সাধারন ডায়রী করেন।
র্যাব-১০ এর অধিনায়ক বলেন,গ্রেফতার আব্দুর রাজ্জাক বিপুল পরিমাণ সিম কার্ড ব্যবহার করত। পাশাপাশি ফেসবুকে পরিচয় হওয়া নারীদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার জন্য বিভিন্ন ব্যক্তির আইডি কার্ড ব্যবহার করে মোবাইল ব্যাংকের একাউন্ট খুলত। প্রতারণার টাকা দিয়ে পরিবহন ব্যবসায় বিনিয়োগ করত। কোনো ধরনের শিক্ষাগত যোগ্যতা না থাকলেও শিক্ষিত নারীদের ফাঁদে ফেলত। এভাবে সে চারজন নারীকে বিয়ে করেছে। ভিন্ন ধর্মী এক নারীকে বিয়ের চেষ্টা করার সময়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গ্রেফতার হয়েছিল। পাশাপাশি তার বিরুদ্ধে গাইবান্ধায় আরও একটি মামলার তথ্য পাওয়া গেছে।
সিএনএস ডটকম//এসএল//