ভিক্ষুকের সালামের জবাব দেওয়া কি বাধ্যতামূলক?

সালাম একটি অভ্যর্থনামূলক ইসলামি অভিবাদন। আসসালামু আলাইকুম অর্থ- আপনার ওপর শান্তি বর্ষিত হোক। কোনো মুসলমান ভাইয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ হলে কথা বলার আগে সালাম দেওয়া নবীজি (স.)-এর সুন্নত। আর উত্তর দেওয়া ওয়াজিব।

হাদিসে সালামের উত্তর দেওয়াকে একজন মুসলিমের অন্যতম অধিকার হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (স.) ইরশাদ করেছেন, ‘একজন মুসলিমের ওপর অন্য মুসলিমের অধিকার পাঁচটি। তা হলো—সালাম দিলে জবাব দেওয়া, অসুস্থ হলে দেখতে যাওয়া, জানাজায় উপস্থিত হওয়া, দাওয়াত দিলে যাওয়া এবং হাঁচি দিলে উত্তর দেওয়া।’ (বুখারি: ১২৪০)

প্রশ্ন হলো—ভিক্ষুকরা সাধারণত দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য একের পর এক সালাম দেয়। তাদের এই সালামের উত্তর দেওয়া কি ওয়াজিব?

উত্তর হলো—ভিক্ষার উদ্দেশ্যে পথচারীর দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য দেওয়া সালামের উত্তর দেওয়া ওয়াজিব নয়। কিন্তু চাওয়ার জন্য সালাম না দিয়ে যদি সুন্নত আদায়ের উদ্দেশ্যে কেউ সালাম দেয় তবে তার সালামের উত্তর দেওয়া ওয়াজিব। তাই কারো অবস্থা দেখে বাস্তবে সালাম দিচ্ছে বলে মনে হলে জবাব দিতে হবে। আর যেহেতু কারো অন্তরের অবস্থা জানা নেই তাই সকলের সালামের উত্তর দেওয়াই ভালো। (খুলাসাতুল ফতোয়া: ৪/৩৩২; ফতোয়ায়ে খানিয়া: ৩/৪২৩; ফতোয়ায়ে তাতারখানিয়া: ১৮/৭৭)

প্রসঙ্গত, মানুষের কাছে হাত পাতা ইসলামে অপছন্দনীয় কাজ। হালাল কাজের মধ্যে অন্যতম নিকৃষ্ট কাজ হলো ভিক্ষাবৃত্তি। কেউ এ থেকে বেঁচে থাকার দৃঢ় ইচ্ছা করলে তার জন্য শুভ সংবাদ। হজরত সাউবান (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (স.) বলেন, যে ব্যক্তি এই মর্মে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হবে যে, সে অন্যের কাছে হাত পাতবে না; আমি তার জান্নাতের জিম্মাদারী গ্রহণ করবো। (ইবনে মাজাহ: ১/৫৮৮)

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে সব বিষয়ে নবীজির শিক্ষা অনুযায়ী জীবন পরিচালনা করার তাওফিক দান করুন। আমিন।