নিজস্ব প্রতিবেদক,ঢাকা
রতন, পেশায় মাদক কারবারি। অপরাধের এই জগতে প্রভাব বিস্তার করতে কিনেছিলেন ৫ রাউন্ড গুলিসহ দুটি বিদেশি পিস্তল। কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে কেনা সেই অবৈধ অস্ত্র নিয়ে যাচ্ছিলেন ফরিদপুরে। তবে সফল হয়নি উদ্দেশ্য, গোপন তথ্যে গ্রেফতার হয়েছেন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের (ডিএনসি) হাতে। এরপরই বেরিয়ে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য।
সোমবার (৮ মে) রাজধানীর বিভিন্ন বাস কাউন্টারে সাঁড়াশি অভিযান চালিয়ে রতনসহ চার মাদক কারবারিকে গ্রেফতার করে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর (ডিএনসি)। পরে তাদের কাছ থেকে দুটি বিদেশি পিস্তল ছাড়াও দুটি ম্যাগাজিন, ৫ রাউন্ড গুলিসহ ১৪ হাজার পিস ইয়াবা জব্দ করা হয়।
গ্রেফতাররা সবাই আন্তঃজেলা ইয়াবা পাচারকারী চক্রের সক্রিয় সদস্য বলে জানিয়েছেন ডিএনসির ঢাকা বিভাগীয় কার্যালয়ের অতিরিক্ত পরিচালক মো. জাফরুল্ল্যাহ কাজল। সোমবার সন্ধ্যার পর গেন্ডারিয়ার ঢাকা বিভাগীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানিয়েছেন তিনি।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের ঢাকা বিভাগীয় এই অতিরিক্ত উপপরিচালক বলেন, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে সংঘবদ্ধ মাদক কারবারিদের বিরুদ্ধে সোমবার দুপুরে বিভিন্ন বাস কাউন্টার এলাকায় সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করা হয়। ওই অভিযানে চারজন মাদক কারবারিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এরমধ্যে যাত্রাবাড়ীতে রতন নামে এক মাদক কারবারিকে গ্রেফতার করা হয়।
ডিএনসির এই কর্মকর্তা বলেন, আমাদের কাছে খবর ছিল- রতন কক্সবাজার থেকে ইয়াবার চালান নিয়ে ফরিদপুরে যাচ্ছে। কিন্তু তাকে গ্রেফতার করে ব্যাগ তল্লাশির সময় অবাক হতে হয়। কারণ, মাদকের স্থলে দুটি লোড করা বিদেশি পিস্তল ছিল। অভিযানটিতে অংশ নেওয়া ডিএনসির টিমের সদস্যরা দক্ষ না হলে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটতে পারত।
অতিরিক্ত পরিচালক জাফরুল্ল্যাহ কাজল বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে রতন জানিয়েছেন- তিনি কক্সবাজারের একটি রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে অস্ত্র ও গুলি সংগ্রহ করে ফরিদপুরে নিয়ে যাচ্ছিলেন। মূলত মাদক ব্যবসায় প্রভাব বিস্তার করতেই তিনি অস্ত্রগুলো কেনেন। তবে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের কার কাছ থেকে কত টাকায় অস্ত্রগুলো কিনেছেন- সে বিষয়ে মুখ খোলেননি রতন। সেই সঙ্গে কোনো সন্ত্রাসী গোষ্ঠী অস্ত্রদুটি বিক্রি করেছে কি না- এমন প্রশ্নেও চুপ ছিল সে।
এ ঘটনায় রতনের বিরুদ্ধে যাত্রাবাড়ী থানায় মামলা দায়ের করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ওই মামলার তদন্ত থানা পুলিশই করবে। আশা করি, পুলিশের তদন্তে বিস্তারিত বেড়িয়ে আসবে।
এদিকে, সাঁড়াশি অভিযানের অংশ হিসেবে একই দিন রাজধানীর দারুস সালাম এলাকার হানিফ এন্টারপ্রাইজ কাউন্টারের সামনে থেকে ৮ হাজার পিস ইয়াবাসহ আন্তঃজেলা ইয়াবা পাচারকারী ফিরোজ হোসেন ও শাহাদত হোসেনকে গ্রেফতার করা হয়। আর শ্যামলী এলাকার এ কে ট্রাভেলস কাউন্টারের সামনে থেকে ৬ হাজার পিস ইয়াবাসহ নাজমুলকে গ্রেফতার করা হয়। এ ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধেও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলার প্রস্তুতি চলছে।
সিএনএস ডটকম//এসএল//