লাখের নিচে মিলছে না মাঝারি আকারের গরু

নিজস্ব প্রতিবেদক
ক্রেতা-ব্যাপারির সমাগমে জমে উঠেছে কোরবানির পশুর হাট। তবে ক্রেতারা বলছেন, এবারও গরুর দাম বেশি। লাখের নিচে মাঝারি আকারের গরু মিলছে না। বিক্রেতারা বলছেন, সব কিছুর দাম বাড়তি। গরু লালন-পালনে খরচ বেশি হয়েছে। তাই কম দামে গরু বিক্রি করা সম্ভব নয়।

মঙ্গলবার (২৭ জুন) মোহাম্মদপুরের বসিলা হাট ঘুরে দেখা যায়, দেশের নানা প্রান্ত থেকে আনা দেশি-বিদেশি জাতের গরুতে ভরে উঠেছে হাট। ব্যাপারিরা ব্যস্ত ক্রেতা হাঁকডাকে। ক্রেতারাও সাধ্যের মধ্যে খুঁজছেন পছন্দসই গরু। আকারে ছোট সাইজের গরুরও সর্বনিম্ন দাম হাঁকানো হচ্ছে ৭০ হাজার। মাঝারি আকারের গরু নিতে গেলে ছাড়িয়ে যাচ্ছে লাখের ঘর।

পাবনা থেকে ১২টি গরু নিয়ে এসেছেন ব্যাপারি সামাদ হোসেন। তিনি বলেন, বিক্রির পরিমাণ খুব একটা বেশি নয়। হাটে আসার পর চারটা গরু বিক্রি হয়েছে। ক্রেতাদের তেমন সাড়া মিলছে না। বেশিরভাগ ক্রেতা ৭০-৮০ হাজার টাকার মধ্যে ভালো গরু চাইছেন। কিন্তু আমাদের পক্ষে সেটা সম্ভব হচ্ছে না। খরচ বেড়ে যাওয়ায় এক লাখের নিচে ভালো গরু বিক্রি করা সম্ভব হচ্ছে না।

পাবনার আরেক ব্যাপারি মোসাদ্দেক মিয়া বলেন, বাজারে ছোট আর মাঝারি গরুর চাহিদাই বেশি। সেক্ষেত্রেও ৯০ থেকে ১ লাখ টাকা দাম পড়বে। তবে এখনো ক্রেতার সংখ্যা আশানুরূপ নয়। আশা করছি, আগামী দুই দিনে ভালো বিক্রি-বাট্টা হবে।

 

হাটে অধিকাংশ ক্রেতাই মধ্যম আয়ের। পশুর দাম তাদের অনেকেরই ক্রয়সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছে। এমনই একজন ক্রেতা মাইনুল রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, ছোট সাইজের একটা গরু দেখলাম, দাম চাইছে ৭৫ হাজার টাকা। কয়েক বছর আগেও এই সাইজের গরু ৪০ হাজার টাকায় পাওয়া যেত।

আরেক ক্রেতা তারেক মাহমুদ বলেন, বেশ কয়েকটি গরু দেখলাম। কোনোটা ১ লাখ ২০ হাজার, কোনোটা ১ লাখ ৬০ আবার কোনোটা ২ লাখ টাকা। ছোট আকারের গরুর দামও চাওয়া হচ্ছে ৭০-৯০ হাজার টাকা। বাজেট অনুযায়ী হয়ত ছোট বা মাঝারি আকারেরই গরু কিনতে হবে।

৯৬ হাজার টাকায় মাঝারি আকারের গরু কিনে ফিরছিলেন আমিনুল হোসেন নামে এক ক্রেতা। তিনি বলেন, দাম একটু বেশি পড়ে গেছে। কিছু করার নেই। এর নিচে তো ভালো কিছু পাওয়াও যাচ্ছে না।

তবে বড় গরুও কিনছেন কেউ কেউ। আড়াই লাখ টাকায় অস্ট্রেলিয়ান জাতের একটি গরু কিনে ফিরছিলেন মো. জাহাঙ্গীর। তিনি বলেন, কয়েকজন মিলে ভাগে কোরবানি দিচ্ছি, তাই বড় দেখেই গরু কিনলাম।

১ লাখ ৬০ হাজার টাকায় গরু কিনে ফিরছিলেন রফিকুন নবী নামে একজন। তিনি বলেন, প্রতি বছরই চেষ্টা করি ভালোভাবে কোরবানি দিতে। তাই ছোট গরু না কিনে বড় গরুই কিনলাম। যদিও এমন গরু আগে লাখের নিচেই পাওয়া যেত।

গরুর দাম বেড়ে যাওয়ার পেছনে বাজারের সার্বিক অবস্থাকেই দায়ী করছেন বিক্রেতারা। জানতে চাইলে ব্যাপারি সিদ্দিকুর রহমান বলেন, গরুর খাবারের দাম বেড়ে গেছে। ৫০ কেজির এক বস্তা ধানের কুড়ার দাম গতবার ছিল ৪০০ টাকা। এবার তা ৮০০ টাকা। ১১শ টাকা দামের ২০ কেজির এক বস্তা ভুসির দাম এখন ১৭শ টাকা। তাছাড়া প্রতিটা গরু বাছুর থাকার সময় কিনতে হয়। এগুলোর পেছনে খরচ হয় মাসে প্রায় ৭-৮ হাজার টাকা। এছাড়া হাটে আনা, হাট খরচ, সব মিলিয়ে দাম বেড়ে যায়। তাই আমরা চাইলেও কম দামে বিক্রি করতে পারি না।

//এস//