নিজস্ব প্রতিবেদক:
শুটিং কার্যক্রম বন্ধের জন্য হাউস মালিকদের চিঠি দিয়েছে উত্তরা সেক্টর-৪ কল্যাণ সমিতি। গত ২০ জুলাই সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়, শুটিংয়ের কারণে রাস্তায় জনসমাগম, যান চলাচলে বিঘ্ন এবং বাসিন্দাদের স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় সমস্যা দেখা দিচ্ছে। চিঠিতে হাউসের মালিকদের শুটিং হাউস হিসেবে বাড়ি ভাড়া না দেওয়ার আহ্বান জানানো হয় এবং বলা হয়, আবাসিক এলাকায় এ ধরনের বাণিজ্যিক কার্যক্রম নীতিমালার পরিপন্থী। সেক্টরের পরিবেশ ও সুনাম রক্ষায় হাউসের মালিকদের দায়িত্বশীল ভূমিকা প্রত্যাশা করা হয়েছে।
চিঠির বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হয় উত্তরা সেক্টর-৪ কল্যাণ সমিতিতে। সমিতির প্রশাসনিক কর্মকর্তা গোলাম রাব্বানী চিঠি দেওয়ার বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন।
উত্তরা সেক্টর ৪ এলাকায় তিনটি শুটিং হাউস—লাবণী-৪, লাবণী-৫ ও আপনঘর-২। গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন লাবণী শুটিং হাউসের মালিক আসলাম হোসাইন। চিঠির বিষয়ে জানতে চাইলে কান্না করে ফেলেন তিনি। বলেন, ‘২৫ বছর ধরে এই এলাকায় ব্যবসা করছি। কখনো কেউ অভিযোগ দিতে পারেনি। কিন্তু এখন আমাদের শুটিং বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। আমরা ডিরেক্টর গিল্ডে বিষয়টি জানিয়েছি, আশা করি সবাইকে পাশে পাব।’
অভিনেতা ও ডিরেক্টর গিল্ডের সভাপতি শহীদুজ্জামান সেলিম বলেন, ‘একটা হাউসে অনেক ধারাবাহিকের শুটিং চলে, অনেক কন্টিনিউটি আছে। তাই হঠাৎ করে বললেই হয় না, একটা সময় দিয়ে বন্ধের চিঠি দিতে পারত। আমরা ডিরেক্টর গিল্ড এর প্রতিবাদ জানিয়েছি, আজকেই আমরা চিঠি দেব। হাউসের মালিকদের জানিয়েছি, আপনাদের পাশে আমরা আছি।’
শুটিং হাউস বন্ধের চিঠির খবরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ক্ষোভ ঝেড়েছেন নাট্য নির্মাতা, অভিনেতা থেকে বিনোদনের অন্যান্য অঙ্গনের তারকারা। নির্মাতা মাহমুদ দিদার লিখেছেন, ‘শুটিং হাউস বন্ধ করে দিতে বলেছে। অনেক বছর ধরে উত্তরায় শুটিং হয়! কোনো কমপ্লেইন ছিল না। এখন চলবে না এসব! ঘুমের ডিস্টার্ব হয়। আমার ধারণা, এই অঞ্চলে দীর্ঘদিনের যে শুটিং কালচার, এটা আর থাকবে না। এটা কেবল আলামত! উত্তরা কিংবা পুবাইল—দুঃসময় এল বলে!’
তপু খান লিখেছেন, ‘সরাসরি নিষেধাজ্ঞা আরও গ্রহণযোগ্য নয়। এটা শিল্পসংস্কৃতি বিকাশে বাধার শামিল। আমাদের অনেকের স্মৃতিবিজড়িত শুটিং হাউস উত্তরার লাবণী ৪। এই হাউসের আসলাম ভাই আমার দেখা অন্যতম ভালো এবং নিরীহ মানুষ। সেখানে শুটিং না করার জন্য অনুরোধ করেছেন উত্তরা সেক্টর কর্তৃপক্ষ (হয়তো আরও অনেককেই বলেছেন)। সংশ্লিষ্ট সংগঠনগুলোকে অনুরোধ করছি জরুরি ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য। যদি কোনো ত্রুটি বা ভুল–বোঝাবুঝি হয়ে থাকে, তাহলে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা যাবে। তাই বলে সরাসরি নিষেধাজ্ঞাকে ভালো চোখে দেখছি না।’
অভিনয়শিল্পী সংঘের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও অভিনেতা রওনক হাসান লিখেছেন, ‘উত্তরা সেক্টর ৪ কল্যাণ সমিতি থেকে শুটিং বন্ধের নোটিশ এসেছে। আবাসিক এলাকায় নানান রকম অফিস হয়। শত শত স্কুল হয়, মাল্টিটাইপ ব্যবসা হয়। শুধু শুটিংয়ে সমস্যা! আগেও এ ধরনের চেষ্টা হয়েছে। সেগুলো সংশ্লিষ্ট সংগঠনগুলো স্থানীয় সংসদ সদস্য, সিটি করপোরেশন এবং পুলিশ প্রশাসন মিলে সুনির্দিষ্ট নীতিমালা করে সমাধান করেছেন। এবারও আশা করি তাই হবে। সংশ্লিষ্ট সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।’
Discussion about this post