নিজস্ব প্রতিবেদক:
ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে প্রবাসফেরত বাহার উদ্দিনকে আনতে যাওয়া পরিবারের সদস্যরা মাইক্রোবাসে ফিরছিলেন লক্ষ্মীপুরের চৌপল্লী গ্রামের বাড়িতে। পথে দ্রুতগতির মাইক্রোবাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশের একটি গভীর খালে পড়ে যায়। মাইক্রোবাসে থাকা ১১ জনের মধ্যে চারজন পুরুষ (প্রবাসীসহ) কোনোমতে বাইরে বেরিয়ে আসতে পারলেও পানির গভীরতা বেশি থাকায় আটকা পড়ে যান নারী ও শিশুরা। এতে একই পরিবারের সাতজন প্রাণ হারিয়েছেন। নিহতদের মধ্যে রয়েছেন চার নারী ও তিন শিশু।
বুধবার (৬ আগস্ট) ভোরে উপজেলার আলাইয়াপুর ইউনিয়নের চন্দ্রগঞ্জের জগদিশপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
প্রবাসী বাহার উদ্দিন বলেন, ‘ড্রাইভারকে বারবার বলেছি, লক খুলতে। লক খুলে দিলে সবাই সাঁতার কেটে বের হয়ে যাবে। গাড়ি জাহান্নামে যাক, তুই আগে লক খোল। পরে সে আস্তে করে জানালা দিয়ে বের হয়ে গেছে। পরে আমরা জানালা ভেঙে কয়েকজন বের হয়েছি। বাকি সবাই মারা গেছেন। যদি লক খুলতো তাহলে সবাই বেঁচে যেত।’
তিনি আক্ষেপ করে তার পরিবারের লোকদের সম্পর্কে বলেন, ‘আমি এদের সবাইকে নিষেধ করেছিলাম। এরা অল্পবয়সী, এরা যাতে না আসে। বলেছিলাম, আমি তো সকাল সকাল চলে যাব। এরা শোনেনি।’
ওমান প্রবাসীর বাবা আবদুর রহিম বলেন, ‘গাড়ির দরজা লক করা ছিল। আমরা ছয়জন জানালা দিয়ে বের হতে পারি। বাকিরা বের হতে পারেনি। খালে পানির তীব্র স্রোত ছিল। তাই দ্রুত সেটি তলিয়ে যায়। প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা তারা পানির তলায় ছিল। এতে ডুবে মারা গেছে।’
এ বিষয়ে চন্দ্রগঞ্জ হাইওয়ে থানার ওসি মো. মোবারক হোসেন ভূঁইয়া বলেন, চালক ঘুমিয়ে পড়ায় গাড়িটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খালে পড়ে যায়। কয়েকজন বের হতে পারলেও সাতজন ভেতরে আটকা পড়ে মারা যান। লাশগুলো তাদের পরিবারের লোকজন বাড়িতে নিয়ে গেছে। দুর্ঘটনার পর থেকে চালক পলাতক রয়েছে। এ ঘটনায় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Discussion about this post