লাইফস্টাইল ডেস্ক
চারপাশে শুরু হয়েছে ঈদের আমেজ। শহরাঞ্চলে এখনও পুরোপুরি তা দেখা না গেলেও গ্রামাঞ্চলে ঠিকই টের পাওয়া যাচ্ছে। কোরবানির ঈদের মূল আনন্দ বা আয়োজন থাকে পশুকে ঘিরে। অনেকেই হাটে গিয়ে কোরবানির পশু কেনেন। কেউ কেউ অবশ্য খামারে গিয়েও কোরবানির জন্য পশু পছন্দ করেন। আবার চলতি বছর বেশ কিছু পোর্টাল বা অনলাইন প্ল্যাটফর্মও গরু বিক্রির কাজ করছে।
ইতোমধ্যে ঢাকা ও ঢাকার পার্শ্ববর্তী খামারে ভিড় জমাচ্ছেন ক্রেতারা। হাট হোক কিংবা খামার, পশু কেনার সময় কিছু বিষয় অবশ্যই নজর দেওয়া উচিত। পশু নির্বাচনের কিছু মৌলিক বিষয় জানা থাকলে নির্বাচনের ভুলভ্রান্তি কম হবে এবং একটি উৎকৃষ্টমানের পশু কেনা সম্ভব হবে।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, কোরবানিতে বেশিরভাগ মানুষই চর্বিযুক্ত মোটাসোটা পশু কিনে থাকেন। এটি একটি ভুল ধারণা। স্বাস্থ্যগত দিক বিবেচনা করলে, পশুর চর্বি মানুষের স্বাস্থ্যঝুঁকি বৃদ্ধি করে। এটি হৃদরোগ, উচ্চরক্তচাপ ও শারীরিক ওজন বৃদ্ধিতে মুখ্য ভূমিকা রাখে। পশুর চর্বিতে প্রচুর পরিমাণে খারাপ কোলেস্টেরল থাকে যা হৃদপিণ্ডে ব্লক তৈরি করে।
গবেষকরা বলছেন, হরমোন প্রয়োগে মোটা-তাজা করা পশুর মাংস খেলে ব্রেস্ট, কোলন এবং ফুসফুসের ক্যানসার হওয়ার আশঙ্কা থাকে। যদিও মোটাতাজাকরণের জন্য স্বীকৃত স্বাস্থ্যসম্মত পদ্ধতি রয়েছে। কিন্তু গরুকে দ্রুত মোটা ও ওজনদার করতে অনেকক্ষেত্রেই অসাধু খামারিরা অনৈতিকভাবে স্টেরয়েডসহ বেশ কিছু হরমোন প্রয়োগ করে থাকেন। তাদের উদ্দেশ্য থাকে বেশি ওজন মানেই বেশি মাংস; বেশি মাংস মানেই বেশি লাভ। যা মোটেও ঠিক নয়।
সুস্থ ও অসুস্থ গরু চেনার উপায়:
১. কম নড়াচড়া করা:
মোটাতাজাকরণ ওষুধ খাওয়া গরু খুব একটা নড়াচড়া করে না, ঝিমাতে থাকে। অন্যসব গরুর চেয়ে এরা অপ্রত্যাশিত ফোলা থাকে। কেনার আগে দেখুন আপনার পছন্দের গরু চটপটে কি না? কারণ, স্টেরয়েড খাওয়ালে গরু নড়াচড়ার বদলে ঝিম মেরে থাকবে। স্টেরয়েড ট্যাবলেট খাওয়ানো গরুর ঊরুতে প্রচুর মাংস থাকে। এ বিষয়ে সচেতন থাকুন।
২. পাঁজরের হাড়:
কেনার আগে গরুর শিং ভাঙা, লেজ কাটা, জিহ্বা, ক্ষুর, মুখ, গোড়ালিতে খত আছে কি না তা ভালো করে দেখে নিন। সুস্থ গরু চিনতে পাঁজরের হাড়েও খেয়াল করতে হবে। সুস্থ গরুর পাঁজরের হাড় উঁচুনিচু থাকে। সুস্থ গরুর চামড়ার ওপর দিয়ে কয়েকটা পাঁজরের হাড় বোঝা যাবে।
৩. ভেজা নাক:
গরুর নাকের ওপরটা যদি ভেজা ভেজা থাকে তাহলে বুঝতে হবে গরু সুস্থ। গরুর মুখের সামনে খাবার ধরলে যদি সঙ্গে সঙ্গে জিহ্বা দিয়ে টেনে নেয় তাহলেও বুঝবেন এই গরুটি সুস্থ। অসুস্থ পশু খাবার খেতে চায় না।
৪. কঁজ মোটা ও টানটান:
গরুর কুঁজ মোটা ও টানটান থাকলে বুঝতে হবে গরুটি সুস্থ। গরুর পাঁজরের হাড়ে যে তিন কোনা গর্ত থাকে তাকে ফ্লায়েন্ট জয়েন্ট বলে। কেনার সময় দেখতে হবে তাতে কোণা রয়েছে কি না। গরুর শরীরে তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি হলে বুঝবেন গরুটি অসুস্থ।
মনে রাখবেন, সুস্থ গুরু বাঁধা অবস্থায় প্রায়ই যেনতেনভাবে ছুটতে চাইবে। ঘন ঘন লেজ নাড়বে। হাঁকডাকে জোরালো হবে। এ দুরন্তপনার মধ্যেও পরক্ষণেই আবার সামনে রাখা খাদ্যে মুখ ডোবাবে।
সুস্থ গরু চেনার আরেকটি উপায় হচ্ছে এটি মুখে জাবর কাটবে। তাই হাট কিংবা খামার যেখান থেকেই গরু কিনুন না কেন, এসব বিষয়ে যথেষ্ট খেয়াল রাখতে হবে।
Discussion about this post