নিজস্ব প্রতিবেদক:
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, গণতন্ত্রের চর্চা অব্যাহত থাকলে কোনো স্বৈরশক্তিই মাথাচাড়া দিতে পারে না।
সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) ‘আন্তর্জাতিক গণতন্ত্র দিবস’ উপলক্ষে এক বাণীতে তিনি এসব কথা বলেছেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, এই দিবসটি আইনের শাসন, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, নাগরিক অধিকার, মানবাধিকার ও জবাবদিহিমূলক প্রতিষ্ঠানের দৃঢ় ভিত্তি গড়ে তোলাকে সমর্থন করে। এই দিবসটি পালনের মধ্য দিয়ে গণতন্ত্রের চর্চা ও অনুশীলন উৎসাহিত করা হয়। গণতন্ত্র অর্জনের সংগ্রামে বাংলাদেশসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে যারা জীবন উৎসর্গ করেছেন তাদের প্রতি জানাই গভীর শ্রদ্ধা। জীবনদানকারী শহীদদের রুহের মাগফিরাত কামনা করছি এবং আহতদের সমবেদনা জানাচ্ছি। আমি আজকের এ দিনে বিশ্বের গণতন্ত্রকামী মানুষের প্রতি জানাচ্ছি আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।
তিনি বলেন, গণতন্ত্র এমন একটি শাসনব্যবস্থা যেখানে জনগণ সার্বভৌম ক্ষমতা প্রয়োগে অংশ নিতে পারে, জনগণের ইচ্ছাকে গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনা করা হয়। নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা সেবা ও ন্যায়সঙ্গত সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে সচেষ্ট হয়। গণতন্ত্রের চর্চা অব্যাহত থাকলে কোন স্বৈরশক্তিই মাথাচাড়া দিতে পারে না, আর সে কারণে জনগণকে ক্রীতদাসে পরিণত করা সম্ভব হয়নি।
বিএনপির এই নেতা বলেন, বিভিন্ন দেশে একদলীয় দুঃশাসনের কালো থাবা এখনও বিরাজমান। দেড় দশক ধরে বাংলাদেশেও নাগরিক স্বাধীনতা, ভোটাধিকার, মানবিক মর্যাদা ও মানবাধিকার হরণ করে এক সর্বনাশা আওয়ামী ফ্যাসিবাসী শাসন কায়েম ছিল। নানা কালাকানুনের মাধ্যমে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা হরণ, ভিন্নমতের কারণে অনেকেই গুম, খুন, আইন বহির্ভূত হত্যার শিকার হয়েছিল। বাংলাদেশের কিংবদন্তিতুল্য গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে আপোষহীন যোদ্ধা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা ও সাজানো মামলায় কারাগারে আটকে রাখা হয়েছিল। গণতন্ত্রের প্রতি দৃঢ় অঙ্গিকারাবদ্ধ বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমানের ওপর নামিয়ে আনা হয়েছিল মিথ্যা মামলায় সাজা দেওয়ার বর্বরোচিত অত্যাচার। দেশবাসী ১৬ বছর এক ভয়াবহ দুর্দিন অতিক্রম করে গত বছর জুলাই-আগস্টে ঐতিহাসিক রক্তস্নাত আন্দোলনের মাধ্যমে বিজয় অর্জন করলেও এখনও পূর্ণ গণতন্ত্র আসেনি। অবাধ, মুক্ত ও নিরপেক্ষ নির্বাচন গণতন্ত্রের অন্তর্ভুক্ত। গণতন্ত্রকে স্থায়ী রূপ দিতে হলে নিরপেক্ষ নির্বাচনের ধারাবাহিকতা নিশ্চিত করতে হবে। রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ, সর্বজনীন শিক্ষা এবং সামাজিক ন্যায়বিচার ছাড়া প্রকৃত গণতন্ত্র সম্ভব নয়।
তিনি বলেন, এ বছরের আন্তর্জাতিক গণতন্ত্র দিবসের থিম- ‘অ্যাচিভিং জেন্ডার ইকুইলিটি একশন বাই একশন’ অর্থাৎ পদক্ষেপের পর পদক্ষেপ গ্রহণ করে লিঙ্গ সমতা অর্জন করা। নারী ও পুরুষ অথবা অন্যকোন লিঙ্গে সবার সমান অংশগ্রহণ এবং সুবিধা পাওয়ার নিশ্চয়তা লাভ করে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র-সমাজে। গণতন্ত্র লিঙ্গ ভেদে কারও প্রতি কোন বৈষম্যকে বাড়িয়ে তুলতে পারে না, বরং সকলের জন্য সমান আইনি ও সামাজিক অধিকার নিশ্চিত করা সম্ভব হয়। আমরা দুঃসময় কাটিয়ে উঠে স্বৈরাচারের পতন ঘটিয়েছি, এখন কার্যকর গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গড়ে তোলার সার্বিক প্রচেষ্টায় আমাদেরকে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে।
Discussion about this post