লাইফস্টাইল ডেস্ক
শহর জুড়ে চলছে রোগের মরশুম। কেউ ভুগছেন জ্বরে, কেউবা শ্বাসকষ্টে। অনেকেই আবার কষ্ট পাচ্ছেন পেটের গোলমালে। সব অসুস্থতার জন্যই দায়ী তাপমাত্রা। বসন্ত শেষ না হলেও প্রকৃতিতে গরম পড়েছে ভালোই। তাপমাত্রার ঊর্ধ্বগতিতে হাঁসফাঁস অবস্থা। ডায়েরিয়া, বমি, হজমের সমস্যা লেগেই আছে।
গরমে সুস্থ থাকতে কিছু বিষয় খেয়াল রাখা জরুরি। সেসঙ্গে খেতে হবে বুঝেশুনে। এই গরমে কোন রোগগুলো বেশি হয়? সুস্থ থাকতে করণীয় কী? জানুন বিস্তারিত-
গরমে কোন কোন রোগ হয়?
প্রচণ্ড গরমে জ্বর, পেটখারাপ, টাইফয়েড, মূত্রনালিতে সংক্রমণের মতো রোগের প্রকোপ বাড়ে। মেডিসিনের চিকিৎসকদের মতে, গরম থেকে সোজা শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ঘরে ঢুকে পড়া বা বাইরে থেকে ঘরে ঢুকেই ঠান্ডা পানি খাওয়ার ফলে গলায়, ফুসফুসে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ হয়।
অতিরিক্ত গরমে শরীর শুকিয়ে গিয়ে মূত্রনালিতে সংক্রমণও বাড়ে। এসময়ের ভাইরাল জ্বরে গা-হাত-পায়ে প্রবল ব্যথা তো আছেই, সেসঙ্গে গ্যাস-অম্বলের সমস্যাও দেখা দেয়। গরমে চিকেন পক্সের প্রকোপও বাড়ে।
এসময় কায়িক পরিশ্রম বেশি হলে কিংবা দীর্ঘক্ষণ শরীরচর্চা করলে ‘হিট ক্র্যাম্প’ হতে পারে। এমনটা হলে কাঁধ, ঘাড় এবং ঊরুর পেশিতে টান ধরে। আবার অতিরিক্ত গরমে হাত-পা ফুলে যায়, কোষে অতিরিক্ত তরল জমতে থাকে, এই রোগকে ‘হিট এডেমা’ বলা হয়। এমনটা হলে দেরি না করে চিকিৎসকের কাছে যাওয়া জরুরি।
গরমে খাওয়াদাওয়া কেমন হবে?
গরমে সবচেয়ে বেশি যে সমস্যা হয় সেটি হলো ডিহাইড্রেশন বা শরীরের পানিশূন্যতা। এর থেকে বাঁচতে যেমন অতিরিক্ত পানি আর তরল খাবার খেতে হবে, তেমনই এড়াতে হবে অতিরিক্ত মসলাযুক্ত খাবার। গরমে কী কী খাওয়া উচিত, কোন খাবার এড়িয়ে চলা উচিত জানুন-
সকালে বেশি প্রোটিন খাবেন না
সকালের নাশতায় খুব বেশি প্রোটিন খাবেন না। দুধ খেলে তার সঙ্গে কর্নফ্লেক্স বা ওটস খেতে পারেন। দই-চিঁড়া, দইয়ের ঘোল দিয়ে তৈরি ওটস খেতে পারেন। ওটসে আছে বিটা-গ্লুকান, যা হার্ট ভালো রাখবে।
কলা খান
বয়স্করা খেতে পারেন ছানা, ওটস। গরমে অনেকেই ভারী কিছু খেতে চান না। সেক্ষেত্রে খালি পেটে না থেকে দুটো কলা খেতে পারেন। এতে ভিটামিন, পটাশিয়াম ও কার্বোহাইড্রেট একই সঙ্গে পেয়ে যাবেন।
সকালে চা-কফির অভ্যাস ছাড়ুন
সকালে খালি পেটে চা বা কফি খাওয়ার অভ্যাস ছাড়ুন। এর বদলে সারা রাত ভিজিয়ে রাখা মেথির জল, মৌরি-মিছরি ভেজানো পানি খেতে পারেন। এক লিটার পানিতে শসার টুকরো, পুদিনা পাতা ভিজিয়ে রাখুন। সেই পানি অল্প অল্প করে সারা দিন খান। এটি খুব ভালো ডিটক্স পানীয়ের কাজ করবে।
দুপুরে হালকা খাবার
দুপুরের খাবার হালকা হতে হবে। এসময় রুটি না খেয়ে ভাত খাওয়াই ভালো। তবে খেতে হবে পরিমাণ বুঝে। গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা থাকলে এক কাপের মতো ভাত, সঙ্গে পাতলা করে রান্না ডাল, মাছের পাতলা ঝোল খেতে পারেন। হালকা-মশলার তরিতরকারি পরিমাণ মতো খেতে হবে। গরমে রেড মিট এবং তেল-মশলাযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলতে হবে।
পানির বিকল্প নেই
একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষকে এসময় সারাদিনে অন্তত ৩-৪ লিটার পানি পান করতেই হবে। ফলের রস বা তরল খাবার বেশি খেলে, ২ লিটার পানি পান আবশ্যক। তবে বাজারের জুস খেলে চলবে না। ডাবের পানি, তাজা ফলের শরবত খেতে হবে। এর থেকে প্রয়োজনীয় ফাইবার ও খনিজ উপাদানগুলো পেয়ে যাবেন।
বেরি জাতীয় ফল খান
বেরি জাতীয় ফল খুবই উপকারী। যাদের মূত্রনালির সংক্রমণ বেশি হয়, তারা ক্র্যানবেরি খেতে পারেন। এছাড়া তরমুজ খেতে পারেন। এই ফলটি ক্যানসার, উচ্চ রক্তচাপ, হার্ট অ্যাটাকের মতো নানা শারীরিক সমস্যার ঝুঁকি কমায়। পেটের স্বাস্থ্য ভালো রাখতেও এর ভূমিকা কম নয়।
এসব সবজি খান
গরমকালে খাবার পাতে উচ্ছে, কুমড়ো, রাঙা আলু, সজনে ডাঁটার মতো সবজিগুলো রাখার চেষ্টা করবেন। এসব খাবার সংক্রমণজনিত অসুখবিসুখ থেকে দূরে রাখবে।
Discussion about this post