নিজস্ব প্রতিবেদক
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন রাত ১০টার পর ক্যাম্পাসে সকল ধরনের অনুষ্ঠান নিষিদ্ধ করেছে। সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড ও ছাত্র-ছাত্রীদের স্বাধীন সময়কে সীমিত করার এই সিদ্ধান্তে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উদ্বেগ ও সমালোচনা সৃষ্টি হয়েছে।
শনিবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক জরুরি বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আগের এক সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, শান্তি-শৃঙ্খলা এবং নিরাপত্তার স্বার্থে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত রাত ১০টার পর ক্যাম্পাসে কোনো অনুষ্ঠান করা যাবে না। বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, “রাত ১০টার পর অনুষ্ঠান চললে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি বা রাষ্ট্রীয় আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” অনুষ্ঠানের সময় শব্দের মাত্রা সহনীয় রাখার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।
অনুষ্ঠান সীমিত করার এই সিদ্ধান্তকে অনেকেই সমালোচনা করেছেন। জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি ফাইজা মেহজাবিন প্রিয়ন্তী গণমাধ্যম বসবে বলেন, “জাহাঙ্গীরনগরের মতো সাংস্কৃতিক রাজধানীখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয়ে রাত ১০টার পর সাংস্কৃতিক আয়োজন নিষিদ্ধ করা আগের প্রশাসনও করেছিল। বর্তমান প্রশাসন তা আরও জোরালোভাবে করেছে। এটি মূলত এক ধরনের রিপ্রেসিভ ভাবনা, যা অনেক সময় প্রশাসনের অযৌক্তিক নিরাপত্তা-উদ্দেশ্যকে প্রমাণ করে।”
তিনি বলেন, “সাংস্কৃতিক আয়োজনের মাধ্যমে ছাত্ররা একত্রিত হয়। এটি কি প্রশাসন বা শাসকগোষ্ঠীর জন্য কোনো সংকট? তারা যেন চায় ছাত্ররা বিচ্ছিন্ন থাকুক, হলের চার দেয়ালে বন্দি থাকুক।”
২০২৩ সালের ৯ অক্টোবরও প্রশাসন একটি জরুরি বিজ্ঞপ্তি দিয়েছিল। সেই আদেশে বলা হয়েছিল, অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের অনুষ্ঠান তিন বছরে একবার আয়োজন করা যাবে; ব্যাচভিত্তিক রিইউনিয়ন আয়োজন করা যাবে না। রাত ১০টার পর কোনো অনুষ্ঠান চললে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার পাশাপাশি আয়োজক সংগঠনকে কালো তালিকাভুক্ত করার নির্দেশও ছিল।
ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের সভাপতি অদ্রি অংকুর মন্তব্য করেছেন, “নিজেদের বারবার জুলাই অভ্যুত্থানের প্রোডাক্ট হিসেবে দাবি করা এই প্রশাসন বিগত স্বৈরাচারী প্রশাসনের সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত পুনরায় কার্যকর করেছে। এটি আমরা জুলাইয়ের শহিদদের প্রতি বেঈমানি হিসেবে দেখি।”










Discussion about this post