নিজস্ব প্রতিবেদক
‘নির্বাচন করার জন্য ক্ষমতায় বসিনি’ বলে পার পাবেন না বলে অন্তর্বর্তী সরকারকে হুঁশিয়ার করেছেন গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান।
শুক্রবার (২৩ মে) রাজধানীর পল্টনে আল রাজী কমপ্লেক্সের সামনে যুব অধিকার পরিষদ আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে এ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন তিনি।
এ সময় আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের দাবি জানান রাশেদ খান। তিনি বলেন, আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করতে হবে। ডিসেম্বরের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করতে হবে।
অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ করে গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমরা আপনাদের সময় দিয়েছিলাম। এরই মধ্যে নয় মাস পার হয়ে গেছে, দশ মাস চলছে। গণহত্যার বিচার করতে পারেননি।
তিনি বলেন, যারা জনগণকে ধোঁকা দিয়েছে তাদের ডাকে আর কোনো ঐক্য হবে না। সরকার যদি ডোন্ট কেয়ার মনোভাব নিয়ে কাজ করতে চায়, আমরা সরকারকে সহযোগিতা করতে পারবো না।
রাশেদ খান বলেন, নির্বাচন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এখন এই কথা বইলেন না যে, আমরা তো নির্বাচন করার জন্য ক্ষমতায় বসিনি। এই কথা বললে আপনারা পার পাবেন না। আমরাও রাষ্ট্র সংস্কার চাই, কিন্তু পারেন নাই। দশ মাসে কিছু করতে পারেন নাই। শুধু নিজেদের আখের গোছাতে চাইছেন, সম্পদ অর্জন করেছেন। আওয়ামী লীগের লুটেরাদের সম্পদ পাহারা দিয়েছেন। আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে আমরাই ৬৪ জেলায় ডিসির কাছে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছি। এই ঢাকার রাজপথে অসংখ্য মিছিল করেছি, প্রোগ্রাম করেছি।
তিনি বলেন, দেশ এখন গভীর সংকটের মধ্যে রয়েছে। মানবিক করিডর নিয়ে একেকজন উপদেষ্টা এক এক রকম বক্তব্য দিয়েছেন। এ কারণে আজ জটিলতা তৈরি হয়েছে। চট্টগ্রাম বন্দর নিয়ে ষড়যন্ত্র চলছে। মানবিক করিডর, চট্টগ্রাম বন্দর বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়ার ষড়যন্ত্র আমরা মানতে পারি না।
গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমাদের স্পষ্ট কথা, দেশের যেসব কোম্পানি বিতর্কমুক্ত, তাদেরকে চট্টগ্রাম বন্দরের কাজ দিতে হবে। দেশের সম্পদ দেশেই রাখতে হবে। যদি লজিস্টিক সাপোর্ট প্রয়োজন হয় আপনারা বিদেশ থেকে টেকনিসিয়ান ভাড়া করেন। কিন্তু, আমার দেশের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয়, এমন কোনো সিদ্ধান্ত আমরা মানবো না। দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের হুমকি হয় এমন কোনো সিদ্ধান্ত অন্তর্বর্তী সরকার কেন ভবিষ্যতের সরকারও সেই সিদ্ধান্ত নিতে পারবে না।
রাশেদ খান আরও বলেন, বাংলাদেশের একজন নাগরিকও বলে নাই ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে পদত্যাগ করতে হবে। আমরা বলেছি তিনি একমাত্র খেলোয়াড়। তার খেলার ওপর ভিত্তি করে এখনো পর্যন্ত রাষ্ট্র টিকে আছে। কিন্তু টিম মেম্বাররা যদি ভালো না খেলে ওই খেলায় কি জেতা যায়? ড. মুহাম্মদ ইউনূস স্যার ম্যান অব দ্য ম্যাচ হচ্ছেন, ম্যান অব দ্য সিরিজ হচ্ছেন। কিন্তু বাকি যে টিম প্লেয়ার তারা ভালো খেলতেছেন না। যে কারণে আমরা সিরিজ জিততে পারছি না। আমরা এখনো পর্যন্ত কোনো সিরিজ জিতিনি। দশ মাসে এখন পর্যন্ত রাষ্ট্র সংস্কার শুরু হয়নি।
এ সময় অন্তর্বর্তী সরকারের দুই উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ও মাহফুজ আলমের পদত্যাগ দাবি করেন তিনি। পাশাপাশি ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজকেও অপসারণের দাবি জানান রাশেদ খান।
সমাবেশে যুব অধিকার পরিষদের থানা ও ঢাকা মহানগর পর্যায়ের নেতারা বক্তব্য দেন।
Discussion about this post