স্পোর্টস ডেস্ক:
কাঠমান্ডুর দশরথ রঙ্গশালা স্টেডিয়ামে ফিফা প্রীতি ম্যাচে শনিবার নেপালের সঙ্গে গোলশূন্য ড্র করেছে বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দল। এর মধ্য দিয়ে চার বছর পর নেপালের বিরুদ্ধে ড্র করলো জামালরা। এ নিয়ে নেপালের বিপক্ষে টানা ছয় ম্যাচ জয়হীন থাকল বাংলাদেশ। যার মধ্যে আজকেরটিসহ চারটিই ড্র।
হামজা-শমিতদের ছাড়াই এই ম্যাচে মাঠে নামে বাংলাদেশ। মিতুল মার্মা দলের বাইরে থাকায় জাতীয় দলে অভিষেক হয় সুজন হোসেনের।
ম্যাচের শুরু থেকেই চলতে থাকে আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণের খেলা। প্রথমার্ধে খুব বেশি বড় পরীক্ষায় পড়তে হয়নি দুই দলের কোনও গোলরক্ষককে।
আক্রমণ করলেও পরিষ্কার গোলের সুযোগ তৈরি করতে পারেনি নেপাল। তবে ম্যাচের ৩৬ মিনিটে এগিয়ে যাওয়ার সুবর্ণ সুযোগ তৈরি করেছিল লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। কিন্তু ফরোয়ার্ডদের ব্যর্থতায় মেলেনি সেই কাঙ্ক্ষিত গোলের। দ্বিতীয়ার্ধেও ঘটে প্রথমার্ধের পুনরাবৃত্তি। শেষ পর্যন্ত ড্র নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয় দুই দলকে।
বাংলাদেশ-নেপাল দুই দলই আগামী মাসে অক্টোবরে এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের ম্যাচ খেলবে। গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচের আগে এই ফিফা উইন্ডোতে নিজেদের প্রস্তুত করতেই মূলত সিরিজ আয়োজন। প্রথম ম্যাচে দুই দলের কেউই গোল করতে পারেনি। ফলে এক পয়েন্ট নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয়েছে।
২০২১ সালে মালদ্বীপ সাফে বাংলাদেশ-নেপাল ম্যাচ ছিল অঘোষিত সেমিফাইনাল। ঐ ম্যাচে নেপালকে হারাতে পারলে বাংলাদেশ ফাইনাল খেলতে পারত। নেপাল ড্র করায় তারা ভারতের সঙ্গে ফাইনাল খেলে। ঐ বছরই মার্চে বাংলাদেশ কাঠমান্ডুতে ত্রিদেশীয় এক টুর্নামেন্ট খেলে। সেই টুর্নামেন্টের ফাইনালে স্বাগতিক নেপাল ২-১ গোলে জিতে চ্যাম্পিয়ন হয়।
এরপর ২৭ মার্চ রাউন্ড রবিন লিগের ম্যাচে বাংলাদেশ গোল শূন্য ড্র করে। সেই হিসেবে বাংলাদেশ চার বছর পর আবার নেপালে ড্র করল। ভিয়েতনামে মোরসালিনরা ইয়েমেনের বিপক্ষে নাটকীয় হারে টুর্নামেন্ট থেকে বিদায়ের পথে। নেপালে জামালরা ড্র করে অন্তত ফুটবলপ্রেমীদের খানিকটা স্বস্তি দিয়েছে।
দশরথ স্টেডিয়াম এএফসি বড় টুর্নামেন্টের জন্য যোগ্য নয়। এমন ঘোষণার পর আলোচনায় দশরথের মাঠ। নেপালে রোদ-বৃষ্টির ক্রমাগত খেলায় সামান্য বৃষ্টিতে মাঠ খানিকটা ভারী ছিল। দুই দলের ফুটবলাররা এতে স্বাভাবিক ফুটবল খেলতে পারেননি সেই অর্থে। স্বাগতিক ফুটবলাররাই ম্যাচে একাধিকবার মাঠের সমস্যায় পড়ে আঘাত পেয়েছেন। এতে খেলা বিঘ্ন ঘটলেও বড় ধরনের ইনজুরি অবশ্য হয়নি।
বাংলাদেশের নিয়মিত গোলরক্ষক মিতুল মারমা আজকের ম্যাচে খেলেননি। সুজন হোসেনের জাতীয় দলে অভিষেক ম্যাচে তেমন বেশি পরীক্ষায় পড়তে হয়নি। নেপাল আক্রমণ করলেও পরিষ্কার গোলের সুযোগ তৈরি করতে পারেনি। বাংলাদেশ ভালোভাবেই সামাল দিয়েছে।
ম্যাচের ৩৬ মিনিটে তুলনামূলক সহজ গোলের সুযোগ তৈরি করেছিল বাংলাদেশই। ডান প্রান্ত থেকে রহমত মিয়ার লম্বা থ্রো ইন ধরতে নেপালের গোলরক্ষক কিরণ বক্স থেকে বেরিয়ে আসেন। বল গ্রিপে ধরতে পারেননি। বাংলাদেশি ফরোয়ার্ড বল পেলেও ফাঁকা পোস্টে বল প্রবেশ করাতে ব্যর্থ হন।
দ্বিতীয়ার্ধে বাংলাদেশ খানিকটা গোছালো ফুটবল খেলে। বল দখল, পাসিংয়ে পরিকল্পনার ছাপ ছিল। নেপালের ফুটবলাররা দুই বছর ঘরোয়া লিগ খেলেনি। এরপরও তারা প্রায় দেড় মাসের প্রস্তুতিতে জাতীয় দলের হয়ে তুলনামূলক ভালো ফুটবলই খেলেছে। অস্ট্রেলিয়ান কোচ ম্যাট রসের অধীনে বিল্ড আপ ফুটবল খেলার চেষ্টা করেছে স্বাগতিক দল। দুই দলের মধ্যকার দ্বিতীয় ম্যাচ ৯ সেপ্টেম্বর।
Discussion about this post