বিনোদন ডেস্ক
সম্প্রতি ছোটপর্দার জনপ্রিয় অভিনেত্রী তানজিন তিশার বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ তোলেন ‘এ্যাপোনিয়া’ (Aponia) নামের একটি অনলাইন ফ্যাশনের কর্ণধার ঝিলিক। তিনি অভিযোগ করেন, সামাজিকমাধ্যমে প্রমোশনের শর্তে বিনামূল্যে শাড়ি নিয়েও তা করেননি নায়িকা তিশা। গতমাসে প্রতারণার অভিযোগ এনে আইনি নোটিশের মাধ্যমে শাড়ি বাবদ ১ লাখ টাকা ফেরত চাওয়া হয়। এবং অভিযোগকারীর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করতে বলা হয়। কিন্তু আইনি নোটিশের তোয়াক্কা করেননি অভিনেত্রী।
এবার প্রতারণা ও মানহানির অভিযোগে তিশার বিরুদ্ধে মামলা করেছেন এ্যাপোনিয়া কর্তৃপক্ষ। বুধবার (৫ নভেম্বর) ঢাকার চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের ১৮নম্বর কোর্টে ৪২০/৪০৬ ধারায় প্রতারণা ও বিশ্বাসভঙ্গের অভিযোগ এনে বাদী হয়ে এ মামলাটি দায়ের করেন এ্যাপোনিয়ার এক্সিকিউটিভ মো: আমিনুল ইসলাম।
মামলায় দন্ডবিধির ৪২০/৪০৬ ধারায় অপরাধ আমলে নিয়ে আসামীর প্রতি গ্রেফতারি পরোয়ানার আদেশ চাওয়া হলে ম্যাজিস্ট্রেট জুয়েল রানার আদালত তিশার বিরুদ্ধে মামলাটি আমলে নিয়ে বাংলাদেশ পুলিশের গোয়েন্দা সংস্থা (ডিবি) কে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
এ সম্পর্কে বাদী পক্ষের আইনজীবি বাংলাদেশের সুপ্রীম কোর্টের এডভোকেট সলিমুল্লাহ সরকার গণমাধ্যমকে বলেন, ‘তানজিন তিশার মতো সেলিব্রিটি একজন নারী উদ্যোক্তার সঙ্গে যে ধরনের প্রতারণা করেছেন তা কাম্য নয়। উনি চাইলেই বিষয়টি সমাধান করতে পারতেন, কিন্তু সেটা না করে তার ভেরিফায়েড ফেসবুকে মানহানিকর স্ট্যাটাস দিয়ে সামাজিকভাবে হেয় করেছেন। একজন নারী উদ্যোক্তাকে যেখানে উনার পেট্রোনাইজ করার কথা, সেখানে তিনি করলেন প্রতারণা। এ জন্য তাকে আইনি নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু আইনি নোটিশের কোনো জবাব তিনি দেননি। তাই আমার ময়াক্কেল তিশার বিরুদ্ধে বিজ্ঞ আদালতে মামলা করেছেন।’
এ্যাপোনিয়া অনলাইন ফ্যাশনের কর্ণধার ঝিনুক বলেন, ‘যেকোনো পেশারই একটা এথিক্স থাকে। এথিক্স অনুযায়ী কাজ না করলে সেই পেশার সম্মান আর থাকে না। শিল্পীরাতো পানির মতো সহজ সরল হয়। শিল্পীরা মানুষের জন্য কাজ করেন। তাদেরকে মানুষ ফলো করেন। কিন্তু শিল্পী যদি প্রতারণা করেন, মানুষের বিশ্বাস ভঙ্গ করেন সেটা আসলে দুঃখজনক। যেহেতু বিষয়টি মামলায় গড়িয়েছে। আমি আইনের প্রতি অত্যন্ত শ্রদ্ধাশীল। আমার বিশ্বাস আমি ন্যায় বিচার পাবো।’
জানা গেছে, গত ১৭ জানুয়ারি তানজিন তিশা তার ভেরিফায়েড ইন্সটাগ্রাম থেকে ‘এ্যাপোনিয়া’ নামে একটি অনলাইন ফ্যাশন পেজের ইন্সটাগ্রামে যোগাযোগ করেন। সেখানে তিনি জানতে চান জামদানি কী কী আছে? এরপর কয়েকটি শাড়ির ছবি পাঠানোর পর দাম জানতে চান এই অভিনেত্রী। ফ্যাশন পেজ থেকে জানানো হয় শাড়িগুলোর আলাদা আলাদা দাম। এরপর তিশা একটি শাড়ি পছন্দ করেন এবং বাসার ঠিকানা দেন। ওই ফ্যাশন পেজ থেকে জানানো হয় তিশাকে শাড়িটি টাকা দিয়ে কিনতে হবে না, বিনিময়ে শাড়ি পরে ছবি তুলে সোশ্যাল মিডিয়ায় শাড়ি এবং ফ্যাশন পেজটি প্রমোশন করে দিলেই হবে।
তিশাও এই প্রস্তাবটি মুহূর্তেই লুফে নেন। শাড়িটি যথাসময়ে তিশার বাসায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু শাড়ি গ্রহণের প্রায় ১০ মাস সময় অতিবাহিত হলেও তিশা তার কথা রাখেননি। মাঝে ফ্যাশন পেজের স্বত্বাধিকারীর সঙ্গে কয়েকবার ভয়েস মেসেজ দিয়ে দ্রুত কাজটি করে দেওয়ার কথাও বলেন তিশা। পরবর্তী সময়ে তিশা ওই নারী উদ্যোক্তার সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। হোয়াটসঅ্যাপ, ফোন, ইন্সটাগ্রামসহ বিভিন্নভাবে তিশার সঙ্গে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছেন বলে জানান ওই নারী উদ্যোক্তা।










Discussion about this post