নিজস্ব প্রতিবেদক:
দেশের বাম তত্ত্বচর্চার মহিরুহ, সমাজতান্ত্রিক ভাবুক, গবেষক ও লেখক বদরুদ্দীন উমরের প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানাচ্ছে সর্বস্তরের মানুষ। আজ সোমবার সকালে তাঁর মরদেহ রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আনা হয় এবং সকাল সাড়ে ১০টা থেকে শ্রদ্ধা নিবেদন শুরু হয়।
বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠনগুলো বদরুদ্দীন উমরের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছে। ব্যক্তিগতভাবে সাধারণ মানুষও ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে উপস্থিত ছিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা শারমিন এস মুরশিদ ও ফরিদা আখতার।
শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে মরদেহ নেওয়া হবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে। বাদ জোহর জানাজার পর জুরাইন কবরস্থানে তাঁকে তাঁর মা-বাবার কবরের পাশে দাফন করা হবে।
বদরুদ্দীন উমর গতকাল রোববার শ্যামলীর বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে মারা যান। বয়স হয়েছিল ৯৪ বছর। সর্বশেষ তিনি জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল নামে একটি রাজনৈতিক সংগঠনের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছিলেন।
সংক্ষিপ্ত জীবনী অনুযায়ী, বদরুদ্দীন উমর ১৯৩১ সালের ২০ ডিসেম্বর পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবা আবুল হাশিম ছিলেন অখণ্ড ভারতের রাজনীতিবিদ ও বঙ্গীয় প্রাদেশিক মুসলিম লীগের সাধারণ সম্পাদক। দেশভাগের পর ১৯৫০ সালে পরিবার ঢাকায় আসেন।
তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শনে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন এবং ছাত্র থাকাকালেই ১৯৫৪ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ে খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। ১৯৫৭ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে দর্শনের প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন। ১৯৬১ সালে যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিপিই ডিগ্রি নিয়ে দেশে ফিরে সমাজবিজ্ঞান বিভাগ প্রতিষ্ঠা করেন।
১৯৬৮ সালে তৎকালীন গভর্নর মোনায়েম খানের স্বৈরতান্ত্রিক আচরণের প্রতিবাদে শিক্ষকতা ত্যাগ করে রাজনীতি ও লেখালেখিতে আত্মনিয়োগ করেন। প্রথম গ্রন্থ ‘সাম্প্রদায়িকতা’ ১৯৬৬ সালে প্রকাশিত হয়। তিনি বাংলাদেশ কৃষক ফেডারেশনের সভাপতি ও গণতান্ত্রিক বিপ্লবী জোটের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী ছিলেন। পূর্ব বাংলার কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটিতেও ছিলেন। ২০০৩ সালে জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল গঠন করে এর সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
Discussion about this post