নিজস্ব প্রতিবেদক:
দেশের অন্যতম অনলাইন টিকিট বুকিং প্ল্যাটফর্ম ফ্লাইট এক্সপার্ট হঠাৎই কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়ায় বিপাকে পড়েছেন হাজারো গ্রাহক এবং টিকিট বিক্রেতা এজেন্সি। গ্রাহকদের অগ্রিম পরিশোধিত কোটি কোটি টাকা ফেরত পাওয়া নিয়ে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা।
শনিবার (২ জুলাই) সন্ধ্যায় রাজধানীর মতিঝিলের ফ্লাইট এক্সপার্ট কার্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, বিভিন্ন এজেন্সির প্রতিনিধিদের ভিড়। তাঁরা কেনা টিকিটের অবস্থা জানতে এলে কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য না পেয়ে হতাশ হয়ে ফিরে যান।
এক এজেন্সি মালিক কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, সব শেষ ভাই, ২৫-৩০ লাখ টাকা নেই। সব টিকিট ফ্লাইট এক্সপার্টের মাধ্যমে কাটা হলেও এখন জানলাম এগুলো অন্য এজেন্সি থেকে নেওয়া হয়েছিল।
২০১৭ সালের মার্চে যাত্রা শুরু করে ফ্লাইট এক্সপার্ট। দেশি-বিদেশি এয়ারলাইনসের টিকিট বুকিং, হোটেল রিজার্ভেশন, ট্যুর প্যাকেজ ও ভিসা প্রক্রিয়াকরণসহ নানা সেবা দিয়ে প্রতিষ্ঠানটি দ্রুত জনপ্রিয়তা পায়। তবে সরাসরি এয়ারলাইনস থেকে টিকিট না নিয়ে মধ্যস্থতাকারী দুটি এজেন্সির ওপর নির্ভর করত তারা। অভিযোগ উঠেছে, এই এজেন্সিগুলো বর্তমানে টিকিট রিফান্ড করে অর্থ তুলে নিচ্ছে।
অভ্যন্তরীণ একটি ফেসবুক গ্রুপে ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সালমান বিন রশিদ বার্তায় জানান, তিনি প্রতিষ্ঠানের দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তিন কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ করেছেন। হুমকি ও অপবাদ থেকে বাঁচতে তিনি প্রতিষ্ঠান বন্ধ ও দেশ ছাড়ার ঘোষণা দেন।
হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগ করলে সালমান বিন রশিদ টাকা নিয়ে পালানোর অভিযোগ অস্বীকার করেন।
তিনি বলেন, গ্রাহকরা টাকা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই টিকিট পান। এখানে পালানোর সুযোগ নেই। বরং হেড অব কমার্শিয়াল সাঈদ আহমেদ টিকিট রিফান্ড করতে বলে পরিস্থিতি খারাপ করেছেন।
অন্যদিকে সাঈদ আহমেদ দাবি করেন, মালিক সালমান বিন রশিদই টাকা নিয়ে দেশ ছাড়েন, ফলে অসংখ্য গ্রাহক ও এজেন্সি অনিশ্চয়তায় পড়েছে। তিনি মতিঝিল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরিও (জিডি) করেছেন।
মতিঝিল সিটি সেন্টার ভবনের নিরাপত্তাকর্মীরা জানিয়েছেন, এমডি সালমান নিয়মিত অফিসে এলেও গত তিন দিন ধরে তিনি অনুপস্থিত।
এক এজেন্সির কর্মকর্তা মন্তব্য করেন, ছোট এজেন্সিগুলো বড় প্ল্যাটফর্মের ওপর নির্ভর করতে বাধ্য হয়। সেই নির্ভরতাই এখন বিপদের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
Discussion about this post