নিজস্ব প্রতিবেদক:
বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) থেকে যানবাহনের ফিটনেস সার্টিফিকেট, ড্রাইভিং লাইসেন্সসহ অন্যান্য সেক্টরের কার্যক্রমগুলো বেসরকারি খাতে না দিয়ে বিআরটিএ’র নিজস্ব সক্ষমতা বৃদ্ধি করার জন্য দাবি জানিয়েছেন গ্রাহকরা।
জানা যায়, বর্তমান অন্তবর্তীকালীন সরকার যানবাহনের ফিটনেস সার্টিফিকেট ও ড্রাইভিং লাইসেন্সসহ বিভিন্ন সেক্টরে কাজগুলো প্রদান করার জন্য বেসরকারি খাতকে দায়িত্ব প্রদান করতে যাচ্ছেন।
বেসরকারি খাতে হস্তান্তর করলে দুর্ভোগ ছাড়া আর কিছুই মিলবে না বলে মনে করেন ভুক্তভোগীরা। সেখানে সেবা নিতে গেলে পথে পথে হয়রানি শিকার হতে হবে। ইতিপূর্বে লাইসেন্স প্রিন্টিংয়ের মাদ্রাস সিকিউরিটিস কোম্পানী লিঃ ও অন্যান্য খাতে টাইগার আইটি এবং সিএনএস কে দায়িত্ব প্রদান করিলেও জনগণ তাহাদের নিকট হইতে কাঙ্খিত সেবা পায়নি।
১৯৮৩ সনে বিআরটিএ ২০০ জন কর্মকর্তা কর্মচারীদের নিয়ে যাত্রা শুরু করেন। এবং জানা যায়, বর্তমানে এর কর্মকর্তা– কর্মচারী সংখ্যা ৭০০ এর উপরে। কিন্তু এরকম সংখ্যক কর্মকর্তা– কর্মচারী নিয়েও বিআরটিএ সমগ্র বাংলাদেশব্যাপী সেবা দিয়ে যাচ্ছে।
প্রকৃতপক্ষে সমগ্র বাংলাদেশে বিআরটিএ এর কর্মকর্তা –কর্মচারীর নূন্যতম প্রয়োজন ৭ থেকে ৮ হাজার জন। বিভিন্ন সময়ে লোকবল নিয়োগ করার জন্য সংস্থাটির পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে চিঠি প্রেরণ করলেও জনবল নিয়োগ করা হয় নাই। তাই সিমিত সংখ্যক জনবল নিয়েই সংস্থাটি সেবা দিয়ে যাচ্ছে। তার মধ্যেও গ্রাহকরা ভালো সেবা পাচ্ছেন। জনবল আরও বৃদ্ধি পেলে গ্রাহকরা আরো উন্নতমানের সেবা পাবেন বলে গ্রাহকদের বিশ্বাস।
গ্রাহক আব্দুল করিমসহ হাজারো গ্রাহকদের অভিযোগ ফিটনেস সার্টিফিকেট, ড্রাইভিং লাইসেন্সসহ বিভিন্ন সেক্টরে কাজগুলো বেসরকারি খাতে হস্তান্ত করলে দুর্ভোগ ছাড়া আর কিছুই মিলবে না। তাই বর্তমান অন্তবর্তীকালীন সরকার ও সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়, সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগের সম্মানিত উপদেষ্টা কাছে আমাদের বিশেষভাবে অনুরোধ আপনারা বিআরটিএ থেকে যানবাহনের ফিটনেস সার্টিফিকেট, ড্রাইভিং লাইসেন্স ও বিভিন্ন সেক্টরের অন্যান্য কাজগুলো বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে না দেওয়ার জন্য।
এদিকে চলতি বছরে ৮ সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশ অটো রিক্সা, অটো টেম্পু, টেক্সিকার চালক শ্রমিক ফেডারেশনের পক্ষ থেকে সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ হানিফ খোকন লিখিত আকারে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগের সম্মানিত সচিবের কাছে এক স্মারকলিপি দেন। সেই স্মারকলিপিতে উল্লেখ করেছেন, ইতিমধ্যে বিআরটিএ ঢাকা মেট্রো সার্কেল-১ এ ডিজিটাল পদ্ধতিতে ফিটনেস দেওয়ার কায্যক্রম আরম্ভ করা হয়েছে।
পর্যায়ক্রমে সমগ্র বাংলাদেশে এই পদ্ধতি আরম্ভ করলে সেবার মান আরও উন্নত হবে। ৮০’র দশকে যানবাহনের রেজিষ্ট্রেশন, ড্রাইভিং লাইসেন্স ও অন্যান্য কাগজপত্র পুলিশ প্রদান করিতেন। কিন্তু তখন পুলিশের কাছ থেকে কাঙ্খিত সেবা না পাওয়ায় আমরা মালিক-শ্রমিক নেতৃবৃন্দদের আন্দোলন ও দাবির ফলে সরকার ১৯৮৩ সালে বিআরটিএ গঠন করেন। আমরা মনে করি বেসরকারি খাতে যানবাহনের ফিটনেস ও ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রদানের ক্ষমতা প্রদান করিলে ব্যাপক দূর্ণীতি ও অনিয়ম হইবে এবং সাধারণ জনগণ ও পরিবহন মালিক শ্রমিকরা কাঙ্খিত সেবা পাওয়া থেকে বঞ্চিত হবে। এমন অবস্থায় বিআরটিএ’র সক্ষমতা বৃদ্ধি করিলে বেসরকারিভাবে গাড়ির ফিটনেস ও লাইসেন্স প্রদানের দায়িত্ব বেসরকারিভাবে প্রদান করার কোন প্রকার প্রয়োজন আছে বলে আমরা মনে করি না ।
তাই অন্তবর্তী কালীন সরকারের কাছে আমাদের বিশেষভাবে অনুরোধ থাকবে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে না দিয়ে সরকারি প্রতিষ্ঠান বিআরটিএকে শক্তিশালী করুন। তাহলে গ্রাহকরা সেবা নিশ্চয়ই পারবেন।
Discussion about this post