ফরিদপুর প্রতিনিধি:
ফরিদপুরে আড়িয়াল খাঁ ও পদ্মা নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় সদরপুর উপজেলার ৩ ইউনিয়নের অন্তত এক হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। একের পর এক গ্রাম ডুবে যাচ্ছে পানিতে, পাশাপাশি দেখা দিয়েছে তীব্র ভাঙন। নদীপাড়ের মানুষ ভিটেমাটি হারানোর ভয়ে ঘরবাড়ি সরিয়ে নিচ্ছেন।
মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) সরেজমিনে সদরপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায়।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত এক সপ্তাহে পদ্মা ও আড়িয়াল খাঁ নদীর ভাঙনে সদরপুরের ঢেউখালী ও আকোটেরচর ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামের শতাধিক বিঘা জমি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। হুমকির মুখে রয়েছে নদীর পাশের ইটভাটা ও বিভিন্ন স্থাপনা।
পানির স্তর বৃদ্ধি
পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, আড়িয়াল খাঁ নদের পানি বিপৎসীমার ১০৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পদ্মার পানিও দ্রুত বাড়ছে। ভাঙন ঠেকাতে আকোটেরচরের পদ্মাপাড়ে শয়তানখালী ট্রলারঘাট এলাকায় জিও ব্যাগ ফেলার কাজ শুরু হয়েছে।
প্লাবিত গ্রাম
চরনাছিরপুর, দিয়ারা নারিকেলবাড়িয়া ও চরমানাইর ইউনিয়নের প্রায় ১৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ফসলি জমি, আউশ ধান, সবজি, মরিচ, কলার বাগান পানির নিচে তলিয়ে গেছে। ফলে কৃষকরা ক্ষতির মুখে পড়েছেন। গ্রামের রাস্তাঘাটও ডুবে যাওয়ায় যোগাযোগে দেখা দিয়েছে সমস্যা।
চরনাছিরপুরের খলিফা কান্দি গ্রামের এক বাসিন্দা বলেন, হঠাৎ করেই পানি ঢুকে পড়েছে গ্রামে। রাস্তাঘাট সব তলিয়ে গেছে। এখন নৌকা ছাড়া চলাচলের উপায় নেই। গবাদি পশু নিয়েও আমরা বিপাকে আছি। এভাবে পানি বাড়তে থাকলে বড় বন্যা হবে।
স্থানীয়দের শঙ্কা
দিয়ারা নারিকেলবাড়িয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নাসির সরদার বলেন, ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলের অধিকাংশ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। কয়েক দিনের মধ্যে সব গ্রামই পানিতে তলিয়ে যাবে বলে আশঙ্কা করছেন তিনি।
চরনাছিরপুর ইউপি চেয়ারম্যান রোকন উদ্দিন মোল্যা বলেন, ইউনিয়নের প্রায় ১০টি গ্রাম পানির নিচে। অনেক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। মাঠের ফসল নষ্ট হয়ে যাচ্ছে, নতুন করে নির্মিত কাঁচা রাস্তাগুলোও ডুবে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে।
প্রশাসনের প্রস্তুতি
সদরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জাকিয়া সুলতানা বলেন, বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। নদীপাড়ের মানুষকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। প্রয়োজনে জরুরি সহায়তা দেওয়া হবে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিব হোসেন বলেন, নদীর পানি বৃদ্ধির কারণে স্রোত বেড়েছে এবং ভাঙন তীব্র হয়েছে। জরুরি এলাকায় জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে।
Discussion about this post