নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রায় এক বছর আগে মারা যাওয়া দুই শিক্ষককে দুটি সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ পদে দায়িত্ব দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। গতকাল মঙ্গলবার তাঁদের অধ্যক্ষ পদে সংযুক্তির প্রজ্ঞাপনে স্বাক্ষর করেছেন মাধ্যমিক উচ্চশিক্ষা (মাউশি) বিভাগের কলেজ শাখার উপসচিব মো. মাহবুব আলম।
বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে রসিকতা ও সমালোচনা চলছে। কর্মকর্তারাও এ নিয়ে বিব্রত।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক উচ্চ শিক্ষা বিভাগ সরকারি করা ১৩৫ কলেজের অধ্যক্ষ পদে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারভুক্ত কর্মকর্তাদের সংযুক্ত করে মঙ্গলবার আদেশ জারি করে। সেখানেই দুই মৃত শিক্ষকের নাম আসে।
জানা গেছে, কুড়িগ্রামের মীর ইসমাইল হোসেন কলেজের অধ্যক্ষ পদে সংযুক্ত হওয়া কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজের পদার্থবিদ্যার অধ্যাপক মোহাম্মদ জামাল উদ্দিন এবং রংপুরের পীরগাছা কলেজের অধ্যক্ষ পদে সংযুক্ত হওয়া কারমাইকেল কলেজের ইতিহাসের অধ্যাপক মোহা. আব্দুল মুত্তালিব এক বছরের বেশি সময় আগে মারা গেছেন।
কারমাইকেল কলেজের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক মো. হাবিবুর রহমান গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন, অধ্যাপক মোহা. আব্দুল মুত্তালিব ২০২৩ সালের ১৬ ডিসেম্বর মৃত্যুবরণ করেন।
অন্যদিকে পদার্থবিদ্যার অধ্যাপক মোহাম্মদ জামাল উদ্দিন ২০২৩ সালের ১২ এপ্রিল মৃত্যুবরণ করেছেন বলে গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজের উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক মোহা. আতাউল হক খান চৌধুরী। আজ বুধবার তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, জামাল উদ্দিন স্যার মারা যাওয়ার বিষয়টি পিডিএসে হালনাগাদ করা হয়েছে। স্যারকে অধ্যক্ষ পদে পদায়ন নিয়ে হাসাহাসি হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, অধ্যাপক মোহাম্মদ জামাল উদ্দিন গত বছরের ১৫ মার্চ ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে আত্মহত্যা করা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকার বাবা।
প্রায় দুই বছর আগে মারা যাওয়া স্বামীকে অধ্যক্ষ হিসেবে পদায়নের খবরে বিস্মিত হয়েছেন অধ্যাপক মোহাম্মদ জামাল উদ্দিনের স্ত্রী তাহমিনা বেগম।
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ থেকে সদ্য পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে বদলি হওয়া যুগ্মসচিব মো. নুরুজ্জামান বলেন, দেড়শর বেশি সরকারি করা কলেজের অধ্যক্ষ পদে পদায়নের বিষয়ে আমরা কাজ করেছিলাম। ঈদের আগেই তাদের পদায়নের কথা ছিল।
অধ্যক্ষ না থাকায় ওই কলেজগুলো শিক্ষকদের বেতন ভাতা পরিষদ নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। তাই অনেকটা তাড়াহুড়া করেই শিক্ষা ক্যাডারের ১৪ ব্যাচের অধ্যাপকদের পদায়ন করা হয়েছে। তবে তথ্য হালনাগাদ না থাকায় হয়তো এ ভুল হয়েছে।
মৃত শিক্ষকদের অধ্যক্ষ পদে পদায়নের বিষয়টি ‘বিব্রতকর’ বলেও মন্তব্য করেন এ যুগ্মসচিব।
Discussion about this post