আন্তর্জাতিক ডেস্ক
যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিয়ে এবার আরও এক নতুন নিয়ম জারি করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। নতুন এ নিয়ম অনুযায়ী, ডায়াবেটিস ও স্থূলতায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের স্থায়ী বসবাসের জন্য করা ভিসা আবেদন বাতিল করে দেবে মার্কিন প্রশাসন।
শনিবার (৮ নভেম্বর) মার্কিন সংবাদমাধ্যম এবিসি নিউজের এক প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে এ তথ্য।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত বৃহস্পতিবার(৬ নভেম্বর) যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর থেকে দূতাবাস ও কনস্যুলার কর্মকর্তাদের পাঠানো এক গোপন নির্দেশনায় বলা হয়েছে, নির্দিষ্ট স্বাস্থ্য সমস্যা বা বয়সজনিত কারণে ভবিষ্যতে যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি সহায়তার ওপর নির্ভরশীল হওয়ার সম্ভাবনা থাকলে তা সরকারের ওপর বোঝা হিসেবে বিবেচনা করা হবে। এক্ষেত্রে আবেদনকারীদের ভিসা প্রত্যাখ্যান করা যেতে পারে।
নতুন এই নির্দেশনায় শুধু আবেদনকারী নয়, তাদের পরিবারের সদস্যদের স্বাস্থ্যগত অবস্থাও বিবেচনায় নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। সন্তান বা প্রবীণ অভিভাবকের যত্নের কারণে আবেদনকারী কাজ করতে পারবেন কি না, তাও বিবেচনা করতে হবে।
এতে উল্লেখ করা হয়েছে, ভিসা অফিসারদের এখন থেকে আবেদনকারীর স্বাস্থ্য ও বয়স সতর্কভাবে বিবেচনা করতে হবে। হৃদরোগ, শ্বাসযন্ত্রের রোগ, ক্যান্সার, ডায়াবেটিস, মানসিক রোগ, স্নায়বিক সমস্যা ও অন্যান্য দীর্ঘমেয়াদি অসুস্থতাকে সম্ভাব্য উচ্চ খরচের রোগ হিসেবে দেখা হবে।
এছাড়া স্থূলতাকে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থার তালিকায় রাখা হয়েছে। কারণ এটি অ্যাজমা, স্লিপ অ্যাপনিয়া ও উচ্চ রক্তচাপের মতো জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে। নির্দেশনায় বলা হয়েছে, এসব রোগের চিকিৎসা ব্যয় দীর্ঘমেয়াদি ও ব্যয়সাপেক্ষ হতে পারে।
ভিসা অফিসারদেরকে আরও বলা হয়েছে, আবেদনকারীর চিকিৎসা খরচ চালানোর মতো পর্যাপ্ত আর্থিক সামর্থ্য আছে কিনা, তা যাচাই করতে হবে।
ট্রাম্প প্রশাসনের নতুন এই নির্দেশনার ফলে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করতে চাওয়া স্থূলতা ও ডায়াবেটিসের সমস্যায় ভোগা অসংখ্য ব্যক্তি বা বয়স্ক আবেদনকারীর ভবিষ্যৎ এখন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
এদিকে নতুন এই পদক্ষেপকে ট্রাম্প প্রশাসনের অভিবাসনবিরোধী নীতিরই অংশ বলে সমালোচনা করেছেন ইমিগ্রেশন বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে, এটি ভিসা অফিসারদের স্বাস্থ্যভিত্তিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা অস্বাভাবিকভাবে বাড়িয়ে দিচ্ছে যা চিকিৎসা-সংক্রান্ত জ্ঞান ছাড়াই তাদের ব্যক্তিগত ধারণা বা পক্ষপাতের ওপর নির্ভর করতে বাধ্য করবে।
ক্যাথলিক লিগ্যাল ইমিগ্রেশন নেটওয়ার্কের সিনিয়র অ্যাটর্নি চার্লস হুইলার বলেন, ট্রাম্প প্রশাসনের নতুন এ সিদ্ধান্ত উদ্বেগজনক, কারণ ভিসা অফিসাররা চিকিৎসক নন, তাদের এই বিষয়ে অভিজ্ঞতাও নেই। অথচ, তাদেরকে এখন অনুমান করতে বলা হচ্ছে কারও ভবিষ্যতে চিকিৎসা খরচ কত হতে পারে।










Discussion about this post