নিজস্ব প্রতিবেদক
সূর্যোদয়ের পর রাজধানীর রমনা বটমূলে শুরু হয়েছে ছায়ানটের বর্ষবরণ ১৪৩২-এর অনুষ্ঠান। আজ সোমবার বৈশাখের ভোরের আলো ফুটতে ফুটতে ভৈরবীর রাগালাপ দিয়ে শুরু হয় এই বর্ষবরণের অনুষ্ঠান। বহু বছরের ধারাবাহিকতায় এবারও ঐতিহ্য আর আবেগে মিলে এক অপার সাংস্কৃতিক আবহ সৃষ্টি করেছে এই আয়োজন।
এ বছরের অনুষ্ঠানের মূল বার্তা— ‘আমার মুক্তি আলোয় আলোয়’, যা প্রতিফলিত হয়েছে গান, আবৃত্তি ও পরিবেশনার প্রতিটি পরতে। স্বাধীনতা, দেশপ্রেম, প্রকৃতি ও মানবিক মূল্যবোধকে সামনে রেখে গড়া হয়েছে পরিবেশনার ধারা। পুরো মঞ্চজুড়ে ছিল আলো, সংগীত আর শুদ্ধ সাংস্কৃতিক চর্চার এক অপূর্ব মেলবন্ধন।
প্রতিবারের মতো এবারও রমনার বটমূলে অর্ধবৃত্তাকার একটি মঞ্চে (৭২ ফুট দৈর্ঘ্য ও ৩০ ফুট প্রস্থ) হয়েছে এই আয়োজন। মঞ্চসজ্জা, শিল্পীদের পোশাক এবং পরিবেশনার রঙে ছিল মেরুনের আধিপত্য। পুরুষ শিল্পীরা পরেছিলেন মেরুন পাঞ্জাবি ও সাদা পায়জামা, আর নারী শিল্পীরা ছিলেন মেরুন পাড়ের অফ হোয়াইট শাড়িতে। মঞ্চের রঙেও রাখা হয়েছে এই পোশাকের সঙ্গে সামঞ্জস্য। উল্লেখ্য, গতবার মঞ্চের রঙ ছিল হালকা সবুজ।
অনুষ্ঠানে মোট ২৪টি পরিবেশনা উপস্থাপিত হচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে ৯টি সম্মেলক গান, ১২টি একক কণ্ঠের পরিবেশনা ও ৩টি আবৃত্তি। বর্ষবরণের কথন পাঠ করছেন ছায়ানটের নির্বাহী সভাপতি ডা. সারওয়ার আলী। অনুষ্ঠান শেষ হবে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে।
বিগত তিন মাস ধরে ছায়ানট সংস্কৃতি-ভবনে চলেছে এই আয়োজনের প্রস্তুতি। ৮ এপ্রিল থেকে শুরু হয় রমনার বটমূলে মঞ্চ নির্মাণ।
আয়োজনটি সরাসরি সম্প্রচার করা হচ্ছে ছায়ানটের ইউটিউব চ্যানেল ও ফেসবুক পেজে। পাশাপাশি দেশের একাধিক টেলিভিশন চ্যানেলেও অনুষ্ঠানটি প্রচার করা হচ্ছে, যাতে দেশের প্রতিটি প্রান্তের মানুষ এই বর্ষবরণের অনন্য মুহূর্তের সাক্ষী হতে পারেন।
উল্লেখ্য, ১৯৬৭ সাল থেকে ছায়ানট নিয়মিতভাবে রমনার বটমূলে পহেলা বৈশাখের সকালে এই আয়োজন করে আসছে। সময়ের পরিবর্তনে অনেক কিছু বদলালেও এই অনুষ্ঠানের সার্বজনীন আবেদন, মানবিকতা ও বাঙালিয়ানা রয়ে গেছে অটুট।
Discussion about this post