আন্তজার্তিক ডেস্ক
হংকংয়ে গত কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় পুড়ে যাওয়া বহুতল অ্যাপার্টমেন্ট ভবনগুলোর প্রতিটি ফ্ল্যাটে উদ্ধার ও তল্লাশি অভিযান অব্যাহত রেখেছে ফায়ার ডিপার্টমেন্টের কর্মীরা।
আজ শুক্রবার (২৮ নভেম্বর) শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত কমপক্ষে ৯৪ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে এবং এ ঘটনায় নিখোঁজ রয়েছে আরও বহু সংখ্যক লোক।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আটটি বহুতল ভবনের এই এস্টেটে আগুন লাগার ৩৬ ঘণ্টারও বেশি সময় পরে বিশাল কমপ্লেক্সটির প্রায় দুই হাজার ইউনিটের মধ্যে মাত্র চারটি ইউনিটে আগুন পুরোপুরি নেভানো সম্ভব হয়েছে।
হংকংয়ের দমকল পরিষেবার উপপরিচালক ডেরেক আর্মস্ট্রং চ্যান বলেছেন, সাহায্য চেয়ে আসা অবশিষ্ট ২৫টি অনুরোধের ভিত্তিতে দমকলকর্মীরা তল্লাশি ও উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছে।
অগ্নিকাণ্ডের এ ঘটনায় ৫০ জনেরও বেশি মানুষ এখনও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন, যাদের মধ্যে ১২ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক এবং ২৮ জন গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় রয়েছেন। বহু মানুষ এখনও নিখোঁজ রয়েছে, যদিও বৃহস্পতিবার সকালের পর থেকে হতাহতের সঠিক সংখ্যা আর হালনাগাদ করা হয়নি।
সুয়েন নামের এক ব্যক্তি বলেন, ‘আগুন এত দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছিল। আমি দেখেছিলাম একটি হোস পাইপ কয়েকটি ভবনকে বাঁচানোর চেষ্টা করছে এবং আমার মনে হয়েছিল তা খুব ধীর গতিতে হচ্ছে।’
শুক্রবার ঘটনাস্থলে থাকা এএফপির একজন সংবাদদাতা দেখেছেন, ওয়াং ফুক কোর্টে আগুন উল্লেখযোগ্যভাবে কমে এসেছে, কিন্তু কাঠামোটি থেকে এখনও মাঝে মাঝে স্ফুলিঙ্গ এবং ঘন ধোঁয়া বেরিয়ে আসছে।
কাঠামোটিকে শীতল করতে এবং অঙ্গার যাতে আবার জ্বলে না ওঠে, তা আটকাতে দমকলকর্মীরা ভবনটিতে পানি দেওয়া অব্যাহত রেখেছে।
এদিকে, কর্তৃপক্ষ আগুন লাগার কারণ তদন্ত শুরু করেছে। প্রায় ৮০ বছরের মধ্যে এই আর্থিক কেন্দ্রের (হংকং) সবচেয়ে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড এটি, যার মধ্যে একটি বড় সংস্কার কাজের অংশ হিসাবে অ্যাপার্টমেন্টগুলোর কাঠামোতে বাঁশের মাচা এবং প্লাস্টিকের জাল জড়ানো ছিল কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
হংকংয়ের দুর্নীতি দমন সংস্থা বৃহস্পতিবার জানিয়েছে, তারা কমপ্লেক্সে সংস্কার কাজ নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে, এর কয়েক ঘণ্টা পরে পুলিশ জানায়, তারা অবহেলা করে ঘটনাস্থলে ফোম প্যাকেজিং ফেলে যাওয়ার সন্দেহে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে।
হংকংয়ের উত্তর জেলা তাই পো-তে অবস্থিত ওয়াং ফুক কোর্টের বাসিন্দারা জানিয়েছেন, তারা কোনো ফায়ার অ্যালার্ম শুনতে পাননি এবং বিপদ সম্পর্কে প্রতিবেশীদের সতর্ক করতে তাদের বাড়ি বাড়ি যেতে হয়েছিল।
অ্যাপার্টমেন্টের বাসিন্দা সুয়েন বলেন, ‘ডোরবেল বাজানো, দরজায় ধাক্কা দেওয়া, প্রতিবেশীদের সতর্ক করা, তাদের চলে যেতে বলা–পরিস্থিতি এমনই ছিল।’
সূত্র : এএফপি










Discussion about this post