নিজস্ব প্রতিবেদক
সাধারণ শিক্ষার্থীদের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) আরেক সমন্বয়ক মাসুদ রানা পদত্যাগ করেছেন। শনিবার (১৭ আগস্ট) রাত সাড়ে ৮টায় গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ ঘোষণা দেন তিনি।
ছাত্ররাজনীতিমুক্ত ক্যাম্পাস ও জবি থেকে উপাচার্য নিয়োগসহ শিক্ষার্থীদের সব দাবি পূরণে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাবেন বলেও বিবৃতিতে আশ্বস্ত করেন।
বিবৃতিতে বলেন, “আমি সব সময় সাধারণ শিক্ষার্থীদের পাশে থাকব, এটা কথা দিচ্ছি।
জবির সংস্কারে ‘জবি সংস্কার আন্দোলন’ নামে যে আন্দোলন শুরু হয়েছে, এখানে একজন সাধারণ শিক্ষার্থী হিসেবে সর্বদা পাশে থাকব। প্রিয় জবিকে সংস্কার করেই ঘরে ফিরতে চাই।”
মানুদ রানা বলেন, ‘বর্তমানে আমি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কার্যকারিতা দেখছি না। সমন্বয়ক নাম ভাঙিয়ে ক্যাম্পাসে ক্যাম্পাসে হল দখলদারির অভিযোগ উঠছে।
চাঁদাবাজির অভিযোগও উঠছে এদের বিরুদ্ধে। সব কিছু বিবেচনা করে আমি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক পদ থেকে পদত্যাগ করছি।’
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আমি মাসুদ রানা। ২০২৪-এর কোটা সংস্কার আন্দোলনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক হিসেবে শুরু থেকেই সব আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে এসেছি।
সরকারি চাকরিতে কোটা নামক বৈষম্যের বিরুদ্ধে আন্দোলনের সূত্রপাত হয় এ বছরের জুন মাসে এবং এই আন্দোলন জুলাইয়ের শুরু থেকে ক্রমান্বয়ে সারা বাংলাদেশে ছড়িয়ে পড়ে। তারই ধারাবাহিকতায় জবির লাইব্রেরিতে পড়ুয়াদের হাত ধরে এই আন্দোলনের সূচনা হয়। আমিও এতে সরাসরি অংশগ্রহণ করি। সার্বক্ষণিক ক্যাম্পাসে অবস্থান করে সিনিয়র-জুনিয়র সবার সঙ্গে আলোচনা করে আন্দোলন যেন গতি পায়, সেই কাজ করেছি। তার পর থেকে একটা প্রগ্রামও আমি মিস করিনি।
এমনকি সকলকে সাথে নিয়ে প্রগ্রামগুলোতে উপস্থিতি বাড়ানোর সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি।’
মাসুদ আরো বলেন, ‘জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ১৯ জুলাই কারফিউ চলাকালীন সময়ে আমি আর নূর নবী দুজন মিলে ক্যাম্পাসের গেটের সামনে থেকে পুলিশকে সরিয়ে আমরা প্রগ্রাম করতে চাইলে পুলিশ নূর নবীকে গ্রেপ্তার করে। কবি নজরুল সরকারি কলেজের গেটের সামনে একত্রিত হয়ে স্লোগান দিতে থাকি আমরা। শুরু হয় পুলিশের গুলিবর্ষণ। লক্ষ্মীবাজারে এলাকাবাসীর সহযোগিতায় সেদিন পুলিশকে রুখে দিতে হাজারো মানুষ লড়াই করি। সেখানে আমাদের কয়েকজন ভাই শাহাদাতবরণ করেন। কেন্দ্রীয় সমন্বয়করা ৫ আগস্ট ঢাকা ঘেরাও কর্মসূচি দিলে হাসিনা বাংলাদেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়। গঠিত হয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। যারা এখনো ছাত্র-জনতার সহযোগিতায় বেশ সফলতার সাথে দেশ পরিচালনা করছে।’
Discussion about this post