নিজস্ব প্রতিবেদক
হাসিনা সরকারের পতন হয়েছে তার অত্যাচারের কারণে। এমন লজ্জাজনক পতন বাংলাদেশের ইতিহাসে কোনো প্রধানমন্ত্রী কিংবা সরকারপ্রধানের হয়নি। আগামীতেও এমন ঘটনার অবতারণা বাংলাদেশের মাটিতে হবে না বলে মন্তব্য করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ও জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সারজিস আলম।
মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) বিকেলে নীলফামারীর সৈয়দপুরে মহান বিজয় দিবস ও জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থান উপলক্ষে আয়োজিত মতবিনিময় সভা ও চিত্রাঙ্কন, কবিতা আবৃত্তি ও রচনা প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
সারজিস আলম বলেন, হাসিনা সরকারের পতন হয়েছে তার অত্যাচারের কারণে। এমন লজ্জাজনক পতন বাংলাদেশের ইতিহাসে কোনো প্রধানমন্ত্রী কিংবা সরকার প্রধানের হয়নি। আগামীতেও আর এমন ঘটনার অবতারণা বাংলাদেশের মাটিতে হবে না। গত ১৫ ডিসেম্বর গুম কমিশনের একটি রিপোর্ট এসেছে সেখানে বলা হয়েছে, যারা হাসিনা রেজিমের বিরোধিতা করেছে, তাদের গুম করা হয়েছে। টর্চার সেলে নিয়ে নির্যাতনের মাধ্যমে গুম করা হয়। এমন অসংখ্য মানুষের নির্যাতনের ঘটনা ওই রিপোর্টে উঠে এসেছে।
এতোদিন মহান বিজয় দিবস ছিল আওয়ামী লীগের বিজয় দিবস। বিজয় দিবসে শুধুমাত্র দুটি গান বাজতো, যা আপনারা সবাই জানেন। বিজয় দিবস, স্বাধীনতা, সংবিধান ও রাষ্ট্র কারো কোনো একক দল, ব্যক্তি কিংবা পরিবারের হতে পারে না। কিন্তু ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকার এসব নিজের পারিবারিক সম্পদ মনে করেছিল।
বিজয় দিবস, স্বাধীনতা, সংবিধান ও রাষ্ট্র কারো কোনো একক দল, ব্যক্তি কিংবা পরিবারের হতে পারে না উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, গত ১৬ বছরে আমরা কেউ এসবের বিরুদ্ধে কথা বলতে পারিনি। যারাই এসবের বিপক্ষে কথা বলেছেন তাদের গুম, খুন ও হত্যা করা হয়েছে। এমন কি মামলা, হামলা ও নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে।
ছাত্র আন্দোলনের এই সমন্বয়ক বলেন, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ মহান বিজয় দিবসকে পারিবারিক সম্পদে পরিণত করেছিল। মহান বিজয় দিবস ছিল আওয়ামী লীগের বিজয় দিবস। এই দিবসে শুধু দুটি গান বাজানো হতো, যা আপনারা সবাই জানেন।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব কেড়ে নিতে ভারত গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। তাদের দোসর আওয়ামী লীগকে পুনরায় ক্ষমতায় বসাতে উঠে পড়ে লেগেছে। তাই দেশের জনগণ একবিন্দু রক্ত থাকতে ভারতের সকল ষড়যন্ত্র প্রতিহত করে যাবে।
সারজিস আলম বলেন, আগামী দিনে আমাদের লড়াই হবে কঠিন ও দীর্ঘ সময়ের। ভারতের তাঁবেদারি বাংলাদেশের জনগণ করে না এবং আগামীতেও করবে না।
শহরের বিমানবন্দর সড়কের অফিসার্স কলোনি ফাইভ স্টার মাঠে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সৈয়দপুরের উদ্যোগে এ মতবিনিময় সভা ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে অনেকের মধ্যে বক্তব্য দেন সৈয়দপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নুর-ই-আলম সিদ্দিকী, বিএনপি সৈয়দপুর রাজনৈতিক জেলা শাখার সভাপতি অধ্যক্ষ মো. আব্দুল গফুর সরকার ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সহ-সমন্বয়ক মো. রেদোয়ান ইসলাম।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সৈয়দপুরের সদস্য জাবেদ আত্তারীর সভাপতিত্বে এসময় মঞ্চে সৈয়দপুর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আমিনুল ইসলাম, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সৈয়দপুরের নিহত সাজ্জাদ হোসেনের বাবা মাওলানা মো. আলমগীর হোসেন, জামায়াতে ইসলামী সৈয়দপুর পৌর শাখার আমির মো. শরফুদ্দিন খানসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
Discussion about this post