স্পোর্টস ডেস্ক
গেল বিপিএলে গতির ঝড় তুলে দৃশ্যপটে এসেছিলেন নাহিদ রানা। এরপর থেকে একটা বছর কেটে গেছে। এখন তো আন্তর্জাতিক ক্রিকেটও জানে নাহিদ রানা কে!
ঘণ্টায় ১৪০-১৪৫ কিমি গতির বল করাটা তার অভ্যাস আগে থেকেই ছিল। এখন শুধু সে গতিই নয়, তার নিয়ন্ত্রণও জানেন ৬.৫ ফুট উচ্চতার নাহিদ। তার আগুনে বোলিং এখন তাই কাঁপন ধরিয়ে দেয় রথী মহারথীদের বুকে। এখন যেমন দিচ্ছে ইংল্যান্ডের বিশ্বজয়ী ক্রিকেটার অ্যালেক্স হেলসকে!
দুজন একই দলে খেলছেন। তাই মাঠের খেলায় প্রতিপক্ষ হিসেবে রানাকে খেলার ‘দুর্ভাগ্য’ হয়নি হেলসের। তবে অনুশীলন সেশনে তো তাকে খেলার সুযোগ আসেই! হেলস জানালেন, সেটাও তিনি কাজে লাগাতে চান না।
কেন? তার জবাবটা তিনি সম্প্রতি দিয়েছেন এক সাক্ষাতকারে। তিনি বলেন, ‘আমি অনুশীলন সেশনে তাকে মোটেও খেলতে চাই না। সে তার বল আমার জন্য অনেক জোরে হয়ে যায়।’
রানা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পরিচিতি পেয়ে যাওয়ার আগেই অবশ্য হেলসের বেশ পরিচিত। দুজন যে আগের বিপিএলেও খেলেছেন একই দলে। গেল বছর রানা যখন গতি দিয়ে শিরোনাম কেড়ে নিচ্ছিলেন খুলনা টাইগার্সের হয়ে, তখন একই দলে ছিলেন হেলসও।
সে সময়ের স্মৃতি রোমন্থন করে হেলস বলেন, ‘গেল বছর আমি আর সে যখন খুলনা টাইগার্সে খেলেছি, তখন আমি তাকে নেটে খেলতে পারতাম। তবে এখন আমি অনেক বুড়ো হয়ে গেছি। এখন নেটে স্রেফ থ্রোয়ার নিয়েই অনুশীলন করি।’
নাহিদ রানা শেষ এক বছরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষিক্ত হয়েছেন। এরপর টেস্টে তিনি খাবি খাইয়েছেন বাবর আজম, বিরাট কোহলিদের মতো ব্যাটারদের। ৬ টেস্টে ১১ ইনিংসে তুলে নিয়েছেন ২০ উইকেট। ওয়ানডেতে ৩ ম্যাচে তুলে নিয়েছেন ৪ উইকেট। টি-টোয়েন্টিতে তিনি দলে ডাক পেলেও অভিষেক হয়নি তার।
ভারত সফরে গতি দিয়ে কেড়ে নিয়েছিলেন সেখানকার সংবাদ মাধ্যমের নজর। ক্যারিয়ারের শুরুতেই দারুণ একটা ‘ফিয়ার ফ্যাক্টর’ যোগ হয়ে গেছে তার নামের পাশে।
তবে সেসব পেয়ে নাহিদ ভেসে যাননি একেবারেই। তার প্রমাণ এবারের বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে। প্রথম ম্যাচে দারুণ বোলিং করেও উইকেট পাননি, ৩ ওভারে ১১ রান দিয়েছিলেন তিনি। পরের দুই ম্যাচে তিনি তুলে নিয়েছেন ৬ উইকেট।
এমন পারফর্ম করে কোচেরও নজর কেড়েছেন তিনি। রংপুরের কোচ মিকি আর্থার বলেন, ‘নাহিদ রানা বিশেষ কিছু। বাংলাদেশ থেকে একটা এমন গতিসম্পন্ন বোলার উঠে আসছে, বিষয়টা অসাধারণ। সে অনেক ভালো বোলার। আমার বিশ্বাস, সে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অনেক দূর যাবে।’
বিশ্বজয়ী হেলসের সমীহ, বিশ্বনন্দিত কোচ মিকি আর্থারের এমন বিশ্বাসকে নিশ্চয়ই বৃথা যেতে দিতে চাইবেন না নাহিদ। এমন কিছুর চাওয়া তো বাংলাদেশ ক্রিকেটেরও!
Discussion about this post