স্বাস্থ্য ডেস্ক
অনেকেই শরীরে বাসা বেঁধেছে অতিরিক্ত কোলেস্টেরল। যা ডেকে আনতে পারে মৃত্যুও। মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যেই কীভাবে বশে আনবেন কোলেস্টেরল? এমন এক ডায়েটের কথা এই প্রতিবেদনে জানুন, যা মেনে চললে শরীর থেকে একেবারে গলে বের হবে শিরা-ধমনীতে জমে থাকা বদ কোলেস্টেরল।
উচ্চ কোলেস্টেরল অনেক রোগের সঙ্গে যুক্ত। বিশেষ করে যদি এলডিএল কোলেস্টেরল বাড়ে, তাহলে হৃদরোগজনিত সমস্যা দেখা দিতে পারে। তবে, কোলেস্টেরল ওষুধ এবং জীবনযাত্রার পরিবর্তনের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
সুস্থ থাকার জন্য কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। উচ্চ কোলেস্টেরল অনেক রোগের সঙ্গে জড়িত। বিশেষ করে যদি এলডিএল কোলেস্টেরল বাড়ে, তাহলে হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ে।
কোলেস্টেরল ওষুধ এবং জীবনযাত্রার পরিবর্তনের মাধ্যমে কমানো যেতে পারে। তবে ডায়েটও একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এক সপ্তাহে কোলেস্টেরলের মাত্রা কম দেখতে চাইলে, আপনার খাদ্যতালিকায় কিছু খাবার অন্তর্ভুক্ত করলেই যথেষ্ট। আসুন দেখি, সেগুলো কী কী।
ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার
আপনার খাদ্যতালিকায় ফাইবার সমৃদ্ধ ফল ও সবজি অবশ্যই অন্তর্ভুক্ত করুন। আপেল, নাশপাতি, রাজমা এবং স্প্রাউটসের মতো জিনিস চেষ্টা করতে পারেন। এগুলোর ফাইবার রক্তে জমে থাকা কোলেস্টেরল দূর করতে সহায়তা করে। এগুলো সঠিক পরিমাণে এবং সঠিক উপায়ে খেলে তাৎক্ষণিক ফলাফল দেখা যাবে।
ওটস
ওটসে থাকা বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান হৃদপিণ্ডের জন্য উপকারী। সকালের নাস্তায় এটি খেলে শরীরে জমে থাকা খারাপ কোলেস্টেরল কমে যায়। এতে থাকা দ্রবণীয় ফাইবার কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে।
লেবু পানি
চিকিৎসা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, লেবুর পানি কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে কার্যকর। তাই এটি খাদ্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার পরামর্শ দেওয়া হয়। বিশেষ করে খাবারের পর লেবুর পানি পান করলে রক্তনালীগুলোতে জমে থাকা ট্রাইগ্লিসারাইড পুরোপুরি দূর হয়।
বাদাম ও বীজ
ডায়েটে বাদাম, কাজু, ওয়ালনাটস-এর মতো জিনিস যোগ করতে হবে। এগুলোতে হেলদি ফ্যাটস বেশি থাকে। এগুলো এলডিএল কোলেস্টেরল কমায়। ওয়ালনাটসে থাকা ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডস হৃদয়ের জন্য খুব ভালো।
ডালজাতীয় খাদ্য
বিন, মসুর, ছোলা এবং মটরশুটি প্রোটিন ও ফাইবারে সমৃদ্ধ। ফাইবার কোলেস্টেরলের সাথে বন্ধন তৈরি করে এবং এটিকে রক্তে প্রবেশ করতে বাধা দেয়। এটি কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে।
অলিভ অয়েল
অলিভ অয়েল আপনার প্রধান ফ্যাট উৎস হওয়া উচিত। এটি মনোআনস্যাচুরেটেড ফ্যাটে সমৃদ্ধ। এগুলো এলডিএল কোলেস্টেরল কমায় এবং হৃদরোগের ঝুঁকি হ্রাস করে। রান্নায় এই তেল ব্যবহার করা বা সালাদ ও সবজির উপর ছিটিয়ে ব্যবহার করলে স্বাস্থ্যকর কোলেস্টেরল প্রোফাইল বজায় থাকে।
অ্যাভোকাডো
অ্যাভোকাডোও মনোআনস্যাচুরেটেড ফ্যাটে সমৃদ্ধ, যা এলডিএল কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে। অ্যাভোকাডোতে প্রচুর ফাইবার, পটাসিয়াম এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে। দৈনিক খাদ্যতালিকায় আধা থেকে এক অ্যাভোকাডো যোগ করলে মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমতে পারে।
গ্রিন টি
গ্রিন টিতে ক্যাটেকিন নামক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে। এটি এলডিএল কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে। প্রতিদিন গ্রিন টি পান করার অনেক উপকারিতা আছে। এটি বিশেষত হৃদপিণ্ডের স্বাস্থ্যের জন্য খুব ভালো।
এর পাশাপাশি করণীয় বিষয়সমূহ
এই খাবারের সঙ্গে আপনাকে অবশ্যই প্রতিদিন ব্যায়াম করতে হবে এবং আপনার ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। মানসিক চাপ কমানোর জন্য বিভিন্ন স্ট্রেস ম্যানেজমেন্ট পদ্ধতি অনুসরণ করা উচিত।
শুধুমাত্র ডায়েটের মাধ্যমে কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়, এটি একটি ভুল ধারণা। সঠিক কোলেস্টেরল প্রোফাইল বজায় রাখতে খাদ্যাভ্যাসের পাশাপাশি জীবনযাত্রার আরও পরিবর্তন প্রয়োজন।
Discussion about this post