স্পোর্টস ডেস্ক
লোকাল ক্রিকেটার নিয়েই শক্তিশালী রংপুরকে উড়িয়ে দিয়েছে রাজশাহী। চট্টগ্রাম পর্বের শেষ ম্যাচে শক্তিশালী রংপুর রাইডার্সকে হারিয়ে প্রশংসায় ভাসছে রাজশাহীর ক্রিকেটাররা।
দুই দিন বিরতির ঢাকার পর্বের প্রথম দিনে আবারও রংপুরের মুখোমুখি হয়েছিল দলটি। রংপুরের সামনে ছিল প্রতিশোধ নেওয়ার কঠিন সুযোগ। কারণ, এই ম্যাচে রাজশাহীর স্কোয়াডে ছিল কোনো বিদেশি ক্রিকেটাররা। পেমেন্ট না পাওয়ায় রংপুর ম্যাচ বয়কট করেছেন হারিস-রায়ান বার্লরা। তাই লোকাল ক্রিকেটারদের নিয়েই মাঠে নামতে হয়েছিল রাজশাহীকে।
দলটির ভিতরের অবস্থা যখন এমন, তখন নিশ্চিতভাবেই রংপুর এগিয়েছিল। কিন্তু তাসকিন-বিজয়রা যা করে দেখালো তা রীতিমতো চমকই বলা যায়। লোকাল ক্রিকেটার নিয়েই শক্তিশালী রংপুরকে উড়িয়ে দিয়েছে। এই ম্যাচে রংপুরকে ২ রানে হারিয়েছে রাজশাহী। এতে টেবিল টপার দলটির বিপক্ষে টানা দুই জয় পেল তাসকিনরা।
রোববার (২৬ জানুয়ারি) আগে ব্যাট করতে নেমে রংপুরকে ১২০ রানের লক্ষ্য দিয়েছিল রাজশাহী। জবাব দিতে নেমে নির্ধারিত ওভারে ১১৭ রান তুলতে পারে রংপুর। এতে ২ রানের জয় পায় রাজশাহী। এতে ৫ জয়ে ১০ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের চারে উঠে এসেছে রাজশাহী।
মামুলি লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে রংপুর। দলীয় ৪৯ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে বসে টেবিল টপাররা। ইনিংসের প্রথম ওভারেই সাজঘরে ফেরেন স্টিভেন টেইলর। ৩ বলে শূন্য রান করে তাকে সঙ্গে দেন সাইফ হাসান। এরপর সৌম্য সরকার (৮), শেখ মাহেদী (০) এবং নুরুল হাসানকে ফিরিয়ে রংপুর শিবিরে কাঁপন ধরান মিত্যুঞ্জয় চৌধুরী।
তবে এক প্রান্ত আগলে রাখার চেষ্টা করেন ইফতেখার আহমেদ। কিন্তু বেশিক্ষণ তা চালিয়ে যেতে পারেননি তিনি। ২০ বলে ১৪ রান করে ক্যাচ আউট হন তিনি। ১৮ বলে ১০ রান করে তাকে সঙ্গ দেন স্বদেশি খুশদিল শাহ। এতে ৪৯ রানে ৭ উইকেট হারায় দলটি।
এরপর রংপুর শিবিরে হাল ধরার চেষ্টা করেন সাইফউদ্দিন। শেষ ১২ বলে রংপুরের লক্ষ্য দাঁড়ায় ৩৭ রান। রংপুরকে আশা দেখাতে থাকেন সাইফউদ্দিন ও রাকিবুল হাসান। তাসকিনের প্রথম ৩ বলে ৮ রান তুললেও চতুর্থ বলে লেগ বিফোরে কাটা পড়েন রকিবুল। ৬ বলে রংপুরের প্রয়োজন ছিল ২৫ রান।
শেষ ওভারে জিশানকে বোলিংয়ে আনেন অধিনায়ক তাসকিন। প্রথম দুই বলেই ছক্কা হজম করেন তিনি। তবে পরের দুই বলে ডট দেন সাইফউদ্দিন। শেষ দুই বলে ১০ রান তুললেও হার এড়াতে পারেনি রংপুর। ২ রানের হার নিয়ে মাঠ ছাড়ে তারা। ৩১ বলে ৫২ রান করে অপরাজিত ছিলেন সাইফউদ্দিন।
দুর্বার রাজশাহীর হয়ে সর্বোচ্চ ৪ উইকেট শিকার করেন মিত্যুঞ্জয় চৌধুরী। এ ছাড়াও তাসকিন আহমেদ ও মোহর শেখ দুটি করে উইকেট নেন।
এর আগে টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালো করতে নেমে রাজশাহী। ৩ বলে ২ রান করে সাজঘরে ফেরেন ওপেনার জিশান আলম। ১৩ বলে ১১ রান করে তাকে সঙ্গে দেন আরেক ওপেনার সাব্বির হোসেন। চারে ব্যাট করতে নেমে ১০ বলে ১০ রান করেন মিত্যুঞ্জয় চৌধুরী।
এদিন ব্যাট হাতে আলো ছড়াতে পারেননি এনামুল হক বিজয়ও। ১৬ বলে ১৩ রান করেন তিনি। এরপর এসএম মেহরব (৭) এবং ৩ রান করে ইয়াসির আউট হলে দলীয় ৫৬ রানে ৬ উইকেট হারায় রাজশাহী। এরপর দলের হাল ধরার চেষ্টা করেন আকবর আলী। কিন্তু মিজানুর রহমান ৫ রান করে আউট হলে তাকে সঙ্গ দেন আকবর আলী (১৯)।
শেষ দিকে ৮ বলে ১৩ রান করে তাসকিন আউট হলেও সানজামুলের ২৯ বলের অপরাজিত ২৮ রানে ভর করে ৯ উইকেট হারিয়ে ১১৯ রানের লড়াকু পুঁজি পেয়েছিল রাজশাহী।
এদিকে, বিপিএলে রাকিবুল হাসানকে এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে ফেলে এককভাবে চূড়ায় উঠে গেলেন তাসকিন। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) এক মৌসুমে সর্বোচ্চ সংখ্যক উইকেট শিকারের রেকর্ড এখন তার।
রোববার মিরপুরে টেইলরকে আউট করে তাসকিন পান চলমান আসরের ২৩তম উইকেট। এরপর রাকিবুলকে বিদায় করে ২৪তম শিকার ধরে শীর্ষে পৌঁছে যান তিনি। বিপিএলের এক আসরে সর্বোচ্চ উইকেটের নজির এটি। ১১ ম্যাচ খেলেই তাসকিন টপকে গেলেন আগের রেকর্ডকে। বিপিএলের ২০১৯ সালের আসরে বাঁহাতি অলরাউন্ডার সাকিব পেয়েছিলেন ২৩ উইকেট। তিনি সেবার ঢাকা ডায়নামাইটসের পক্ষে খেলেছিলেন ১৫ ম্যাচ।
Discussion about this post