আন্তর্জাতিক ডেস্ক
বিদ্রোহীদের সশস্ত্র আক্রমণের মুখে পালিয়ে যাওয়া সিরিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের অনুগত যোদ্ধাদের সঙ্গে দেশটির বর্তমান প্রশাসনের নিরাপত্তা বাহিনীর ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। এতে নিহত হয়েছেন অন্তত ৪১ জন।
নিহতদের মধ্যে সরকারি বাহিনীর ১৩ জন সৈন্য রয়েছেন। সংঘর্ষের পর লাতাকিয়া প্রদেশে কারফিউ জারি করা হয়েছে। শুক্রবার (৭ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, দামেস্কের নতুন সরকারের প্রতি অনুগত সিরিয়ার নিরাপত্তা বাহিনী দেশটির উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের একটি উপকূলীয় এলাকায় ক্ষমতাচ্যুত আসাদ সরকারের অবশিষ্টাংশের সাথে তীব্র লড়াইয়ে লিপ্ত হয়েছে।
রাষ্ট্রীয় টিভির খবরে বলা হয়েছে, লাতাকিয়া প্রদেশে রাশিয়া-নিয়ন্ত্রিত একটি বিমানঘাঁটির কাছে সংঘর্ষে কমপক্ষে ১৩ জন সৈন্য নিহত হয়েছেন। পরে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত সেখানে কারফিউ ঘোষণা করা হয়েছে। গত বছরের ডিসেম্বরে বাশার আল-আসাদের পতনের পর থেকে সিরিয়ার ইসলামপন্থি সরকারের অনুগত বাহিনীর ওপর এটিই সবচেয়ে সহিংস হামলা।
আলাউইট সম্প্রদায়ের প্রাণকেন্দ্র এবং আসাদ পরিবারের শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত উপকূলীয় অঞ্চলে সংঘর্ষ অব্যাহত রয়েছে। আলাউইট কর্মীরা জানিয়েছেন, আসাদের পতনের পর থেকে তাদের সম্প্রদায় সহিংসতা এবং আক্রমণের শিকার হয়েছে, বিশেষ করে হোমস এবং লাতাকিয়ার প্রত্যন্ত এলাকায়।
রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা সানা জানিয়েছে, সংঘর্ষের ঘটনার পর “বিশাল সামরিক শক্তি বৃদ্ধি করে” সরকারি সৈন্যরা জাবলেহ শহরের দিকে যাচ্ছে।
এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে সিরিয়া-ভিত্তিক স্টেপ সংবাদ সংস্থা জানিয়েছে, সরকার-সমর্থিত বাহিনী “প্রায় ৭০” আসাদ অনুগত সাবেক সরকারি যোদ্ধাকে হত্যা করেছে এবং জাবলেহ ও তার আশপাশের এলাকা থেকে ২৫ জনেরও বেশি যোদ্ধাকে আটক করা হয়েছে।
তবে পর্যবেক্ষকদের বরাত দিয়ে বার্তাসংস্থা এএফপি জানিয়েছে, সংঘর্ষের ঘটনায় আসাদের প্রতি অনুগত ২৮ জন বন্দুকধারী নিহত হয়েছে। এছাড়া সরকারি বাহিনী লক্ষ্যবস্তুতে আক্রমণ করার জন্য হেলিকপ্টার ব্যবহার করছে বলেও জানানো হয়েছে। তবে বিবিসি স্বাধীনভাবে এসব পরিসংখ্যান যাচাই করতে পারেনি।
সিরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র কর্নেল হাসান আব্দুল গনি রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের মাধ্যমে আসাদের অনুগতদের প্রতি একটি সতর্কবার্তা জারি করেছেন।
তিনি বলেছেন, “হাজার হাজার মানুষ তাদের অস্ত্র সমর্পণ করে তাদের পরিবারের কাছে ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, আবার কেউ কেউ খুনি ও অপরাধীদের রক্ষায় পালিয়ে গিয়ে মৃত্যুর মুখোমুখি হতে জোর দিচ্ছে। তাদের এই পছন্দটি স্পষ্ট: অস্ত্র জমা দিন অথবা অনিবার্য পরিণতির মুখোমুখি হোন।”
সিরিয়ার অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারার জন্য দেশের এই অঞ্চলটি একটি বড় নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তিনি দেশের দক্ষিণেও প্রতিরোধের মুখোমুখি হচ্ছেন। সাম্প্রতিক দিনগুলোতে সেখানে ড্রুজ বাহিনীর সাথে নিরাপত্তা বাহিনীর সংঘর্ষ হয়েছে।
Discussion about this post