লাইফস্টাইল ডেস্ক
বয়স বাড়লে উচ্চ রক্তচাপ বাড়ে। এখন অল্প বয়সেও অনেকেরই উচ্চ রক্তচাপ দেখা দেয়। তাই সঠিক সময়ে নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে এই রোগ। না হলে শরীর ও স্বাস্থ্যের হাল বিগড়ে যেতে সময় লাগবে না। তবে মনে রাখবেন, নিয়মিত যদি পালংশাককে ডায়েটে জায়গা করে দিতে পারেন, তাহলেই অনায়াসে এই রোগকে কন্ট্রোলে রাখা সম্ভব হবে।
ব্লাড প্রেশার একটি ক্রনিক অসুখ। এই রোগকে বশে না রাখলেই বড় বিপদ! সেক্ষেত্রে হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক থেকে শুরু করে একাধিক জটিল রোগের ফাঁদে পড়ার আশঙ্কা বাড়ে। তাই যেভাবেই হোক হাই প্রেশারকে বশে রাখতে হবে। আর এই কাজে সাফল্য পেতে চাইলে সবার প্রথমে কাঁচা লবণ এবং লবণ সমৃদ্ধ যেকোনও খাবারের থেকে বাড়িয়ে নিন দূরত্ব। এমনকি খাওয়া চলবে না ফাস্টফুড। তার বদলে নিয়মিত ডায়েটে রাখুন পালংশাক। তাতেই ব্লাড প্রেশার বশে থাকবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ।
পুষ্টির ভাণ্ডার পালং শাক
সারা পৃথিবীর প্রথম সারির সব পুষ্টিবিজ্ঞানীরা পালংশাকের প্রশংসা করেন। তাদের কথায়, এতে রয়েছে ভিটামিন কে, ভিটামিন এ, ফোলেট, ম্যাঙ্গানিজ, ভিটামিন সি, ম্যাগনেশিয়াম, রাইবোফ্লাভিন, আয়রন, ভিটামিন ই, কপার, পটাশিয়াম, ভিটামিন বি৬ থেকে শুরু করে একাধিক জরুরি ভিটামিন ও খনিজ। শুধু তাই নয়, এতে অত্যন্ত উপকারী কিছু অ্যান্টিঅক্সিডেন্টও রয়েছে। যেই কারণে নিয়মিত এই শাক খেলে শরীরে প্রদাহ কমে। দূরে থাকে একাধিক ঘাতক সমস্যা। তাই আপনার রোজের ডায়েটে অবশ্যই পালংশাককে জায়গা করে দিতে পারেন।
কমবে ব্লাড প্রেশার
বিশেষজ্ঞরা জানালেন, এই শাকে রয়েছে পটাশিয়ামের ভাণ্ডার। আর এই উপাদান রক্তনালীকে শান্ত করে এবং ব্লাড প্রেশার কমায়। শুধু তাই নয়, পটাশিয়ামের গুণে প্রস্রাবের মাধ্যমে শরীরে উপস্থিত অত্যধিক সোডিয়ামও বাইরে বেরিয়ে যায়। যার দরুন কমে ব্লাড প্রেশার।
এখানেই শেষ নয়, এতে উপস্থিত ম্যাগনেশিয়াম, ফোলেট এবং একটি বি ভিটামিন নাইট্রিক অক্সাইড তৈরিতে সাহায্য করে। সেই কারণেও কমে যায় ব্লাড প্রেশার। তাই হাই ব্লাড প্রেশারের রোগীরা নিয়মিত এই সবজি খেতে ভুলবেন না যেন।
শাক
কতটা খাবেন?
একজন সুস্থ মানুষ দিনে মোটামুটি ৫০ গ্রাম পালংশাক খেতে পারেন। আর বর্ষায় এই শাক রান্নার সময় তা আগে ভালো করে পরিষ্কার করে নিন। কোনও জায়গা নষ্ট হয়ে গিয়ে থাকলে তা বাদ দিয়ে দিন। তারপর ভালো করে সেদ্ধ করে রাঁধুন। তাতেই ব্লাড প্রেশারকে অনায়াসে বশে রাখতে পারবেন।
তবে শুধু হাইপারটেনশন কন্ট্রোলই নয়, এর পাশাপাশি একাধিক সমস্যাকে বাগে আনে এই শাক। আসুন সেই দিকে ঝটপট নজর দেওয়া যাক…
ব্রেন থাকবে সুস্থ-সবল
আজকাল বয়স একটু বাড়লেই পিছু নিচ্ছে অ্যালঝাইমার্সের মতো জটিল অসুখ। তবে ভালো খবর হলো, আপনি যদি নিয়মিত এই শাক খান, তাহলে অনায়াসে এই সমস্যা প্রতিরোধ করতে পারবেন। কারণ, এই শাকে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ফোলেট এবং ফাইলোকুইনোনের মতো কিছু উপকারী উপাদান। আর এসব উপাদানের গুণে সুরক্ষিত থাকে মস্তিষ্কের কোষগুলো। যার ফলে কাছে ঘেঁষতে পারে না অ্যালঝাইমার্সের মতো জটিল সব অসুখ। তাই স্মৃতির হাল পোক্ত করতে চাইলে নিয়মিত পালংশাক খেতে ভুলবেন না যেন।
কোষ্ঠকাঠিন্য কমবে
আপনি কি নিয়মিত কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যায় ভোগেন? কিছুতেই সকাল সকাল পেট পরিষ্কার হতে চায় না? সেক্ষেত্রে ওষুধ ছাড়ুন, তার বদলে রোজ খান পালংশাক। কারণ, এতে রয়েছে ফাইবারের ভাণ্ডার। আর এই উপাদান অন্ত্রে মলের গতিবিধি বাড়ায়। যার দরুন পেট পরিষ্কার হতে সময় লাগে না। এছাড়াও নিয়মিত এই শাক খেলে দূরে থাকে গ্যাসট্রাইটিসের মতো সমস্যা। তাই চেষ্টা করুন নিয়মিত পালংশাক খাওয়ার।
চোখের জন্য সেরার সেরা
এই শাকে মজুত রয়েছে জিয়াজ্যানথিন নামক একটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। আর এই উপাদান চোখের জন্য অত্যন্ত উপকারী। বিশেষত, বয়সজনিত চোখের সমস্যা দূর করার কাজে এর জুড়ি মেলা ভার। যেই কারণে নিয়মিত পালংশাক খেলে ছানির মতো সমস্যা দূরে থাকে। এর পাশাপাশি বছর বছর পাওয়ার বাড়ার আশঙ্কাও এক ধাক্কায় অনেকটাই কমে যায়।
Discussion about this post