নিজস্ব প্রতিবেদক
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নারীদের পেটানোর একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। এতে দেখা যাচ্ছে, রাস্তার ফুটপাতে এক পুরুষ সবুজ রঙের একটি রড নিয়ে হাঁটতে হাঁটতে একের পর এক নারীকে তাড়া করছেন আর পেটাচ্ছেন। সেখানে তিনি এই নারীদের ‘যৌনকর্মী’ ‘শিশু পাচারকারী’ ‘ছিনতাইকারী’ বলে উল্লেখ করেছেন।
ভিডিওতে একের পর এক নারীকে তাড়া করে পেটানোর পর ওই ব্যক্তি উপস্থিত জনতার উদ্দেশে বলছেন, ‘আপনারা কাপুরুষ, আপনারা যদি প্রতিহত না করতে পারেন, তাইলে আপনারা কাপুরুষ। এখানে আমরা হিরো হইতে আসি নাই, এরা খুব জ্বালায়, আমরা ফ্যামিলি নিয়ে হাঁটতে পারি না। আমার বাসা এখানে। এই এলাকায় ছিনতাইকারীর অভাব নাই। আপনারা প্লিজ এই চোর-ছিনতাইকারী, রাস্তার মহিলাদেরকে প্রতিহত করুন, প্লিজ।’
এ সময় ভিডিও-অডিওতে শোনা যায়, উপস্থিত জনতা উল্লাস করে তাকে হাততালি দিয়ে অভিবাদন জানাচ্ছেন।
এদিকে আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা এএফপির বাংলাদেশের ফ্যাক্ট-চেকবিষয়ক সম্পাদক কদরুদ্দিন শিশির তার ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, ‘যৌনকর্মী, শিশু পাচারকারী’ অভিযোগ দিয়ে রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা নারীদেরকে লাঠি দিয়ে (সম্ভবত স্টিলের পাইপ) সাপের মতো পেটাচ্ছে। ওই নারীরা দৌড়ে জান বাঁচাতে পারছেন না। রাস্তায় পড়ে গেছেন এক নারী। এরপরও পেটাচ্ছে তাকে। তিনি পায়ে ধরে মাফ চাচ্ছেন। ঢাকার শ্যামলীতে এমন ঘটনা অন্তত দুই দিন (তার ফেসবুকে অন্তত দুইটি ভিডিও পোস্ট করেছে) ঘটিয়েছে এবং সেসবের ভিডিও রেকর্ড করে ফেসবুকে পোস্ট করেছে।’
ভিডিওটির বিষভয়ে মানবাধিকারকর্মীরা বলছেন, যাদের এভাবে পেটানো হলো, এটা স্পষ্টতই মানবাধিকার লঙ্ঘন। যাদের পেটানো হচ্ছে, সেই নারীরা যদি অপরাধীও হয়, তাও এভাবে আইন হাতে তুলে নিয়ে, তাদের কোনোভাবে আঘাত করার অধিকার কারোর থাকতে পারে না। দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অন্যদিকে যাওয়ার শঙ্কাও বোধ করছেন তারা।
জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের উপপরিচালক রবিউল ইসলাম বলেন, ‘দেশে সরকার আছে, আইন আছে। আইন হাতে তুলে নেওয়া অপরাধ। যে বা যারা ঘটনাটি ঘটিয়েছেন, তারা অন্যায় করেছেন। যাদের শারীরিকভাবে হেনস্তা করা হয়েছে, সেটা স্পষ্ট মানবাধিকার লঙ্ঘন। এর বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।’
Discussion about this post