নিজস্ব প্রতিবেদক
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শেখ হাসিনা নেতৃত্বাধীন সরকারের পতনের পর নানা কারণে আলোচনা-সমালোচনায় এসেছিলেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) সাবেক ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী আশিকুর রহমান। সরকার পতনের পর গত ১৫ আগস্ট বরখাস্ত হয়েছিলেন তিনি। সেই সাময়িক বরখাস্তের আদেশ প্রত্যাহার করে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।
শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এর আগে ক্ষমতার রদবদলের পর বিএনপির নেতা-কর্মীদের তোপের মুখে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেন প্রকৌশলী আশিকুর রহমান। পরবর্তীতে নানান অভিযোগে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করে দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)।
অব্যাহতির বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, আশিকুর রহমান, অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী, বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন তাকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন, কর্মচারী চাকরি বিধিমালা, ২০১৯ এর বিধি ৫৫ (১) অনুসারে গত ১৫ আগস্ট জারিকৃত দপ্তর আদেশমূলে চাকরি থেকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। তার সাময়িক বরখাস্তের আদেশ প্রত্যাহারপূর্বক অভিযোগের দায় থেকে তাকে অব্যাহতি প্রদান করা হলো।
প্রসঙ্গত, ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর আশিকুর রহমানকে অপসারণের দাবিতে আন্দোলনে নামেন সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। এমন পরিস্থিতিতে গত ১৩ আগস্ট স্বেচ্ছায় অবসর গ্রহণের আবেদন করেন তিনি। সেই আবেদন গৃহীত হয়নি। দায়িত্ব পালনে অবহেলা, অসদাচরণ, অদক্ষতা ও দুর্নীতির অভিযোগের গুরুদণ্ডে দণ্ডনীয় অপরাধের কথা উল্লেখ করে পরদিন তাকে করপোরেশন থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। পাশাপাশি এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আসা অভিযোগের বিষয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
এর মধ্যে গত ২ সেপ্টেম্বর প্রকৌশলী আশিকুর রহমানকে নিয়ে নগর ভবনে আসেন বিএনপির কয়েকশ’ নেতাকর্মী। জানা যায়, তারা সবাই ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেনের অনুসারী। নেতৃত্বে ছিলেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবদলের সাবেক সদস্য মুকিতুল হাসান রঞ্জু, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক নেতা মেহেদী হাসান লিটু, শ্রমিক দলের আরিফুজ্জামান প্রিন্স প্রমুখ।
দুর্নীতির অভিযোগে বরখাস্ত এই প্রকৌশলী সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কার্যালয়ের পরিচালক ছিলেন বলে খবর পাওয়া গেছে। এছাড়া, শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানার অত্যন্ত আস্থাভাজন ছিলেন তিনি। ৫ আগস্টের আগমুহূর্ত পর্যন্ত আওয়ামী লীগের প্রভাবে নগরভবনে তিনি একক আধিপত্য বিস্তার করতেন। তার বিরুদ্ধে মেয়র হানিফ ফ্লাইওভার নির্মাণ প্রকল্প, সিটি সেন্টার নির্মাণ প্রকল্পে অনিয়ম, করপোরেশনে নিয়োগ বাণিজ্যসহ নানা অভিযোগ রয়েছে।
Discussion about this post