নিজস্ব প্রতিবেদক
টানা ৮৩ দিন বন্ধ থাকার পর অবশেষে শুরু হলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ক্লাস-পরীক্ষাসহ নিয়মিত একাডেমিক কার্যক্রম।রোববার (২২ সেপ্টেম্বর) সকাল ৮টা থেকেই অনেক বিভাগের ক্লাস শুরু হয়। এদিন সব বিভাগের ক্লাস শুরু না হলেও কলা অনুষদ, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ, আইন অনুষদ, বিজ্ঞান অনুষদ, ফার্মেসি অনুষদ, জীববিজ্ঞান অনুষদসহ ইনস্টিটিউটগুলোর বেশির ভাগই ক্লাস কার্যক্রম শুরু করেছে।
দীর্ঘদিন পর একাডেমিক কার্যক্রম শুরু হওয়ায় প্রাণচাঞ্চল্য ফিরেছে ক্যাম্পাসে। আবারও দেখা যাচ্ছে সেই চিরচেনা ক্লাসের ফাঁকে বটতলার আড্ডা এবং ভিসি চত্বর ও কার্জন হল এলাকায় দোতলা লাল বাসের দীর্ঘ সারি।
শিক্ষার্থীরা বলছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ পড়াশোনা, গবেষণা। কিন্তু এতদিন সেটা ছাড়া বাকি সবই ছিল। এখন এটা শুরু হওয়ায় স্বস্তি।
শিক্ষার্থী ফারজানা আক্তার বলেন, এতদিনে আমি যে ছাত্রী সেটাই ভুলতে বসেছিলাম। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার কারণে আমাদের সেশনজটসহ আরও নানা চিন্তার উদ্রেক হয়েছে। আমরা আশা করি দ্রুতই সব স্বাভাবিক হবে। পাশাপাশি সেশনজট কাটিয়ে উঠতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কার্যকর পদক্ষেপ নেবে।
তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আবু বকর বলেন, কতদিন পর সবাই একসঙ্গে হয়েছি। সবার আন্দোলন-সংগ্রামের অভিজ্ঞতার কথা শুনছি। বেশ ভালোই লাগছে। কতদিন পড়াশোনা থেকে পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন ছিলাম। আবারও সেই ক্যাম্পাসের চিরচেনা রূপ ফিরে পেয়ে ভালো লাগছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে সবসময় স্বাভাবিক পড়াশোনার পরিবেশ বজায় থাকুক। এতটুকুই আমাদের চাওয়া।
ক্লাস শুরুর ব্যাপারে উপউপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সায়মা হক বিদিশা বলেন, আমাদের ক্লাস শুরু হয়ে গেছে। উপাচার্যসহ আমরা বেশ কয়েকটি অনুষদে ঘুরেও দেখলাম ক্লাস কার্যক্রম। এর আগে সকাল সাড়ে ৯টায় জুলাই বিপ্লবে শহীদদের স্বরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়েছে। খুব দ্রুতই আমাদের নতুন শিক্ষাবর্ষের ক্লাসও আমরা শুরু করে দেবো।
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবির আন্দোলন এবং শিক্ষকদের সর্বজনীন পেনশন কাঠামোর একটি স্কিম নিয়ে ডাকা কর্মসূচির কারণে কার্যত গত ১ জুলাই থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রম প্রায় বন্ধ ছিল। যদিও আনুষ্ঠানিকভাবে ১৭ জুলাই থেকে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল। এরপর সরকার পতনের দাবিতে ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থান শুরু হয়। গণ-অভ্যুত্থানের মুখে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতন হয়। এরপর গত ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। একপর্যায়ে আগের উপাচার্য পদত্যাগ করেন। পরে নতুন উপাচার্য নিয়োগ হয়। দুজন সহউপাচার্যও নিয়োগ হয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ৭ আগস্ট থেকেই হলে উঠতে শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীরা হলে উঠলেও ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ ছিল।
Discussion about this post