নিজস্ব প্রতিবেদক
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
ক্লিনটন ইনিশিয়েটিভের (সিজিআই) অনুষ্ঠানের মঞ্চে বক্তব্যের এক পর্যায়ে তিনি তার সফরসঙ্গীদের মধ্যে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের নেতৃত্বদানকারীদের ডেকে নেন। এ সময় মঞ্চে ওঠেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও ড. ইউনূসের বিশেষ সহকারী মাহফুজ আলম, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আয়েশা সিদ্দিকা তিথি ও আরেক তরুণ।
ওই তরুণকে নিয়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকে তাকে আওয়ামী লীগ সংশ্লিষ্ট হিসেবে দাবি করেছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ছবিতে তাকে দেখা গেছে সদ্য পতন হওয়া আওয়ামী লীগ সরকারের স্থানীয় সরকার মন্ত্রী তাজুল ইসলামের সঙ্গে। এবার বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন মঞ্চে থাকা ওই তরুণ জাহিন রোহান রাজিন।
তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমি অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ পেয়েছিলাম সিজিআই ফেলো হিসেবে। ড. ইউনূস ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দকে যখন ডাকলেন, তখন আমি দর্শকসারিতে ছিলাম। পাশে ছিলেন দুই বিদেশি ভদ্রলোক। তারা আমাকে বললেন, তুমি বাংলাদেশি তরুণ, তুমিও যাও। তাই আমি কিছু না ভেবেই স্টেজে উঠে গেছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘২০২১ সালের ইউনূস অ্যান্ড ইয়ুথ ফেলো আমি। আমার প্রতিষ্ঠান হাইড্রোকো প্লাসের কাজ এগিয়ে নিতে আমি ড. ইউনূসের সঙ্গে দেখা করতে চাচ্ছিলাম। নিউইয়র্কে সিজিআইয়ের অনুষ্ঠানে তিনি আসবেন শুনে খুশি হয়েছিলাম এ কারণে যে, তার কাছাকাছি যাওয়ার সুযোগ হবে।’
সাবেক মন্ত্রী তাজুলের সঙ্গে ছবি ছড়ানো প্রসঙ্গে জাহিন বলেন, ‘২০২২ সালে ঢাকা ওয়াসার সঙ্গে একটা কাজ করে হাইড্রোকো প্লাস। সে কাজের জন্যই মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে হয়েছিল। সেসময় তোলা ছবিটি। এটি কীভাবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এলো, তা জানি না। আন্দোলনের সময় দেশেই ছিলাম। এ আন্দোলন সমর্থন না করার প্রশ্নই আসে না।’
বিষয়টি নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে জানানো হয়, তৃতীয় তরুণ জাহিন রোহান রাজিন। তিনি হাইড্রোকো প্লাসেরর প্রতিষ্ঠাতা। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের কেউ নন তিনি। পরে মাহফুজ আলম ফেসবুকে অনুষ্ঠানের মঞ্চে ওঠা তৃতীয় তরুণকে অনুপ্রবেশকারী বা ‘ইনট্রুডার’ বলে উল্লেখ করেন। তিনি লিখেছেন, ওই ব্যক্তি অনুপ্রবেশকারী এবং অসৎ। তিনি নিজ ব্যবস্থাপনায় এ আয়োজনে যোগ দেন।
মাহফুজ আলম বলেন, তার উপস্থিতি ও উদ্দেশ্য সম্পর্কে জানতাম না আমরা। তিনি ডেলিগেশন দলের সঙ্গেও যোগাযোগ করেননি। স্যার যখন আমাদের মঞ্চে ডাকেন, তিনি তড়িঘড়ি করে আমাদের আগে মঞ্চের দিকে ছুটে যান। সন্দেহ হলেও তার মঞ্চে যাওয়া আমি আটকাতে পারিনি। বিশ্বনেতা ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের জন্য অসহায় বোধ করছিলাম। মনে হচ্ছে, এটি ছিল ফ্যাসিবাদী গোষ্ঠীর পূর্বপরিকল্পিত কাজ। আমি আন্দোলন ও গণঅভ্যুত্থানের নেতা, সমন্বয়কারী ও যোদ্ধাদের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী। ভবিষ্যতে আরও সতর্ক থাকবেন বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
Discussion about this post