নিজস্ব প্রতিবেদক
ঢাকা শহরের ট্রাফিক ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণে ও শৃঙ্খলা আনতে পুলিশের সঙ্গে কাজ করতে আনুষ্ঠানিকভাবে সম্পৃক্ত হচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। প্রাথমিক অবস্থায় ৩০০ শিক্ষার্থী এই কাজে যুক্ত হচ্ছেন। পরবর্তী সময়ে এই সংখ্যা আরও বাড়বে। আর এ জন্য শিক্ষার্থীদের সম্মানীও দেওয়া হবে।
সোমবার (২১ অক্টোবর) রাজারবাগ পুলিশ লাইনসে ডিএমপি ট্রাফিক পক্ষ-২০২৪ উদ্বোধনের সময় প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী এ কথা জানান।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, এই ট্রাফিক পক্ষে এবং এরপরেও আমাদের সঙ্গে ছাত্র ভাইয়েরা থাকছেন। প্রথম অবস্থায় ৩০০ জন ছাত্র আমাদের সঙ্গে কাজ করবেন। পরে এ সংখ্যা আরও বাড়ানো হবে। তাদের আমরা একটা সম্মানী দেব, এ সম্মানীর পরিমাণটা এখানে বলতে চাইছি না। একটা রিজনেবল সম্মানী তাদের দেব। আপনারা দেখেছেন ৫ আগস্টের পরে তারা রাস্তায় ভালো কাজ করেছে। এখন আমাদের সঙ্গে যদি তারা কাজ করে হয়তো রাস্তার পরিস্থিতি কিছুটা ভালো হবে।
তিনি বলেন, বর্তমানে প্রায় ২ কোটিরও বেশি মানুষ এ শহরে বসবাস করে। রাস্তা অপ্রতুল হওয়ায় যানবাহনের ধারণক্ষমতা কম। ঢাকায় যে পরিমাণ রাস্তা থাকা দরকার বাস্তবে তা নেই। জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে মানুষের ঢাকামুখিতাও কমানো যাচ্ছে না। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন, অবকাঠামো বৃদ্ধি পেলেও পরিবহন ব্যবস্থার আধুনিকায়ন ও শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করা যায়নি। মূল সড়কে জনগণের জন্য সরকারি ও বেসরকারিভাবে আরামদায়ক যানবাহন উল্লেখযোগ্যভাবে দেওয়া সম্ভব হয়নি।
তিনি আরও বলেন, পাশাপাশি একই সড়কে রিকশা ঠেলাগাড়িসহ অসংখ্য অযান্ত্রিক যানবাহন চলাচল করে। মানুষ তার প্রয়োজনে এসব যানবাহনের দ্বারস্থ হচ্ছে। ফলে ঢাকা মহানগরীতে সুশৃঙ্খল ট্রাফিক ব্যবস্থা বাস্তবায়ন কঠিনতর হচ্ছে। অন্যদিকে সময়ে সময়ে বিভিন্ন দাবি দাওয়ার কারণে সড়কে শৃঙ্খলা ভেঙে যাচ্ছে এবং বৈধ-অবৈধ যানবাহনের আধিক্যের কারণে যানজট দিন দিন অসহনীয় পর্যায়ে চলে যাচ্ছে।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, বৈধ-অবৈধ যানবাহনের আধিক্যের কারণে যানজট দিন দিন অসহনীয় পর্যায়ে চলে যাচ্ছে। সরকারি ও বেসরকারি সংস্থাকে সম্পৃক্ত করে ট্রাফিক ব্যবস্থা উন্নয়নে বর্তমান সরকার কাজ করছে। শুধু সরকার কিংবা পুলিশের মাধ্যমে কাজ করে ঢাকার ট্রাফিক ব্যবস্থার আশানুরূপ উন্নয়ন সম্ভব নয়। এ জন্য প্রয়োজন নগরে বসবাসকারী প্রত্যেকটি জনগণের সস্পৃক্ত করা।
ট্রাফিক শৃঙ্খলাকে কাঙ্ক্ষিত পর্যায়ে আনার জন্য ছাত্র-জনতাসহ নগরের জনসাধারণকে সচেতন ও সম্পৃক্তকরণের মাধ্যমে নগরের ট্রাফিক শৃঙ্খলা উন্নয়ন সম্ভব। এ লক্ষ্য সামনে রেখে ডিএমপি ২১ অক্টোবর থেকে ৪ নভেম্বর পর্যন্ত পক্ষকালব্যপী একটি কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
তিনি বলেন, এ কর্মসূচির মাধ্যমে ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগের কাজে যেমন গতিশীল হবে, তেমনি ঢাকার ট্রাফিক ব্যবস্থা উন্নয়ন ঘটার মাধ্যমে জনভোগান্তি অনেক কমে আসবে।
ট্রাফিক পক্ষ উপলক্ষে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ কর্তৃক চালক, যাত্রী ও পথচারীদের মাঝে লিফলেট বিতরণ; ট্রাফিক সাইন সম্পর্কে ধারণা প্রদান; সড়ক পরিবহন আইন সম্পর্কে জনসচেতনতা বৃদ্ধি; দর্শনীয় স্থানে ব্যানার স্থাপন; ট্রাফিক সচেতনতামূলক ভিডিও প্রদর্শন; শ্রমিক ও বাস মালিক প্রতিনিধি এবং বিভিন্ন স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ও শিক্ষকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা আয়োজন; রোভার স্কাউট, রেড ক্রিসেন্ট, গার্লস গাইড, বিএনসিসি সদস্য ও বিভিন্ন স্কুল-কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের অংশগ্রহণে জনসচেতনতামূলক নানা কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে।
Discussion about this post