নিজস্ব প্রতিবেদক
কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের দানবাক্সগুলোতে এবার ২৮ বস্তা টাকা পাওয়া গেছে। সেসব টাকা এখন গণনা করা হচ্ছে। পাঁচ ঘণ্টা গণনা শেষে ৪ কোটি ৬১ লাখ টাকা পাওয়া গেছে। গণনার কাজ শেষ হলে মোট কত টাকা পাওয়া গেছে তা জানানো হবে।
শনিবার (১৭ আগস্ট) বিকেল ৩টায় রূপালী ব্যাংক কিশোরগঞ্জ শাখার সহকারী মহাব্যবস্থাপক (এজিএম) রফিকুল ইসলাম এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তরিকুল ইসলাম, লে. কর্নেল রিয়াজুল করিম, জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) এটিএম ফরহাদসহ প্রশাসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও পুলিশের উপস্থিতিতে দানবাক্স বা সিন্দুকগুলো খোলা হয়। ৯টি দানবাক্সে এবার রেকর্ড ২৮ বস্তা টাকা পাওয়া যায়।
টাকা গণনার কাজে কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) রুবেল মাহমুদ,অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) এটিএম ফরহাদ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) কাজী মহুয়া মমতাজ, রূপালী ব্যাংকের সহকারী মহাব্যবস্থাপক (এজিএম) রফিকুল ইসলাম, মাদ্রাসার ১৪৫ জন ছাত্র, ঐতিহ্যবাহী জামিয়া এমদাদিয়া মাদ্রাসার ১১৩ জন ছাত্রসহ ব্যাংকের ৭০ জন কর্মকর্তা অংশ নেন। এ ছাড়া মসজিদ কমিটির ১৫ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ২০ জন সদস্য অংশ নিয়েছেন।
জানা গেছে, পাগলা মসজিদের সিন্দুক খুললে প্রতিবারই কোটি কোটি টাকা পাওয়া যায়। দিন যত যাচ্ছে তত দানের অর্থ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর আগে সর্বশেষ গত ২০ এপ্রিল পাগলা মসজিদের ৯টি দানবাক্স খোলা হয়েছিল। তখন রেকর্ড ৭ কোটি ৭৮ লাখ ৬৭ হাজার ৫৩৭ টাকা পাওয়া যায়। যা অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে নতুন রেকর্ড সৃষ্টি করেছিল। এ ছাড়া দানবাক্সে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা ও স্বর্ণালংকারও পাওয়া যায়।
পাগলা মসজিদের দানবাক্স থেকে পাওয়া এসব অর্থ এই মসজিদ ছাড়াও জেলার অন্যান্য মসজিদ, মাদরাসা ও এতিমখানায় ব্যয় করা হয়। পাশাপাশি বিভিন্ন সমাজকল্যাণমূলক কাজেও ব্যয় করা হয় এই অর্থ।
করোনাকালে রোগীদের সেবায় নিয়োজিত শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ৮০ জন স্বেচ্ছাসেবককে অনুদান দেওয়া হয়েছিল এ দানের টাকা থেকে।
কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক ও মসজিদ কমিটির সভাপতি আবুল কালাম আজাদ বলেন, ১১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে আন্তর্জাতিক মানের দৃষ্টিনন্দন ইসলামিক কমপ্লেক্স ও মসজিদ নির্মাণের প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। যা বাস্তবায়নে প্রাথমিক কর্মকাণ্ড চলমান। শিগগিরই আনুষ্ঠানিকভাবে কাজ শুরু হবে। যার নাম হবে ‘পাগলা মসজিদ ইসলামিক কমপ্লেক্স’। সেখানে ৩০ হাজার মুসল্লি একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারবেন। এবার দানের টাকা ৮ কোটিরও বেশি হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
Discussion about this post