স্বাস্থ্য ডেস্ক
হার্ট অ্যাটাককে ঘিরে কম-বেশি সবার মনেই আতঙ্ক বিরাজ করে। আচমকা বুকে ব্যথা, পুরো শরীর ঘামানো আর এরপরই চোখের সামনে সব অন্ধকার হয়ে যাওয়া। ইদানীং কমবয়সীরাও হৃদরোগে শিকার হচ্ছেন।
অনেকেই জানেন না, হৃদরোগের লক্ষণ নারী ও পুরুষের আলাদা হয়। চিকিৎসকদের মতে, সাম্প্রতিক সময়ে কেবল পুরুষরা নন, নারীরাও ভুগছেন হার্টের সমস্যায়।
কেন নারীদের হৃদরোগের হার বাড়ছে?
চিকিৎসকদের মতে, অতিরিক্ত শারীরিক পরিশ্রম, ঠিকমতো পুষ্টিকর খাবার না খাওয়ার কারণে বাড়ছে হৃদরোগের ঝুঁকি। ঋতুবন্ধের পরে শরীরের যে যত্ন নিতে হয়, তা অনেক নারীই নেন না। ফলে চুপিসারে হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ছে নারীদেরও। ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর)-এর সমীক্ষা বলছে, ৪০ শতাংশ নারীর মৃত্যুর কারণ হৃদরোগ। আর এর নেপথ্যে রয়েছে ধূমপান, অ্যালকোহলের নেশা, জীবনযাপনে অসংযম।
হার্ট অ্যাটাকের আরেকটি বড় কারণ স্থূলতা। চিকিৎসকের মতে, ২০২২ সাল অবধি সমীক্ষার তথ্য বলছে, প্রায় ৪ কোটির বেশি ভারতীয় নারীরা স্থূলত্বের শিকার। ছোট থেকেই ‘মেটাবলিক সিনড্রোম’-এর শিকার হচ্ছেন নারীরা, যা পরবর্তীতে উচ্চ রক্তচাপ, টাইপ ২ ডায়াবেটিসের কারণও হয়ে উঠছে। সেসঙ্গে বাড়ছে রক্তে কোলেস্টেরল, ট্রাইগ্লিসারাইড এবং হৃদরোগের আশঙ্কা।
বিগত কয়েক দশক ধরে নারীদের মধ্যে অনিয়মিত ঋতুস্রাবের সমস্যা বহুগুণে বেড়েছে। দেখা যাচ্ছে, নির্দিষ্ট সময়ের আগেই ঋতুবন্ধ হচ্ছে অনেকের। আবার ৯ বছর বয়স হতে না হতেই শুরু হতে যাচ্ছে ঋতুস্রাবও। এর কারণই হলো হরমোনের তারতম্য। যা প্রভাব ফেলছে হার্টের ওপরেও।
যেসব লক্ষণ এড়িয়ে যাবেন না
কাঁধে ব্যথা
বাঁ কাঁধ আর হাতে প্রচণ্ড ব্যথা হলে তা আর্থ্রাইটিসের কারণে না-ও হতে পারে। যদি একটানা ব্যথা হয় তাহলে সতর্ক থাকুন।
শ্বাসকষ্ট ও ক্লান্তি
ঘন ঘন শ্বাসের সমস্যা, অল্পেই ক্লান্তি, বুক ধড়ফড় করার মতো লক্ষণগুলো হার্টের রোগের ইঙ্গিত হতে পারে।
অতিরিক্ত ঘাম হওয়া
অতিরিক্ত ঘাম হওয়া হৃদরোগের পূর্বলক্ষণ হতে পারে। রাতে ঘুমালে অতিরিক্ত ঘাম হলে, বুক ধড়ফড় করলে, হঠাৎ শরীর খারাপ লাগতে শুরু করলে অবশ্যই চিকিৎসকের কাছে যান।
কাশি
ঠান্ডা না লাগলেও প্রচণ্ড কাশি, কফের সঙ্গে রক্ত বের হলে সাবধান হতে হবে। এটিও হৃদরোগের লক্ষণ হতে পারে।
মাথাব্যথা
প্রতিদিন প্রচণ্ড মাথা যন্ত্রণায় ভোগেন? এর কারণ মাইগ্রেন না-ও হতে পারে। এমন সমস্যা হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
মাঝেমধ্যেই যদি জ্ঞান হারান, তাহলে সাবধান হয়ে যান। ইসিজি, চেস্ট এক্স রে করিয়ে নিন।
হৃৎস্পন্দন অনিয়মিত হয়ে যেতে পারে। নাড়ির গতি ওঠানামা করতে পারে। হঠাৎ করেই দমবন্ধ লাগতে পারে। এধরনের লক্ষণ ভুলেও এড়িয়ে যাবেন না। দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
Discussion about this post