লিভার শরীরের সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। এই অঙ্গটি খাবার হজমে সাহায্যকারী উৎসেচক তৈরি করে। শরীর থেকে টক্সিন বের করে দেয়। বিপাকের হার নিয়ন্ত্রণ করে। এছাড়াও একাধিক জরুরি কাজে বিশেষ ভূমিকা পালন করে এই অঙ্গটি। তাই সুস্থ থাকতে চাইলে লিভারের দিকে নজর ফেরাতেই হবে।
তবে মুশকিল হল, আমাদের ভুলে ভরা খাদ্যাভ্যাসের কারণে যকৃতের বেজে যাচ্ছে বারোটা। এই অঙ্গে জমছে কিছু ক্ষতিকর উপাদান। আর এই কারণে পিছু নিতে পারে একাধিক জটিল অসুখ।
তাই পরিস্থিতি জটিল দিকে মোড় নেওয়ার আগেই সাবধান হন। আর সেই কাজে আপনাকে সাহায্য করতে পারে কয়েকটি খাবার। সেই সব খাবার সম্পর্কে জেনে নিন।
শাক খান
শস্য-শ্যামলা বাংলায় শাকের কোনও অভাব নেই। তাই বাজার থেকে রোজ তরতাজা শাক কিনে এনে আয়েস করে খান। এই কাজটা করলেই লিভার থেকে বেরিয়ে যাবে টক্সিন।
আসলে আমাদের পরিচিত সব শাকে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের ভাণ্ডার। এমনকি এগুলিতে ভরে ভরে ভিটামিন সি রয়েছে। আর এসব উপাদান সরাসরি লিভারের হাল ফেরাতে সাহায্য করে। শুধু তাই নয়, এতে মজুত ফাইবারের গুণে ফ্যাটি লিভারের মতো অসুখের থেকেও দূরে থাকা যায়। তাই আপনার রোজের ডায়েটে অবশ্যই শাককে জায়গা করে দিন।
ক্রুসিফেরাস সবজির তুলনা নেই
ব্রকোলি, বাঁধাকপি, ফুলকপি হল ক্রুসিফেরাস সবজির মধ্যে অন্যতম। আর এসব সবজি লিভারের হাল ফেরানোর কাজে সিদ্ধহস্ত। কারণ, এগুলোতে রয়েছে গ্লুটাথিওন নামক একটি উপাদান। আর এই উপাদান লিভার থেকে ক্ষতিকর পদার্থ বের করে দেওয়ার ক্ষমতা রাখে। যেই কারণে বিশেষজ্ঞরা নিয়মিত এই ধরনের সবজি খাওয়ার পরামর্শ দেন। তবে অনেকের আবার এসব সবজি খেলে গ্যাস, অ্যাসিডিটি হয়। তারা ভুলেও এই ধরনের সবজি বেশি পরিমাণে খাবেন না। তাতে শরীরের হালই বিগড়ে যাবে।
মাছের শরণাপন্ন হন
বাঙালি মানেই মাছের প্রেমে পাগল। আর এই অকৃত্রিম ভালোবাসা কিন্তু শরীরের উপকারই করে। আসলে আমাদের পরিচিত প্রায় সব মাছেই রয়েছে উপকারী ফ্যাট। আর এই উপাদান লিভার সহ গোটা শরীরে ইনফ্লামেশন বা প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। শুধু তাই নয়, এই ফ্যাটের গুণে লিভারে ফ্যাট বা অন্যান্য ক্ষতিকর পদার্থ জমতে পারে না। তাই আপনার রোজের ডায়েটে অবশ্যই মাছকে জায়গা করে দিতে হবে। তাতেই উপকার মিলবে হাতেনাতে।
রসুনের উপর রাখুন ভরসা
লিভারের হাল ফেরাতে ভরসা রাখতে পারেন রসুনের উপর। কারণ, এই ভেষজতে উপস্থিত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যকৃতের প্রদাহ কমায়। সেই সঙ্গে এই অঙ্গ থেকে ক্ষতিকর উপাদান বের করে দেয়।
এক্ষেত্রে প্রতিদিন একটা করে ছোট রসুনের কোয়া চিবিয়ে খেয়ে নিন। আর এভাবে খেতে না চাইলে তা জল দিয়ে গিলে নিতেও পারেন। এই কাজটা করলেই লিভারের স্বাস্থ্যের হাল ফিরবে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
ফলই মহৌষধি
রোজের ডায়েটে একটা করে ফল রাখা বাঞ্ছনীয়। কারণ, আমাদের পরিচিত সব ফলই অত্যন্ত উপকারী কিছু অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের ভাণ্ডার। এমনকি এগুলিতে জরুরি ভিটামিন ও ফাইবার রয়েছে। যেই কারণে নিয়মিত ফল খেলে দেহে পুষ্টির ঘাটতি মিটিয়ে ফেলা যায়। সেই সঙ্গে লিভার থেকে বেরিয়ে যায় ক্ষতিকর উপাদান। তাই নিজের পছন্দ মতো রোজ একটা ফল খেতে ভুলবেন না যেন!
Discussion about this post