নিজস্ব প্রতিবেদক
সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরোয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যা মামলায় কারাগারে থাকা একাত্তর টেলিভিশনের সাবেক প্রধান প্রতিবেদক ফারজানা রুপাকে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার (১১ মার্চ) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এম এ আজহারুল ইসলাম এ আদেশ দেন।
সাগর-রুনি হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআইয়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আজিজুল হক গত ২৭ ফেব্রুয়ারি তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদলতে আবেদন করেন। ৪ মার্চ ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এম এ আজহারুল ইসলাম তদন্ত কর্মকর্তার আবেদন মঞ্জুর করে তাদের জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি প্রদান করেন। এ মামলায় প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আগামী ১৫ এপ্রিল দিন ধার্য রয়েছে।
আবেদনে বলা হয়েছে, সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যা মামলার ঘটনার সময়ে ফারজানা রুপা এটিএন বাংলা টেলিভিশনে রিপোর্টার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। রুনির সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল এবং পারিবারিকভাবে ঘনিষ্ঠতা ও যাতায়াত ছিল। হত্যাকাণ্ডটি নিয়ে তিনি টেলিভিশনে রিপোর্ট করেন মর্মে জানা যায়। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে এ হত্যা মামলার রহস্য উদ্ঘাটনে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
আলোচিত এ হত্যা মামলায় রুনির বন্ধু তানভীর রহমানসহ মোট আসামি আটজন। অন্য আসামিরা হলেন- বাড়ির নিরাপত্তারক্ষী এনাম আহমেদ ওরফে হুমায়ুন কবির, রফিকুল ইসলাম, বকুল মিয়া, মিন্টু ওরফে বারগিরা মিন্টু ওরফে মাসুম মিন্টু, কামরুল হাসান অরুণ, পলাশ রুদ্র পাল ও আবু সাঈদ। আসামিদের প্রত্যেককে একাধিকবার রিমান্ডে নেওয়া হলেও তাদের কেউই স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেননি।
২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাতে ঢাকার পশ্চিম রাজাবাজারে মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক সাগর সারোয়ার ও এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মেহেরুন রুনি নিজেদের ভাড়া বাসায় নির্মমভাবে খুন হন। পরদিন ভোরে তাদের ক্ষতবিক্ষত লাশ উদ্ধার করা হয়।
এরপর নিহত রুনির ভাই নওশের আলম রোমান রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। প্রথমে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ছিলেন ওই থানার এক এসআই। চার দিন পর চাঞ্চল্যকর এ হত্যা মামলার তদন্তভার ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কাছে হস্তান্তর করা হয়। দুই মাসেরও বেশি সময় তদন্ত করে রহস্য উদ্ঘাটনে ব্যর্থ হয় ডিবি। পরে হাইকোর্টের নির্দেশে একই বছরের ১৮ এপ্রিল হত্যা মামলাটির তদন্তভার র্যাবের কাছে হস্তান্তর করা হয়। সেই থেকে দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও এখনও মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে পারেনি সংস্থাটি।
এদিকে গত বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর এ হত্যা মামলার তদন্তের দায়িত্ব র্যাব থেকে সরিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে গঠিত একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন টাস্কফোর্সের মাধ্যমে তদন্তের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।
বিষয়টি নিয়ে শুনানিতে হাইকোর্ট বলেন, আশা করি এবার ন্যায়বিচার নিশ্চিত হবে এবং তদন্তের জন্য দেওয়া এবারের ছয় মাস মানে ছয় মাস।
Discussion about this post