স্বাস্থ্য ডেস্ক
কোষ্ঠকাঠিন্য একটি যন্ত্রণাদায়ক ও বিরক্তিকর সমস্যা। রমজানে এই সমস্যার প্রবণতা বেড়ে যায়। অনেক রোজদারই এই সমস্যায় ভোগেন। সাবধানতা অবলম্বন না করলে কোষ্ঠকাঠিন্যের কারণে মলত্যাগের সময় রক্তপাত হতে পারে। যা পরবর্তীতে পাইলস ও অ্যানাল ফিসারের মতো জটিল সমস্যার কারণ হতে পারে।
রোজায় কোষ্ঠকাঠিন্য বাড়ে কেন?
রমজানে আমাদের খাদ্যাভ্যাসে বড় ধরনের পরিবর্তন হয়। সাহরিতে অনেকেই শাক-সবজি খেতে চান। ভাজা-ভুনা তরকারি খান। আবার ইফতারে খান ভাজাপোড়া খাবার। ফলে খাবারে ফাইবারের পরিমাণ অনেকটা কমে যায়।
অপর্যাপ্ত পানি পান, গরমে অধিক ঘামে সৃষ্ট হওয়া পানিশূন্যতা এবং দীর্ঘ ১৩ ঘণ্টা পানি পান করতে না পারার কারণে রমজানে কোষ্ঠকাঠিন্য বাড়ে। এছাড়াও হাইপোথাইরয়েডিজমের মতো কিছু রোগ; কিছু ওষুধ যা ক্যালসিয়াম, আয়রন, অ্যালুমিনিয়ামসমৃদ্ধ ইত্যাদি কোষ্ঠকাঠিন্যের প্রভাব বাড়িয়ে দিতে পারে।
রমজানে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা কমাতে করণীয়
ইফতারের পর থেকে সাহরি পর্যন্ত প্রচুর পরিমাণে বিশুদ্ধ পানি পান করুন। কারণ পানির অভাবেই এই সমস্যা বেশি হয়।
অধিক আঁশসমৃদ্ধ খাবার খান। খাদ্যতালিকায় রাখুন ঢেঁকিছাঁটা চাল, লাল আটা, গোটা শস্য, শাকসবজি ও ফলমূল।
চা-কফি যতটা সম্ভব কম খেতে হবে। এগুলো শরীর পানিশূন্য করে দেয়। পাশাপাশি অতিরিক্ত তেল-মসলাযুক্ত খাবার, চর্বিজাতীয় খাবার, ভাজাপোড়া, মাংস কম খেতে হবে।
ইফতারে অতিরিক্ত চিনিযুক্ত পানীয় বা শরবত না খাওয়াই ভালো। এর বদলে পানির পরিমাণ বেশি এমন ফল যেমন- তরমুজ, শসা, বাঙ্গি ইত্যাদি বেশি বেশি খেতে পারেন।
রমজানের খাদ্যতালিকায় রাখুন খেজুর। কারণ এটি কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধে সাহায্য করে।
আগে থেকেই যদি কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা থাকে তাহলে ইফতারে ইসবগুলের ভুসির শরবত খাওয়া যেতে পারে। এটি স্বাস্থ্যের জন্য বেশ উপকারী।
নিয়মিত কায়িক পরিশ্রম ও শরীরচর্চা করার চেষ্টা করুন। এগুলো কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে।
কোষ্ঠকাঠিন্যকে মোটেও অবহেলা করা উচিত নয়। সাধারণত যারা এই সমস্যায় ভোগেন তাদের পরবর্তীতে পাইলসসহ মলদ্বারের নানা সমস্যা হওয়ার আশঙ্কা থাকে। কারো যদি কোষ্ঠকাঠিন্যের পাশাপাশি মলত্যাগের আগে ও পরে রক্তপাত হয় কিংবা মলের সঙ্গে রক্তপাত হয়, মলত্যাগে ব্যথা অনুভব হয়, ওজন কমতে থাকে, তবে অবহেলা করবেন না। দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
Discussion about this post