নিজস্ব প্রতিবেদক
উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও অতি বৃষ্টিতে দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের জেলাগুলোতে ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছে। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে প্রায় ১০ লাখ পরিবার। বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টির পর এখন পর্যন্ত ১৮ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
শনিবার (২৪ আগস্ট) দুপুরে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণসচিব কামরুল হাসান এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, এ পর্যন্ত বন্যায় ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে চট্টগ্রামে ৫, কুমিল্লায় ৪, নোয়াখালীতে ৩, কক্সবাজারে ৩, লক্ষ্মীপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও ফেনীতে একজন করে মারা গেছেন।
তিনি আরও বলেন, বন্যাকবলিত এলাকায় নগদ ৩ কোটি ৫২ লাখ, শিশুখাদ্য বাবদ ৩৫ লাখ, গো-খাদ্য বাবদ ৩৫ লাখ টাকা বিতরণ করা হয়েছে। এ ছাড়া ২০ হাজার ১৫০ টন চাল ও ১৫ হাজার শুকনো খাবার দেওয়া হয়েছে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ২০ আগস্ট থেকে গতকাল পর্যন্ত দেশের ১১টি জেলা বন্যায় আক্রান্ত হয়েছে। সেগুলো হলো ফেনী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি, নোয়াখালী, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, সিলেট, লক্ষ্মীপুর ও কক্সবাজার। এসব জেলার ৭৭টি উপজেলা আক্রান্ত হয়েছে। মোট ৯ লাখ ৭৯ হাজার ৯০১টি পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত লোকের সংখ্যা ৫০ লাখ ৯৩ হাজার ৫৩০। চিকিৎসাসেবায় চালু রয়েছে ৭৬৯টি মেডিকেল টিম।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, দুর্গত এলাকায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য মোট ৩ হাজার ৫১৩টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এসব আশ্রয়কেন্দ্রে ৩ লাখ ১ হাজার ৯৯৩ জনকে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। বন্যা আক্রান্ত জেলাগুলোতে জেলা প্রশাসককে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক, সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, মেডিকেল টিম ও অন্য স্বেচ্ছাসেবকদের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করার প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এদিকে, চলমান বন্যার মধ্যেই দেশের কয়েকটি বিভাগে আগামী ৪৮ ঘণ্টা ভারী বর্ষণের পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। শনিবার রাতে আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, মৌসুমি বায়ুর অক্ষের বর্ধিতাংশ পাঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তর প্রদেশ, বিহার, পশ্চিম বঙ্গ ও বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চল হয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। এর একটি বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত। মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের ওপর মোটামুটি সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে মাঝারি থেকে প্রবল অবস্থায় রয়েছে।
এ অবস্থায় শনিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের অধিকাংশ জায়গায়; ঢাকা বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের কোথাও কোথাও ভারী বর্ষণ হতে পারে।
Discussion about this post