নিজস্ব প্রতিবেদক
অবশেষে দীর্ঘ ৪ ঘণ্টা পর স্বস্তি ফিরেছে রাজধানীর সায়েন্সল্যাবে। দুপুরে শুরু হওয়া ঢাকা কলেজ ও সিটি কলেজের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ বিকেল ৪টার পর থেমেছে। এরপর যানচলাচল শুরু হয়েছে মিরপুর সড়কে।
মঙ্গলবার দুপুর পৌনে ১২টার দিকে দুই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘাতের সূত্রপাত হয়। কয়েক দফা ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার পর মুহূর্তেই রণক্ষেত্রে পরিণত হয় পুরো এলাকা। এ সময় উভয় কলেজের বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হন।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং উভয় কলেজের শিক্ষকরা দফায়-দফায় চেষ্টা চালান। তাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় অবশেষে বিকেল ৪টায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) রমনা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মাসুদ আলম বলেন, গতকালের একটি ঘটনায় ভুল বোঝাবুঝির কারণে আজকের সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়েছে। গতকাল ঢাকা কলেজের একজন শিক্ষার্থীকে সায়েন্সল্যাব এলাকায় মারধর করা হয়েছে। ঢাকা কলেজ শিক্ষার্থীরা মনে করেছেন এর সঙ্গে সিটি কলেজের শিক্ষার্থীরা জড়িত। সেই ঘটনার জেরে আজকে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়েছে।
পুলিশের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, এখন পরিস্থিতি শান্ত। দুই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরাই তাদের ক্যাম্পাসে ফিরে গেছেন। আমরা তাদের সংঘর্ষ থেকে নিভৃত করেছি। তবে এখনই পুলিশ প্রটোকল উঠিয়ে নেওয়া হবে না। পরিস্থিতি পুরোপুরি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত পুরো এলাকাজুড়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা কাজ করে যাবেন।
সংঘর্ষের ঘটনায় বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্যও আহত হয়েছেন বলে জানান তিনি।
এদিকে ঢাকা সিটি কলেজে ভাঙচুরের অভিযোগ এনে দেশবাসী, পুলিশ, প্রশাসনের কাছে বিচার দাবি করেছেন ঢাকা সিটি কলেজের অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) এফ. এম. মোবারক হোসাইন।
তিনি বলেন, আজ হঠাৎ করেই এগারোটার সময় কিছু ছাত্র নামের সন্ত্রাসীরা ঢাকা সিটি কলেজে অতর্কিত হামলা করেছে। আমরা ওই হামলার নিন্দা জানাই এবং দেশবাসীর কাছে বিচার চাই। এই ধরনের ঘটনা কোনোভাবেই কাঙ্ক্ষিত নয়। গত রমজানের আগেও ঢাকা সিটি কলেজের স্থাপনার ওপর হামলা করা হয়েছিল। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, মাউশি, ঢাকা জেলা প্রশাসনসহ দায়িত্বশীলদের প্রতি আমাদের আহ্বান থাকলো আজ যারা হামলা করেছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করুন।
তিনি আরও বলেন, এই ধরনের ঘটনা যেন না ঘটে তার জন্য আমরা সর্বাত্মক ব্যবস্থা নিয়েছি। আমাদের সিটি কলেজ জাতীয় সম্পদ। আমরা সবসময় শিক্ষার্থীদের বলি, তোমরা ছাত্ররা সবাই ভাই-ভাই। গন্ডগোল করো না। মনোমালিন্য হতে পারে তবে এটাকে কেন্দ্র করে স্থাপনার ওপর হামলা কখনো কাম্য হতে পারে না। আমাদের ছাত্রসমাজের কাছে দায়িত্বশীল আচরণ প্রত্যাশা করি।
এদিকে সংঘাত এড়াতে আগামী ২ দিনের জন্য ঢাকা সিটি কলেজ বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) এই ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি বলেন, যেন আবারও কোনো খারাপ পরিস্থিতি তৈরি না হয় সেজন্য বুধবার ও বৃহস্পতিবার সব ক্লাস-পরিক্ষাসহ একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।
Discussion about this post