নিজস্ব প্রতিবেদক
ময়মনসিংহের ত্রিশালে অবস্থিত জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আওয়ামী লীগপন্থী শিক্ষক, কর্মকর্তা; নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের নেতাসহ ১৩০ জনের নামে জুলাই-আগস্ট আন্দোলনের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ার অভিযোগে মামলা হয়েছে। মামলায় আরও ৭০-৮০ জনকে অজ্ঞাতপরিচয় আসামি করা হয়েছে।
গতকাল রোববার ময়মনসিংহের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (দ্রুত বিচার) আদালতে এ মামলা করা হয়। কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সাবেক (প্রতিষ্ঠানকালীন) যুগ্ম আহ্বায়ক আশিকুর রহমান বাদী হয়ে মামলাটি করেছেন। বাদী আশিকুর ২০০৬-০৭ শিক্ষাবর্ষের বাংলা বিভাগের প্রাক্তন শিক্ষার্থী ছিলেন।
আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. আজমত আলী জানান, গতকাল মামলাটি হওয়ার পর আদালতের বিচারক মোছা. নাসিমা খাতুন শুনানি শেষে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার আরজি সূত্রে জানা যায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে গত বছরের ৩ আগস্ট ‘হাসিনায় আস্থা’ ব্যানারে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ-সমাবেশ করে আওয়ামীপন্থী শিক্ষক, কর্মকর্তা ও ছাত্রলীগ। ওই সমাবেশে তাঁরা শিক্ষার্থীদের আন্দোলন প্রতিহতের ঘোষণা দিয়ে ক্যাম্পাসে সশস্ত্র মহড়া দেন। এর পরদিন ‘মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচিতে যাওয়ার প্রস্তুতিকালে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে গুলি ও ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায় ছাত্রলীগ। এতে কমপক্ষে ১২ জন শিক্ষার্থী আহত হন। এ সময় আসামিরা বেশ কিছু মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি বাস ভাঙচুর করেন। এ ঘটনার জড়িত ব্যক্তিদের বিচারের আওতায় আনতে দেশের পরিবর্তিত পটভূমিতে মামলা করা হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়।
মামলার বাদী আশিকুর রহমান বলেন, ‘মামলার আবেদন করার পর আদালত পিবিআইকে তদন্তের জন্য আদেশ দিয়েছে। আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকারের কবল থেকে দেশ মুক্ত হয়েছে। ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা পালানোর প্রায় ৯ মাস পর দেশের পরিবর্তিত পটভূমিতে ন্যায়বিচার পেতে মামলা করেছি।’
মামলার উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন বঙ্গবন্ধু কর্মকর্তা পরিষদের সভাপতি ও সহকারী রেজিস্ট্রার জাকিবুল হাসান, বঙ্গবন্ধু কর্মকর্তা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও উপপরিচালক মাহমুদুল আহসান, প্রকৌশল শাখার প্রকল্প পরিচালক (পিডি) জোবায়ের হোসেন, অতিরিক্ত পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক আবদুল হালিম, সহকারী রেজিস্ট্রার ইব্রাহিম কবির, সহকারী রেজিস্ট্রার এনায়েত কবির, সহ–রেজিস্ট্রার রেবেকা সুলতানা, সংগীত বিভাগের অধ্যাপক মোশাররত শবনম, সহকারী অধ্যাপক হীরক মুশফিক, সহকারী অধ্যাপক তারিকুল ইসলাম, অধ্যাপক সেলিম আল মামুন, অধ্যাপক উজ্জ্বল কুমার, অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক নজরুল ইসলাম, লোক প্রশাসন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সঞ্জয় কুমার মুখার্জী, সহযোগী অধ্যাপক শফিকুল ইসলাম, সহকারী অধ্যাপক নাহিদুল ইসলাম, সহযোগী অধ্যাপক রেজুয়ান আহমেদ, মাসুদ রানা, অধ্যাপক মোল্লা আমিনুল, ফিন্যান্স বিভাগের অধ্যাপক তরিকুল ইসলাম, চারুকলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মাসুম হাওলাদার, নৃবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক জুয়েল মোল্লা, বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল ইসলাম, সাবেক সাধারণ সম্পাদক তারিকুল ইসলাম, সাবেক সভাপতি সাব্বির আহমেদ, সাবেক সভাপতি নজরুল ইসলাম, সাবেক সভাপতি আল মাহমুদ, সহসভাপতি জয় চক্রবর্তী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সজীব চন্দ্র দাস, আরাফাত রহমান সানি, সহসাধারণ সম্পাদক রিয়েল সরকার, বঙ্গবন্ধু পরিষদের উপদেষ্টা হুমায়ূন কবির প্রমুখ।
Discussion about this post