নিজস্ব প্রতিবেদক
রাজধানীতে কোরবানির পশুর হাটে আনুষ্ঠানিকভাবে বিক্রি শুরু হয়েছে। এবারের কোরবানি মৌসুমে মধ্যম ও ছোট মাপের দেশি গরুর চাহিদাই বেশি দেখা যাচ্ছে। তবে ক্রেতারা বলছেন, গরুর দাম অতিরিক্ত বেশি হওয়ায় সমস্যা হচ্ছে। অন্যদিকে, ব্যবসায়ীরা দাবি করছেন, গরুর খাবারের দাম বৃদ্ধির কারণে মূল্য কিছুটা বেড়েছে।
দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বিক্রেতারা রাজধানীর হাটগুলোতে পশু নিয়ে আসছেন। যদিও হাটের জন্য নির্ধারিত স্থান রয়েছে, তবুও আশপাশের সড়ক ও অলিগলিতে গরু রাখা হচ্ছে, যা সড়কজট এবং ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন এলাকায় এই মুহূর্তে ২১টি কোরবানির পশুর হাট বসেছে।
এবার কোরবানির হাটে সবচেয়ে নজরকাড়া হচ্ছে বিশাল আকৃতির গরু। যদিও অনেকের পক্ষে কিনে নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না, তবুও তারা দেখতে আসছেন। খামারিরা বলছেন, প্রাকৃতিক ও সুষম খাবার খাওয়ানোর কারণে তাদের পশুর আকৃতি ভালো হয়েছে।
গাজীপুরে একটি বিশাল আকৃতির গরু ‘বাহাদুর’ বিশেষভাবে নজর কাড়ছে। এর ওজন প্রায় এক টন, এবং দাম হাঁকা হচ্ছে আট লাখ টাকা। গরুটিকে ভাত, কলাসহ বিভিন্ন ফলমূল খাইয়ে বড় করা হয়েছে, যা প্রাকৃতিক খাবারের অংশ। দাম থাকা সত্ত্বেও দূর-দূরান্ত থেকে আগ্রহীরা দেখতে আসছেন।
নওগাঁর মনজিলতলা গ্রামের খামারি আফজাল হোসেনের খামারে চারটি ফ্রিজিয়ান ক্রস জাতের গরু রয়েছে। কোনো কেমিক্যালযুক্ত খাবার ছাড়াই প্রাকৃতিক পরিবেশে এসব গরুর লালন-পালন করেন তিনি। এসব গরুর দাম ১২ থেকে ১৫ লাখ টাকা পর্যন্ত ধরা হয়েছে। খামারিরা তাদের পশুর ন্যায্য দাম নিশ্চিত করার জন্য প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন।
নাটোরে ‘টাইটানিক’ নামে পরিচিত একটি ৩১ মন ওজনের গরু ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। এর মালিক রেকাত আলী দাম হিসেবে ১৫ লাখ টাকা দাবি করছেন। ক্রেতাদের পাশাপাশি অনেক উৎসুক মানুষ গরুটি দেখতে আসছেন।
মেহেরপুরের আকর্ষণ ‘কালা মানিক’ নামে ১২০০ কেজির একটি গরু এখনও বিক্রি হয়নি। তাই মালিক সাহারুল ইসলাম এই গরুটিকে ঢাকায় নিয়ে এসে ভালো দাম পাওয়ার আশা করছেন।
কোরবানির হাটগুলোতে ক্রেতা ও বিক্রেতাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা মোতায়েন রয়েছেন। পাশাপাশি ওয়াচ টাওয়ারের মাধ্যমে নজরদারিও করা হচ্ছে।
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, এই বছর কোরবানির জন্য মোট ১ কোটি ২৪ লাখ পশু লালন-পালন করা হয়েছে।
Discussion about this post