আন্তর্জাতিক ডেস্ক
তেহরানে বিস্ফোরণের পরিপ্রেক্ষিতে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে পাল্টা আক্রমণ চালিয়েছে ইরান। শুক্রবার (১৩ জুন) ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানিয়েছে, ইরানের পক্ষ থেকে প্রায় ১০০টি ড্রোন ছোড়া হয়েছে ইসরায়েলি ভূখণ্ডের দিকে। এ অবস্থায় ইসরায়েলে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে।
আইডিএফ মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফি ডিফ্রিন বলেন, “আমরা এই মুহূর্তে আকাশে থাকা ড্রোনগুলো শনাক্ত ও প্রতিহত করতে কাজ করছি।”
এর আগে শুক্রবার ভোররাত ৩টার দিকে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় কেঁপে ওঠে তেহরান। স্থানীয়রা ছয় থেকে নয়টি বিস্ফোরণের শব্দ শুনতে পান। ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের দাবি, ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনী (আইআরজিসি)-এর সদর দপ্তর ও নাতানজ পারমাণবিক স্থাপনাসহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় হামলা চালানো হয়েছে।
আইডিএফ জানায়, ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচিকে লক্ষ্য করে “সুনির্দিষ্ট ও সমন্বিত প্রতিরোধমূলক হামলা” চালানো হয়েছে। বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া তথ্যেও বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মার্কিন প্রতিরক্ষা সূত্র। তবে তারা দাবি করেছে, এই হামলায় যুক্তরাষ্ট্রের কোনো সম্পৃক্ততা নেই।
ইসরায়েলের হামলায় নিহত হয়েছেন ইরানি সেনাবাহিনীর প্রধান, আইআরজিসি প্রধান এবং জরুরি কমান্ড বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তারা—এমন তথ্য দিয়েছে আইডিএফ। যদিও ইরানের পক্ষ থেকে এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য দেওয়া হয়নি।
এদিকে হামলার জেরে তেহরানের ইমাম খোমেনি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সব ফ্লাইট স্থগিত করা হয়েছে। ইরানের আকাশসীমাও সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে, নেওয়া হয়েছে সর্বোচ্চ সতর্কতা।
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এক বিবৃতিতে বলেছেন, “যতদিন প্রয়োজন, ততদিন এই অভিযান চলবে।”
অন্যদিকে, ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি হুঁশিয়ার করে বলেছেন, “ইসরায়েলকে এই আক্রমণের জন্য তিক্ত ও যন্ত্রণাদায়ক পরিণতির মুখোমুখি হতে হবে।”
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, “ইরান যদি প্রতিশোধ নেয়, তাহলে যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলের পাশে থাকবে ও তাকে রক্ষা করবে।”
সাম্প্রতিক এই পাল্টাপাল্টি হামলা মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়েছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় পরিস্থিতির প্রতি গভীর নজর রাখছে।
Discussion about this post