নিজস্ব প্রতিবেদক:
শিক্ষা, চিকিৎসা, ব্যবসা ও ভ্রমণের উদ্দেশ্যে ভিসা পেতে চরম ভোগান্তির মুখে পড়েছেন বাংলাদেশিরা। সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন দেশের ভিসা প্রত্যাখ্যানের হার আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে। ভারতের ভ্রমণ ভিসা বর্তমানে সম্পূর্ণরূপে বন্ধ, অন্য ক্যাটাগরির ভিসার অনুমোদন হারও উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে।
চেন্নাইয়ের এশিয়ান কলেজ অব জার্নালিজমে ফুল স্কলারশিপ পাওয়া রিগ্যান মোর্শেদ (ছদ্মনাম) গত ১১ জুন ভারতীয় শিক্ষাভিসার জন্য আবেদন করেন। কিন্তু এখনও ভিসা না পাওয়ায় ২৮ জুন শুরু হওয়া ক্লাসে যোগ দিতে পারেননি তিনি। স্কলারশিপ হারানোর শঙ্কায় দিন কাটছে তার।
শুধু ভারত নয়, থাইল্যান্ড, চীন, তাজিকিস্তান, মালয়েশিয়া, এমনকি ইউরোপ ও আমেরিকার ভিসাও বাংলাদেশিদের জন্য ক্রমেই কঠিন হয়ে উঠছে। নিয়মিত ভ্রমণকারী ও ইউটিউবার নাদির নিবরাস জানান, বৈধ যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও অস্ট্রেলিয়ার ভিসা থাকা সত্ত্বেও সম্প্রতি তিনটি দেশের ই-ভিসার আবেদন তার প্রত্যাখ্যাত হয়েছে।
ভ্রমণ ও ভিসা সংক্রান্ত প্রতিষ্ঠানের ভাষ্য, এক সময় দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতে তুলনামূলক সহজে ভিসা মিলত, এখন তারাও বাংলাদেশিদের আবেদন বাতিল করছে। ‘দ্য মনিটর’ সম্পাদক কাজী ওয়াহিদউদ্দিন আলম বলেন, ‘বাংলাদেশ থেকে বেড়ে চলা অবৈধ অভিবাসন ও রাজনৈতিক অস্থিরতা এর অন্যতম কারণ।’
ভারতীয় হাইকমিশনের মতে, আপাতত কেবল অতি জরুরি ও মেডিকেল ভিসা সীমিত আকারে দেওয়া হচ্ছে। হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা জানান, ‘আমরা অগ্রাধিকারভিত্তিতে মেডিকেল ভিসা দেওয়ার চেষ্টা করছি। ধীরে ধীরে অন্যান্য ক্যাটাগরিও চালু করা হবে।’
যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলোর ক্ষেত্রেও একই পরিস্থিতি। অনেক শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েও ভিসা না পেয়ে হতাশ হয়ে দেশে ফিরে আসছেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব নজরুল ইসলাম জানান, ‘ভিসা প্রত্যাখ্যানের নির্দিষ্ট পরিসংখ্যান নেই, তবে সব দেশই এখন আবেদন যাচাইয়ে কঠোরতা বৃদ্ধি করেছে।’
ভিএফএস গ্লোবালসহ সংশ্লিষ্টদের মতে, রাজনৈতিক অস্থিরতা ও ভুয়া সনদপত্র দাখিলের প্রবণতা ভিসা প্রত্যাখ্যান বৃদ্ধির পেছনে অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
Discussion about this post