নিজস্ব প্রতিবেদক:
বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে ‘গুম প্রতিরোধ, প্রতিকার ও সুরক্ষা অধ্যাদেশ, ২০২৫’-এর খসড়ায় নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠক শেষে ঢাকার ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, “গুম সংক্রান্ত অধ্যাদেশটি উত্থাপনের পর নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। তবে এটার ওপর আরও আলোচনা হবে। আলোচনা শেষে চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হবে।”
তিনি জানান, গত বছরের ২৯ আগস্ট জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে গৃহীত ‘ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন ফর দ্যা প্রোটেকশন অব অল পার্সনস ফ্রম এনফোর্সড ডিজএপিয়ারেন্স’-এ বাংলাদেশ যুক্ত হওয়ার পর সংবিধানে সংরক্ষিত জীবন ও ব্যক্তির স্বাধীনতার অধিকার কার্যকর করতে এ খসড়া প্রস্তুত করা হয়েছে।
প্রেস সচিবের ভাষায়, “এ বিষয়ে গুম সংক্রান্ত তদন্ত কমিশনের মতামত ও বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড সার্ভিসেস (ব্লাস্ট), হিউম্যান রাইটস ওয়াচসহ অন্যান্য মানবাধিকার সংগঠনের মতামত এবং আইন মন্ত্রণালয়ের আয়োজিত দুটি মতবিনিময় সভা থেকে পাওয়া পরামর্শ বিবেচনায় নিয়ে খসড়াটি পরিমার্জন করা হয়েছে।”
খসড়ায় গুমকে সজ্ঞায়িত করে শাস্তি হিসাবে মৃত্যুদণ্ড অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। গোপন আটককেন্দ্র স্থাপন ও ব্যবহারকেও শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। খসড়ায় জাতীয় মানবাধিকার কমিশনকে গুম সংক্রান্ত অভিযোগ গ্রহণ ও তদন্তের ক্ষমতা প্রদান, বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন এবং অভিযোগ গঠনের ১২০ দিনের মধ্যে বিচার শেষ করার বিধান রাখা হয়েছে। এছাড়া ভুক্তভোগী, তথ্য প্রচারকারী ও সাক্ষীর সুরক্ষা এবং ক্ষতিপূরণের বিষয়টিও খসড়ায় অন্তর্ভুক্ত।
তদুপরি, গুম প্রতিরোধ, প্রতিকার ও সুরক্ষার জন্য বিশেষ তহবিল গঠন এবং তথ্যভাণ্ডার প্রতিষ্ঠার প্রস্তাবও করা হয়েছে।
একই বৈঠকে নৌ মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবে চিলাহাটি, দৌলতগঞ্জ ও তেগামুখ স্থলবন্দর বন্ধ ঘোষণা এবং বাল্লা স্থলবন্দরের কার্যক্রম স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত হয়। প্রেস সচিব বলেন, “যে বন্দরগুলো বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে এগুলো বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতাদের নিজস্ব সুবিধার্থে নির্মাণ করা হয়েছিল। অনেক ক্ষেত্রে দেখা গেছে বিপরীত পাশে ভারতের অংশে আরেকটি বন্দর নেই। অনেক ক্ষেত্রে এগুলো আমদানি-রপ্তানির কোনো কাজেই আসছিল না। এসব কারণে বন্দরগুলো বন্ধ করা হয়েছে।”
Discussion about this post