লাইফস্টাইল ডেস্ক
সেরিব্রোভাস্কুলার অ্যাক্সিডেন্টস— শব্দগুচ্ছের সঙ্গে হয়তো আপনার পরিচয় নেই। কিন্তু স্ট্রোকের নাম তো শুনেছেন নিশ্চয়ই। পরিচিত অনেককে হয়তো হারিয়েছেন এই কারণে। স্ট্রোকের ডাক্তারি ভাষা সেরিব্রোভাস্কুলার অ্যাক্সিডেন্টস। আগাম বার্তা দেওয়া ছাড়াই এটি ঘটে। তাই স্ট্রোক করামাত্র রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে না গেলে ঘটে বিপত্তি। বেশিরভাগ সময়েই তাকে আর বাঁচানো সম্ভব হয় না। স্ট্রোক সম্পর্কে বিশ্ববাসীকে সচেতন করার লক্ষ্যে প্রতিবছর ২৯ অক্টোবর বিশ্বজুড়ে পালিত হয় ‘ওয়ার্ল্ড স্ট্রোক ডে’।
ভারতের অ্যাপোলো মাল্টিস্পেশালিটি হাসপাতালের নিউরোসার্জেন দেবর্ষি চট্টোপাধ্যায়ের মতে, স্ট্রোক সাধারণত দু’রকমের হয়— ইস্কেমিক স্ট্রোক এবং হেমার্যাজিক স্ট্রোক। ইস্কিমিক স্ট্রোক হলে মস্তিষ্কে রক্ত চলাচল বন্ধ যায়। অন্যদিকে হেমারেজিক স্ট্রোক হলে দুর্বল রক্তনালী ছিঁড়ে মস্তিষ্কে রক্তপাত হয়। দুই ক্ষেত্রেই সার্জারি করতে হয়। কিন্তু সময়মতো চিকিৎসা না পেলে দুই ক্ষেত্রেই রোগীর মৃত্যু হতে পারে।
উচ্চ রক্তচাপে ভোগা রোগীদের স্ট্রোকের ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি
উচ্চ রক্তচাপের সমস্যায় ভুগছেন এমন ব্যক্তিদের স্ট্রোকের ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি। চিকিৎসকের মতে, হাইপারটেনশনের রোগী হলে প্রেশারের ওষুধ একদিনও বাদ দেওয়া যাবে না। অনেক সময়ে গর্ভাবস্থাতেও প্রেশার বাড়ে। অসুস্থতাজনিত কারণেও রক্তচাপ বেড়ে যায়। এসব ক্ষেত্রেও স্ট্রোক হতে পারে। তাই সর্তক থাকতে হবে সবসময়।
কমবয়সীদের মধ্যে স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ছে কেন?
বর্তমানে কম বয়সিদেরও স্ট্রোকে মৃত্যু হচ্ছে। দেখতে সুস্থ সবল মানুষ হঠাৎ করেই স্ট্রোক করছেন, হারাচ্ছেন প্রাণ। এদের অনেকেই বয়সের কোটা ৩০ পার করেননি। কিন্তু কেন এমন হচ্ছে?
ডা. চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘কম বয়সে স্ট্রোক হওয়ার পিছনে সবচেয়ে বেশি দায়ী সেডেন্টারি লাইফস্টাইল। অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন, দীর্ঘক্ষণ বসে কাজ করা, শরীরচর্চার অভাব, অতিরিক্ত মানসিক চাপই কম বয়সিদের মধ্যে স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়াচ্ছে।’
স্ট্রোকের ঝুঁকি এড়াতে করণীয়
১. রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখুন
উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা থাকলে স্ট্রোকের ঝুঁকি দ্বিগুণ। রক্তচাপ বাড়লে যেকোনো সময় স্ট্রোক হতে পারে। তাই যেভাবেই হোক রক্তচাপ স্বাভাবিক মাত্রায় আনতে হবে। ওষুধ ছাড়া যাবে না। বংশে হাই ব্লাড প্রেশারের সমস্যা থাকলে আগে থেকেই সতর্ক থাকুন। নিয়মিত রক্তচাপ মাপুন।
২. স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস মানুন
স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস বড় ভূমিকা রাখে। খাবারে লবণের পরিমাণ কমান। জাঙ্ক ফুড এড়িয়ে চলুন। প্যাকেটজাত খাবার খাবেন না। অতিরিক্ত সোডিয়াম আছে এমন খাবার এড়িয়ে চলুন। কেননা এসব খাবার দ্রুত রক্তচাপ বাড়িয়ে দেয়।
৩. শরীরচর্চা করুন
ঘণ্টার পর ঘণ্টা অফিস ডেস্কে বসে কাটিয়ে দেন? এমন অভ্যাসে কিন্তু স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ছে। একটানা দীর্ঘক্ষণ বসে থাকে। প্রতি ঘণ্টা অন্তর অন্তত ৫ মিনিট হাঁটুন। দিনে অন্তত ৩০ মিনিট ব্যয় করুন হাঁটা ও শরীরচর্চার পেছনে।
৪. ধূমপান ও মদ্যপানের অভ্যাস ছাড়ুন
ধূমপান ও মদ্যপানের অভ্যাসও স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায়। তাই এই অভ্যাসগুলো ছাড়তে হবে।









Discussion about this post