আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত বুধবার মায়ামিতে এক ভাষণে বলেন, “যুক্তরাষ্ট্র সার্বভৌমত্ব হারিয়েছে। কারণ, নিউইয়র্কের ভোটাররা বামপন্থী জোহরান মামদানিকে তাঁদের পরবর্তী মেয়র হিসেবে বেছে নিয়েছেন। ট্রাম্প আরও বলেন, “আমরা বিষয়টা সামলে নেব,” তবে তিনি এর অর্থ ব্যাখ্যা করেননি; বরং দাবি করেন, দেশের সবচেয়ে বড় শহরটি এখন কমিউনিস্ট শহর হয়ে উঠবে।
ট্রাম্প মনে করেন, শিগগিরই ফ্লোরিডার মায়ামি হবে সেসব মানুষের আশ্রয়স্থল, যাঁরা নিউইয়র্কের কমিউনিজম থেকে পালিয়ে আসবেন। তিনি বলেন, “আমেরিকানদের সামনে এখন খুবই স্পষ্ট এক সিদ্ধান্ত—কমিউনিজম আর সাধারণ বুদ্ধির মধ্যে এক পছন্দ।” তিনি এটিকেও উল্লেখ করেন যে এই পছন্দ “অর্থনৈতিক দুঃস্বপ্ন” এবং “অর্থনৈতিক সাফল্যের বিস্ময়”র মধ্যে একটি।
গত বছরের ৪ নভেম্বর অনুষ্ঠিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী কমলা হ্যারিসকে পরাজিত করার এক বছর পূর্তি উপলক্ষে ট্রাম্প এ ভাষণ দেন। তিনি সমর্থকদের উদ্দেশে বলেন, “আমরা আমাদের অর্থনীতি উদ্ধার করেছি, স্বাধীনতা পুনরুদ্ধার করেছি, আর একসঙ্গে আমরা আমাদের দেশকে বাঁচিয়েছি—৩৬৫ দিন আগে সেই গৌরবময় রাতে।”
নিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচনে জোহরান মামদানি জয়ী হয়েছেন ট্রাম্পসহ রিপাবলিকান নেতা ও আরও কিছু মহলের তীব্র সমালোচনা এবং বিরোধিতার মধ্যে। ট্রাম্পপন্থী ব্যবসায়ী মহল, রক্ষণশীল গণমাধ্যম বিশ্লেষক এবং ট্রাম্প নিজেও ৩৪ বছর বয়সী দক্ষিণ এশীয় বংশোদ্ভূত জোহরানের নীতিমালা ও মুসলিম পরিচয়কে কেন্দ্র করে তাঁকে কঠোরভাবে আক্রমণ করেছিলেন।
বিজয়োৎসবে জোহরান বলেন, “যদি কেউ দেখাতে পারেন যে ট্রাম্পের কারণে একটি দেশ প্রতারিত হয়েছে এবং তাঁকে হারানো যায়, তবে সেটা করতে পারবে সেই শহরই, যেখান থেকেই তিনি নিজে উঠে এসেছেন।”
জোহরানের জয়, পাশাপাশি ভার্জিনিয়া ও নিউ জার্সির গভর্নর নির্বাচনে ডেমোক্র্যাটদের সাফল্য, ইঙ্গিত দেয় যে আগামী বছরের মধ্যবর্তী কংগ্রেস নির্বাচনের আগে যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক আবহে পরিবর্তনের ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। এছাড়া ক্যালিফোর্নিয়ার ভোটাররা মঙ্গলবার এক প্রস্তাব অনুমোদন করেছেন, যাতে নির্বাচনী এলাকা পুনর্বিন্যাসের মাধ্যমে পক্ষপাতদুষ্ট নির্বাচন রোধ করা যায়।
এতসবের পরও মঙ্গলবারের ফলাফলের দায় নিতে অস্বীকার করেছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া এক পোস্টে তিনি দাবি করেছেন, কিছু বেনামি জনমত জরিপকারী বলেছে রিপাবলিকানদের পরাজয়ের কারণ হলো সরকারের অচলাবস্থা (শাটডাউন) এবং এই নির্বাচনে তাঁর নিজের নাম ব্যালটে না থাকা।










Discussion about this post