নিজস্ব প্রতিবেদক
রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে ব্রয়লার মুরগির দাম বেড়েই চলেছে। সেই সঙ্গে চড়া রয়েছে ফার্মের মুরগির ডিমের দামও। তবে পেঁয়াজ ও আলুর দাম আগের তুলনায় সামান্য কমেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর কাজীপাড়া, তালতলা, মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট ও টাউন হল বাজার ঘুরে ও বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
ব্যবসায়ীরা জানান, সম্প্রতি কয়েকটি জেলায় বন্যার কারণে অনেক মুরগির খামার নষ্ট হয়েছে। এতে ওই সব এলাকায় মুরগি ও ডিমের সরবরাহ কমেছে। আবার ভারত থেকে সম্প্রতি যে ডিম আমদানি হয়েছে, তা চাহিদার তুলনায় সামান্য। ফলে সরবরাহ বৃদ্ধি না পাওয়ায় দাম কমছে না।
অবশ্য কাপ্তানবাজার বা কারওয়ান বাজারের মতো পাইকারি বাজারে গতকাল ১৭০ টাকা দরে মুরগি বিক্রি হয়েছে। এর পাশাপাশি প্রতি কেজি সোনালি মুরগি বিক্রি হয়েছে ২৫০-২৭০ টাকায়, যা আগের সপ্তাহে ১০ টাকা কম ছিল।
খুচরা বিক্রেতারা জানান, দুই সপ্তাহ ধরে বাজারভেদে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৬৫-১৭০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। সে তুলনায় গতকাল মুরগির দাম আরও কিছুটা বাড়তি ছিল। গতকাল ঢাকার ছয়টি বাজারে খোঁজ নেন এই প্রতিবেদক। এর মধ্যে কোনো বাজারেই ১৮০ টাকার নিচে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হতে দেখা যায়নি। আর কোনো কোনো পাড়া-মহল্লায় দাম আরও কিছুটা বেশি ছিল।
এদিকে ঢাকার বিভিন্ন বাজারে গতকাল ফার্মের মুরগির প্রতি ডজন বাদামি ডিম ১৬০ টাকা ও সাদা ডিম ১৫৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। পাড়া-মহল্লার দোকানে দাম আরও পাঁচ টাকা বেশি ছিল। খুচরা বিক্রেতারা জানান, প্রায় তিন সপ্তাহ ধরেই ঢাকার বাজারে ডিমের দাম চড়া রয়েছে; ডজন বিক্রি হয়েছে ১৫০-১৫৫ টাকায়। এর আগে ডজন ১৫০ টাকার নিচে ছিল।
বাজারে দেশি পেঁয়াজ ও আলুর দাম আগের তুলনায় কমেছে। গতকাল বিভিন্ন খুচরা বাজারে দেশি পেঁয়াজ ১০০-১১৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এই দাম আগের সপ্তাহে ৫-১০ টাকা বেশি ছিল।
কারওয়ান বাজারের পেঁয়াজের আড়তদার মো. জামাল হাওলাদার জানান, বর্তমানে মিসর, পাকিস্তান ও ভারত থেকে পেঁয়াজের আমদানি বেড়েছে। এ কারণে সব ধরনের পেঁয়াজের দাম কিছুটা কমেছে। পেঁয়াজের পাশাপাশি আলুর দামও কেজিতে ৫ টাকা কমেছে। গতকাল খুচরা বাজারে প্রতি কেজি আলু বিক্রি হয়েছে ৫০-৫৫ টাকায়।
সরবরাহ কমে যাওয়ায় বাজারে সব ধরনের সবজির দাম ১০ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে, বলছেন বিক্রেতারা। কচুরমুখীর কেজি ৬০ থেকে ৭০ টাকা, বেগুন ৮০ থেকে ১২০ টাকা, করলা ৬০ থেকে ৮০ টাকা, কাঁকরোল ৭০ টাকা, পটল ৬০ টাকা, ঢেঁড়স ৫০ টাকা, বরবটি ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
প্রতিটি লাউ বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকায়। পেঁপের কেজি ৩০ থেকে ৪০ টাকা, ধুন্দল ৫০ থেকে ৬০ টাকা, চিচিঙ্গা ৬০ টাকা, কচুর লতি ৭০ থেকে ৮০ টাকা, ঝিঙে ৬০ টাকা, শসা ৫০ থেকে ৮০ টাকা এবং কাঁচা মরিচ ২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
বাজারগুলোতে শীতকালীন সবজি শিম ২০০ টাকা কেজি, ফুলকপি প্রতিটি ৪০ থেকে ৫০ টাকা,পাকা টমেটো প্রকারভেদে ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা এবং গাজর ১৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। লেবুর হালি ১০ থেকে ২০ টাকা, ধনে পাতার কেজি ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কাঁচা কলার হালি ৪০ টাকা এবং মিষ্টি কুমড়ার কেজি ৪০ থেকে ৫০ টাকা। গতকাল কাঁচা মরিচের কেজি বিক্রি হয়েছে ১৬০-২০০ টাকায়।
এ ছাড়া বাজারে বিভিন্ন প্রকার মাছের দাম আগের সপ্তাহের দামে অপরিবর্তিত রয়েছে। প্রতি কেজি (চাষের) রুই ৩০০-৩৩০ টাকা, তেলাপিয়া ২০০-২২০ টাকা ও পাঙাশ ১৮০-২০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এ ছাড়া ইলিশ মাছের কেজি ছিল ১৫০০-১৮০০ টাকার মধ্যে।
অন্যদিকে তিন সপ্তাহ আগে খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি চালের দাম ২ থেকে ৬ টাকা পর্যন্ত বেড়েছিল। গতকাল বাজার ঘুরে সেই দাম অপরিবর্তিত অবস্থায় দেখা গেছে।
Discussion about this post